এক মুঠো ভবিষ্যৎ
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মনে করো, এই রাত্তিরে তুমি আছ এক রূপকথার
দেশে
আমিও এক অলীক রাজ্যের রাজা
রূপকথার দেশের রাজকন্যাটন্যারা সাধারণত
বন্দিনীই থাকে
তাদের পোশাকের রং সবুজ
আমি যদি লাল রঙে পালটে দিই
না, ক্যাটকেটে লাল ঠিক নয়, ধরা যাক গোলাপি
গোলাপ অবশ্য সাদা হয়, হলুদও হয়, সবুজ কিংবা কালো দেখিনি
পোশাকের নীচে তোমার যে শরীর দেখেছি
ডায়মন্ড হারবারে
তা ছিল চাপা ফুল রঙের, ঊরু যুগে বৃষ্টি ভেজা নবীন তৃণের সুগন্ধ
হ্যাঁ, সেই রাতে ডায়মন্ড হারবারে খুব উল্কাপাত হয়েছিল মনে আছে?
তারপর আকাশ ফাঁক হয়ে গেল, ঘড়ঘড়িয়ে
চলে গেল একটা রথ
আমি আসছি তোমার কাছে, আর তিনবার
বিদ্যুৎ চমকের পর
একটা বছর পাঁচেকের বাচ্চা বসে কাঁদছে একটা
ছাতিম গাছের তলায়
পৃথিবীর সব বাচ্চাদের কান্না আমি দূর করতে
পারব না
কিন্তু একটা শিশুকে অন্তত পৌঁছে দিতে পারি
বর্তমান থেকে ভবিষ্যতে
তাকে তুলে নিতে গেছি অমনি শোনা গেল সেই রথের শব্দ
ওরে বাবা, এ তো যে সে শিশু নয়, যেন
মহাকাল, যেমন তার গলার স্বর
তেমনই বিশাল তার খিদে
তার দু’চোখে জোনাকি
কারা যেন আমার চারপাশ ঘিরে দাঁড়াল
চেনা চেনা মনে হচ্ছে, অথচ ঠিক চিনতে পারছি না
তারা সমস্বরে বলতে লাগল, পারবে? তুমি পারবে?
কেন ওরা আমাকে এই পরীক্ষায় ফেলতে চাইল
অন্তরীক্ষে আরও কতজন উঁকি মেরে দেখছে
প্রতিটি গাছপালার মধ্যে সেই প্রতীক্ষা, পারবে, পারবে?
সব ফুল ফোটা বন্ধ, তারারা মিটমিট করছে না
নদীতে ঢেউ নেই, স্টিমারে ভোঁ নেই, জেলে
নৌকোয় জ্বলছে না টেমি
হা-হা স্বরে বাতাস বলছে, পারবে তুমি
শিশুটিকে এক মুঠো ভবিষ্যৎ দিতে?
ওগো, রূপকথার দেশের বন্দিনী কন্যে
আমার ঢাল-তরোয়াল, টুথব্রাশ, পক্ষিরাজ,
জাঙিয়া-গেঞ্জি সব তৈরি
তবু আমি আটকে আছি নদীর ধারের এক গাছতলায়
ভূত-ভবিষ্যতের গোলকধাঁধায়!
দেশে
আমিও এক অলীক রাজ্যের রাজা
রূপকথার দেশের রাজকন্যাটন্যারা সাধারণত
বন্দিনীই থাকে
তাদের পোশাকের রং সবুজ
আমি যদি লাল রঙে পালটে দিই
না, ক্যাটকেটে লাল ঠিক নয়, ধরা যাক গোলাপি
গোলাপ অবশ্য সাদা হয়, হলুদও হয়, সবুজ কিংবা কালো দেখিনি
পোশাকের নীচে তোমার যে শরীর দেখেছি
ডায়মন্ড হারবারে
তা ছিল চাপা ফুল রঙের, ঊরু যুগে বৃষ্টি ভেজা নবীন তৃণের সুগন্ধ
হ্যাঁ, সেই রাতে ডায়মন্ড হারবারে খুব উল্কাপাত হয়েছিল মনে আছে?
তারপর আকাশ ফাঁক হয়ে গেল, ঘড়ঘড়িয়ে
চলে গেল একটা রথ
আমি আসছি তোমার কাছে, আর তিনবার
বিদ্যুৎ চমকের পর
একটা বছর পাঁচেকের বাচ্চা বসে কাঁদছে একটা
ছাতিম গাছের তলায়
পৃথিবীর সব বাচ্চাদের কান্না আমি দূর করতে
পারব না
কিন্তু একটা শিশুকে অন্তত পৌঁছে দিতে পারি
বর্তমান থেকে ভবিষ্যতে
তাকে তুলে নিতে গেছি অমনি শোনা গেল সেই রথের শব্দ
ওরে বাবা, এ তো যে সে শিশু নয়, যেন
মহাকাল, যেমন তার গলার স্বর
তেমনই বিশাল তার খিদে
তার দু’চোখে জোনাকি
কারা যেন আমার চারপাশ ঘিরে দাঁড়াল
চেনা চেনা মনে হচ্ছে, অথচ ঠিক চিনতে পারছি না
তারা সমস্বরে বলতে লাগল, পারবে? তুমি পারবে?
কেন ওরা আমাকে এই পরীক্ষায় ফেলতে চাইল
অন্তরীক্ষে আরও কতজন উঁকি মেরে দেখছে
প্রতিটি গাছপালার মধ্যে সেই প্রতীক্ষা, পারবে, পারবে?
সব ফুল ফোটা বন্ধ, তারারা মিটমিট করছে না
নদীতে ঢেউ নেই, স্টিমারে ভোঁ নেই, জেলে
নৌকোয় জ্বলছে না টেমি
হা-হা স্বরে বাতাস বলছে, পারবে তুমি
শিশুটিকে এক মুঠো ভবিষ্যৎ দিতে?
ওগো, রূপকথার দেশের বন্দিনী কন্যে
আমার ঢাল-তরোয়াল, টুথব্রাশ, পক্ষিরাজ,
জাঙিয়া-গেঞ্জি সব তৈরি
তবু আমি আটকে আছি নদীর ধারের এক গাছতলায়
ভূত-ভবিষ্যতের গোলকধাঁধায়!
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ৭৩ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন