জল সইতে
সুভাষ মুখোপাধ্যায়
১
দেখে যাতে তোমাদের কষ্ট না হয়
চোখে যাতে ভালো লাগে
তার জন্যে
আমার বুকে-বেঁধানো সমস্ত কাঁটায়
আমি গুঁজে দিয়েছি
একটি করে ফুল---
তোমরা হাসো |
শুনে যাতে তোমাদের দুঃখ না হয়,
কানে যাতে ভালো ঠেকে
তার জন্যে
আমার বুক-ভাসানো সমস্ত কান্নায়
আমি জুড়ে দিয়েছি
একটি করে সুর---
. তোমরা হাসো গো,
. আনন্দ করো |
আগুনে তো অনেক পুড়েছি
এবার যাব জল সইতে |
নঙর তুলে ফেলেছি
গাঙ থেকে দরিয়ার দিকে
ফেরানো আছে
আমার গলুইয়ের মুখ |
তোমরা এবার
আমার মনপবনের নাওটাকে
পায়ের ডগা দিয়ে একটু ঠেলে দিলেই
হৈ হৈ করে পালে বাতাস লাগবে ||
২
চালের বাতায় গুঁজে রেখে এসেছি
গাজীর পট
শিকের ওপর তোলা রইল
গুপীযন্ত্র
কালের হাত সেখানে পোঁছুতে না পৌঁছুতে
আমি ফিরে আসব |
সঙ্গে নিয়েছি চালচিঁড়ে
হুঁকোতামাক
আর মাছ ধরার জাল
আপাতত ওতেই চলুক |
ফুলছে ফুঁসছে ঢেউ---
একবার তুলছে মাথায়
একবার ফেলছে পায়ে |
. ও মাঝির পো,
. দরিয়া আর কতদূর ?
. ঘর-বার সমান রে বন্ধু
. আমার ঘর-বার সমান
. পায়ের নীচে একটুকু মাটি
. পেলাম না তার সন্ধান
. আমার সেই পোষা পাখি
. আকাশের নীল রঙে আঁকি
. যত্নে বুকে করে রাখি
. তবু কেন সে করে আনচান
. আমার ঘর-বার সমান
৩
দিন আসে রাত আসে এইভাবেই যায়
দিন আসে রাত আসে এইবাবেই যায়
. জল সইতে যাই
. একবার এ-চরে
. একবার ও-চরে |
একটু করে ঘটে ভরি
আর কাপড়ের খুঁটে গেরো দিই |
পিটুলিতে-গড়া সুখসোহাগের ছিরিছাঁদে
সব-পেয়েছির নয়
সবাই-পেয়েছির দেশ গো !
মোহনার ঠিক মুখে
বিদ্যুতের বাঘনখে
আশমানে চেরাই হচ্ছে যখন আবলুশ কাঠ
ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছে যখন তারার দল
ঠিক তখনই ধেয়ে এল বান ---
. ও মাঝির পো,
. ভাটি ছেড়ে নাও কি যায়
. উজানে ?
. তবে তাই সই
. দরিয়া থেকে গাঙে ফিরে
. এবার পট নাচিয়ে
. চৌদুনে
, কি রকম চব্বর বাধিয়ে দিই দেখো |
দেখে যাতে তোমাদের কষ্ট না হয়
চোখে যাতে ভালো লাগে
তার জন্যে
আমার বুকে-বেঁধানো সমস্ত কাঁটায়
আমি গুঁজে দিয়েছি
একটি করে ফুল---
তোমরা হাসো |
শুনে যাতে তোমাদের দুঃখ না হয়,
কানে যাতে ভালো ঠেকে
তার জন্যে
আমার বুক-ভাসানো সমস্ত কান্নায়
আমি জুড়ে দিয়েছি
একটি করে সুর---
. তোমরা হাসো গো,
. আনন্দ করো |
আগুনে তো অনেক পুড়েছি
এবার যাব জল সইতে |
নঙর তুলে ফেলেছি
গাঙ থেকে দরিয়ার দিকে
ফেরানো আছে
আমার গলুইয়ের মুখ |
তোমরা এবার
আমার মনপবনের নাওটাকে
পায়ের ডগা দিয়ে একটু ঠেলে দিলেই
হৈ হৈ করে পালে বাতাস লাগবে ||
২
চালের বাতায় গুঁজে রেখে এসেছি
গাজীর পট
শিকের ওপর তোলা রইল
গুপীযন্ত্র
কালের হাত সেখানে পোঁছুতে না পৌঁছুতে
আমি ফিরে আসব |
সঙ্গে নিয়েছি চালচিঁড়ে
হুঁকোতামাক
আর মাছ ধরার জাল
আপাতত ওতেই চলুক |
ফুলছে ফুঁসছে ঢেউ---
একবার তুলছে মাথায়
একবার ফেলছে পায়ে |
. ও মাঝির পো,
. দরিয়া আর কতদূর ?
. ঘর-বার সমান রে বন্ধু
. আমার ঘর-বার সমান
. পায়ের নীচে একটুকু মাটি
. পেলাম না তার সন্ধান
. আমার সেই পোষা পাখি
. আকাশের নীল রঙে আঁকি
. যত্নে বুকে করে রাখি
. তবু কেন সে করে আনচান
. আমার ঘর-বার সমান
৩
দিন আসে রাত আসে এইভাবেই যায়
দিন আসে রাত আসে এইবাবেই যায়
. জল সইতে যাই
. একবার এ-চরে
. একবার ও-চরে |
একটু করে ঘটে ভরি
আর কাপড়ের খুঁটে গেরো দিই |
পিটুলিতে-গড়া সুখসোহাগের ছিরিছাঁদে
সব-পেয়েছির নয়
সবাই-পেয়েছির দেশ গো !
মোহনার ঠিক মুখে
বিদ্যুতের বাঘনখে
আশমানে চেরাই হচ্ছে যখন আবলুশ কাঠ
ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছে যখন তারার দল
ঠিক তখনই ধেয়ে এল বান ---
. ও মাঝির পো,
. ভাটি ছেড়ে নাও কি যায়
. উজানে ?
. তবে তাই সই
. দরিয়া থেকে গাঙে ফিরে
. এবার পট নাচিয়ে
. চৌদুনে
, কি রকম চব্বর বাধিয়ে দিই দেখো |
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১৫২ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন