অরণ্য, আপনি
তসলিমা নাসরিন
১.
আপনি আশ্চর্য! কী করে পারেন চলে যেতে, ওভাবে!
আপনি তো জানেন আমি খুব মারত্মক রকম চাই আপনাকে,
এত চাওয়ার পরও দশটা বাজতেই দিব্যি আসি বলে স্বচ্ছন্দে চলে
যান,
কাল দেখা হবে বা ফোনে কথা হবে জাতীয় যাচ্ছেতাই প্রতিশ্রুতি দিয়ে
দিব্যি।
কী দরকার কাল দেখা হয়ে,
কাল কি কিছু অন্যরকম হবে! হবে তো সেই একই,
আকণ্ঠ পান করে আর করিয়ে স্পর্শের জন্য উন্মুখ প্রতিটি রোমকূপের
সামনে
মুলো নাচিয়ে আবারও বলবেন আগামীকালের কথা, যে, দেখা হবে।
এরকমই দিনের পর দিন আপনি পরের দিনের কথা বলতে থাকবেন
আর আমি শুনতে থাকবো, অরণ্য।
প্রতিদিনই পরের দিন আসতে থাকবে আর যেতে থাকবে,
আমরা কথা বলতে থাকবো পৃথিবীর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যা ঘটছে
বা ঘটতে যাচ্ছে তার সব কিছু নিয়ে।
টেবিল চাপড়ে দুচারটে বিপ্লব নামিয়ে আনবেন গরিবদের গলিতে,
যে কোনও দিকেই, মল থেকে মর্গ, বা ময়দান বা মোহনার দিকেও
চাইলে
ছুটতে পারবেন, কিছুতে অনিচ্ছের কিছু নেই।
আপনার চোখের দিকে, যে চোখ থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে চমৎকার প্রেম
নামাতে পারেন, প্রতিদিনই অসহায় তাকিয়ে থাকবো
তৃষ্ণা বাড়াতে বাড়াতে আমাকে আস্ত একটি মরুভুমি বানিয়ে ছাড়বেন।
অত ঢংএর কী দরকার অরণ্য,
উত্থানরহিত হলে সোজা বলে দিন যে উত্থানরহিত!
২.
প্রেমিক প্রেমিক ভাব অথচ প্রেমিক নন আপনি অরণ্য
আমি তো চাই আপনি প্রেমিক হন,
আমি তো চাই আপনি আমার সঙ্গে সারাদিন
আপনি সারারাত।
অমন চাওয়া আপনার গোটা বিশ্বের কোনও কানাগলিতেও নেই,
চোখ কান খোলা রাখা লাল পিঁপড়ের চেয়েও বেশি হিসেবি আপনি,
শীতের সঞ্চয় করেই তুষ্ট নন,
গ্রীস্মে, বর্ষায়, শরতে, হেমন্তে তলে তলে মজুদ রাখেন অঢেল।
ঘোর বসন্তেও সব অদ্ভুতরকম ঠিকঠাক থাকে।
আপনার হিসেবে আমার সব আছে,
কেবল আমি নেই,
আপনার জন্য আমার উপোস করা হৃদয় নেই।
প্রেমিক যদি নাই হন, তবে অত ভাবের দরকার কী,
ঘোষণা দিয়ে অপ্রেমিক হয়ে যান
আমি বাঁচি।
বুনো হাতিগুলোর মতো ক্ষিদে আপনার, আমাকে ফুরিয়ে ফেলে
যদি এতটুকু কষ্ট না হয়, তবে ফেলুন, বাঁচি।
আর তা যদি না হয়, তবে প্রেম দিন, বাঁচি।
নাহ অরণ্য, প্রেম তো ঠুনকো বাতাসা নয় যে চাইলেই সবাই বিলোতে
পারে।
আপনি না পারেন, আমি তো পারি,
আমার দয়ায় না হয় একবার বেঁচেই দেখুন অরণ্য।
৩.
এই যে আমার সবকিছু, আমার গদ্যপদ্য আপনাকে নির্ভাবনায় দিয়ে
দিতে পারছি,
এই আপনিই একদিন সব অস্বীকার করবেন,
বদ পুরুষের আড্ডায় টিটকিরি দিয়ে হাসবেন,
দুচারদিনের শুকনো সঙ্গমের গল্প বেশ রসিয়ে বলবেন।
জানি যে জীবন দিচ্ছি, তারপরও যে কোনওদিনই পিঠে ছুরি বসিয়ে
স্বচ্ছন্দে হেঁটে যাবেন।
কেউ কেউ এমন হয়, খুব মিঠেভাষী, খুব অনুদ্ধত, বিনত,
অথচ মুহূর্তে আততায়ী হয়ে যেতে পারে।
একফোঁটা বিশ্বাস নেই আপনাকে, তারপরও আপনার স্পর্শের জন্য
অপেক্ষা করে আমার রোমকূপ, আপনার চুম্বনের জন্য আমার ত্বক,
আপনার উন্মাদনার জন্য স্তন, নিভৃত যাষনার জন্য যোনি।
অপেক্ষা করে আমার ভিতর বাহির,
অপেক্ষা করে প্রেম।
আগুনের দিকে যাচ্ছি জেনেও যাচ্ছি,
কেউ কেউ এমন হয়, পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, তবু আগুন দেখলে আগুনের
দিকেই
যায়, যেতে চায়।
একদিন হয়তো ভুলেও যাবো অরণ্য কে ছিল, কী ছিল,
শুধু মনে থাকবে দুপুর-রোদের মতো কোনও এক শহরের কারও
জন্য
কোনও এক শীতবসন্ত জুড়ে দুর্দম্য তৃষ্ণা ছিল আমার।
৪.
সুদর্শন কোনও যুবক নন আপনি, অরণ্য
আপনার দিকে ফিরে আমি না তাকাতেও পারতাম।
কোনও নক্ষষন নন, নির্দোষ নির্দ্বিধ নন, আমায় নিমজ্জিত নন,
তারপরও এই যে আপনি সব এলোমেলো করে দিতে পারলেন
আমার,
সে কি আপনি আপনি বলে,
নাকি আমি মনে মনে একলা ছিলাম একশ বছর! তাই!
কিছু একটার প্রয়োজন ছিল আমার, নিয়ে বাঁচার!
নাকি অন্য কিছু!
আপনি হালকা তামাশার লোক,
মাস দু মাস পর আপনাকে ত্যাগ করলেও কিছু যেত আসতো না,
অথচ আপনার জন্য বছর ভর বসে থাকা, সে কি আপনি
নিস্পৃহ নির্জীব বলে! যাকে হিঁচড়ে নামাতে পারি আমার জোয়ারে।
নাকি অন্য কিছু!
নাকি ভালোবাসি!
ভালো কি মানুষ এমন অথর্বকে বাসে!
প্রেম বলে কিছু নেই ভারতবর্ষে, জানি।
এর নাম আপাতত মোহ দিয়ে পরস্পরকে চুম্বন করি চলুন।
আপনি মধ্য চল্লিশের ট্যারাচোখি পুরুষবাদী শঠ, চোখ কান নাক মাথা
বুজে
চুম্বন সারতে চাই। চুম্বনের জাদু যদি শঠতা সরাতে পারে, তবে নয় কেন!
কী জানি মনে নেই কাউকে কখনও আনখচুল বদলে ফেলার
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম কী না কোথাও!
হতে পারে, নাও হতে পারে।
তা ছাড়া, কী হয় যদি ভালোবাসি! ভালোও তো বাসতে পারি,
সোনাঝুরি বনে মধ্যরাতের চাঁদ ভাসা আলোয় যদি পাশাপাশি হাঁটি,
হাতের কি কোনও শক্তি থাকে না ছুঁতে পাশের হাত!
৫.
ঢংয়ের রংয়ের লম্ফ ঝম্ফ চলছে চলুক,
যে যাই বলুক,
আপনি জানেন আমি জানি
শোয়াশুয়ি করতে গিয়ে কম হয়নি হয়রানি।
বাড়ির বউকে তুলসি পাতার মন্ত্র দিয়ে বাইরে এসেই শয়তানি
করুন করুন রক্তে আছে, রক্তের চেয়েও বেশি আছে মস্তিষ্কের কোষে
কোষে।
এই ফাগুনে দুদণ্ড কি সময় আছে কথা বলবেন বসে!
মাগনা মদের পিছন পিছন তুফান ছোটা একটুখানি কমিয়ে এনে বসবেন
কি?
লাভ হবে না এমন কথা দুটো চারটে বলার মতো মন আছে কি?
এই বঙ্গে বীরপুরুষের অর্থ হল যে করেই হোক রাখতে পারা দুদশখানা
প্রেমিকা।
আমার কাছে বীরপুরুষের থুরি ওই চামচিকাদের দর উঁচুতে তুলে
ধরেও পাঁচশিকা।
আমার জীবন আমার জীবন
কেউ নেই তা শেয়ার করার।
যেমন ইচ্ছে জীবন যাপন করছি আমি, বন্য হলে বন্য
এসবের তো সবই আপনি জানেন অরণ্য।
চিরকালের একা আমি একাই ছিলাম ভালো,
আপনি এসে ঝড়ের মতো নিবিয়ে দিয়ে আলো,
আরও বেশি একা করলেন, আরও ভয়াবহ। থাক সে কথা,অন্য কথা,
আমার কথা।
আপনি তো আর একলা নন, আপনার আসর সব ঋতুতেই জমকালো।
আপনি এত তুচ্ছ, এত তৃণ, তবু তৃণের দিকে বারেবারেই নুইতে হয়,
হৃদয় ছাড়া মেয়েমানুষের অন্য কিছুই শত্রু নয়।
৬.
যখন সুখ দিচ্ছেন আমাকে, অসুখ দিচ্ছেন বুঝিনি।
চুম্বনের জন্য বিযুক্ত করেছি ঠোঁট, গোপনে বিষ দিয়েছেন মুখে, বুঝিনি।
৭.
আপনার ব্যাধি নিয়ে আমি এখন ভেলায় শুয়ে আছি,
ভেসে ভেসে ভেলা ওপারে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে, দেখছেন যাচ্ছে।
যাচ্ছে, তাতে কী! আপনার উৎসবে কোনও জলের ছিটে তো লাগছে
না!
যারা ভালোবাসি, যারা বুঝি না হিসেব নিকেষ, তারা ভেসে যাচ্ছি
ওইপারে,
ওইপারে গলে গলে পড়ছে আগুন।
সূর্যাস্তের সৌন্দর্য মদ্যপান করতে করতে উপভোগ করতে
ভালোবাসেন, করবেন।
আপনার সবই তো বুঝি, শুধু ভালোবাসেননি, বুঝিনি।
আপনি আশ্চর্য! কী করে পারেন চলে যেতে, ওভাবে!
আপনি তো জানেন আমি খুব মারত্মক রকম চাই আপনাকে,
এত চাওয়ার পরও দশটা বাজতেই দিব্যি আসি বলে স্বচ্ছন্দে চলে
যান,
কাল দেখা হবে বা ফোনে কথা হবে জাতীয় যাচ্ছেতাই প্রতিশ্রুতি দিয়ে
দিব্যি।
কী দরকার কাল দেখা হয়ে,
কাল কি কিছু অন্যরকম হবে! হবে তো সেই একই,
আকণ্ঠ পান করে আর করিয়ে স্পর্শের জন্য উন্মুখ প্রতিটি রোমকূপের
সামনে
মুলো নাচিয়ে আবারও বলবেন আগামীকালের কথা, যে, দেখা হবে।
এরকমই দিনের পর দিন আপনি পরের দিনের কথা বলতে থাকবেন
আর আমি শুনতে থাকবো, অরণ্য।
প্রতিদিনই পরের দিন আসতে থাকবে আর যেতে থাকবে,
আমরা কথা বলতে থাকবো পৃথিবীর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যা ঘটছে
বা ঘটতে যাচ্ছে তার সব কিছু নিয়ে।
টেবিল চাপড়ে দুচারটে বিপ্লব নামিয়ে আনবেন গরিবদের গলিতে,
যে কোনও দিকেই, মল থেকে মর্গ, বা ময়দান বা মোহনার দিকেও
চাইলে
ছুটতে পারবেন, কিছুতে অনিচ্ছের কিছু নেই।
আপনার চোখের দিকে, যে চোখ থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে চমৎকার প্রেম
নামাতে পারেন, প্রতিদিনই অসহায় তাকিয়ে থাকবো
তৃষ্ণা বাড়াতে বাড়াতে আমাকে আস্ত একটি মরুভুমি বানিয়ে ছাড়বেন।
অত ঢংএর কী দরকার অরণ্য,
উত্থানরহিত হলে সোজা বলে দিন যে উত্থানরহিত!
২.
প্রেমিক প্রেমিক ভাব অথচ প্রেমিক নন আপনি অরণ্য
আমি তো চাই আপনি প্রেমিক হন,
আমি তো চাই আপনি আমার সঙ্গে সারাদিন
আপনি সারারাত।
অমন চাওয়া আপনার গোটা বিশ্বের কোনও কানাগলিতেও নেই,
চোখ কান খোলা রাখা লাল পিঁপড়ের চেয়েও বেশি হিসেবি আপনি,
শীতের সঞ্চয় করেই তুষ্ট নন,
গ্রীস্মে, বর্ষায়, শরতে, হেমন্তে তলে তলে মজুদ রাখেন অঢেল।
ঘোর বসন্তেও সব অদ্ভুতরকম ঠিকঠাক থাকে।
আপনার হিসেবে আমার সব আছে,
কেবল আমি নেই,
আপনার জন্য আমার উপোস করা হৃদয় নেই।
প্রেমিক যদি নাই হন, তবে অত ভাবের দরকার কী,
ঘোষণা দিয়ে অপ্রেমিক হয়ে যান
আমি বাঁচি।
বুনো হাতিগুলোর মতো ক্ষিদে আপনার, আমাকে ফুরিয়ে ফেলে
যদি এতটুকু কষ্ট না হয়, তবে ফেলুন, বাঁচি।
আর তা যদি না হয়, তবে প্রেম দিন, বাঁচি।
নাহ অরণ্য, প্রেম তো ঠুনকো বাতাসা নয় যে চাইলেই সবাই বিলোতে
পারে।
আপনি না পারেন, আমি তো পারি,
আমার দয়ায় না হয় একবার বেঁচেই দেখুন অরণ্য।
৩.
এই যে আমার সবকিছু, আমার গদ্যপদ্য আপনাকে নির্ভাবনায় দিয়ে
দিতে পারছি,
এই আপনিই একদিন সব অস্বীকার করবেন,
বদ পুরুষের আড্ডায় টিটকিরি দিয়ে হাসবেন,
দুচারদিনের শুকনো সঙ্গমের গল্প বেশ রসিয়ে বলবেন।
জানি যে জীবন দিচ্ছি, তারপরও যে কোনওদিনই পিঠে ছুরি বসিয়ে
স্বচ্ছন্দে হেঁটে যাবেন।
কেউ কেউ এমন হয়, খুব মিঠেভাষী, খুব অনুদ্ধত, বিনত,
অথচ মুহূর্তে আততায়ী হয়ে যেতে পারে।
একফোঁটা বিশ্বাস নেই আপনাকে, তারপরও আপনার স্পর্শের জন্য
অপেক্ষা করে আমার রোমকূপ, আপনার চুম্বনের জন্য আমার ত্বক,
আপনার উন্মাদনার জন্য স্তন, নিভৃত যাষনার জন্য যোনি।
অপেক্ষা করে আমার ভিতর বাহির,
অপেক্ষা করে প্রেম।
আগুনের দিকে যাচ্ছি জেনেও যাচ্ছি,
কেউ কেউ এমন হয়, পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, তবু আগুন দেখলে আগুনের
দিকেই
যায়, যেতে চায়।
একদিন হয়তো ভুলেও যাবো অরণ্য কে ছিল, কী ছিল,
শুধু মনে থাকবে দুপুর-রোদের মতো কোনও এক শহরের কারও
জন্য
কোনও এক শীতবসন্ত জুড়ে দুর্দম্য তৃষ্ণা ছিল আমার।
৪.
সুদর্শন কোনও যুবক নন আপনি, অরণ্য
আপনার দিকে ফিরে আমি না তাকাতেও পারতাম।
কোনও নক্ষষন নন, নির্দোষ নির্দ্বিধ নন, আমায় নিমজ্জিত নন,
তারপরও এই যে আপনি সব এলোমেলো করে দিতে পারলেন
আমার,
সে কি আপনি আপনি বলে,
নাকি আমি মনে মনে একলা ছিলাম একশ বছর! তাই!
কিছু একটার প্রয়োজন ছিল আমার, নিয়ে বাঁচার!
নাকি অন্য কিছু!
আপনি হালকা তামাশার লোক,
মাস দু মাস পর আপনাকে ত্যাগ করলেও কিছু যেত আসতো না,
অথচ আপনার জন্য বছর ভর বসে থাকা, সে কি আপনি
নিস্পৃহ নির্জীব বলে! যাকে হিঁচড়ে নামাতে পারি আমার জোয়ারে।
নাকি অন্য কিছু!
নাকি ভালোবাসি!
ভালো কি মানুষ এমন অথর্বকে বাসে!
প্রেম বলে কিছু নেই ভারতবর্ষে, জানি।
এর নাম আপাতত মোহ দিয়ে পরস্পরকে চুম্বন করি চলুন।
আপনি মধ্য চল্লিশের ট্যারাচোখি পুরুষবাদী শঠ, চোখ কান নাক মাথা
বুজে
চুম্বন সারতে চাই। চুম্বনের জাদু যদি শঠতা সরাতে পারে, তবে নয় কেন!
কী জানি মনে নেই কাউকে কখনও আনখচুল বদলে ফেলার
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম কী না কোথাও!
হতে পারে, নাও হতে পারে।
তা ছাড়া, কী হয় যদি ভালোবাসি! ভালোও তো বাসতে পারি,
সোনাঝুরি বনে মধ্যরাতের চাঁদ ভাসা আলোয় যদি পাশাপাশি হাঁটি,
হাতের কি কোনও শক্তি থাকে না ছুঁতে পাশের হাত!
৫.
ঢংয়ের রংয়ের লম্ফ ঝম্ফ চলছে চলুক,
যে যাই বলুক,
আপনি জানেন আমি জানি
শোয়াশুয়ি করতে গিয়ে কম হয়নি হয়রানি।
বাড়ির বউকে তুলসি পাতার মন্ত্র দিয়ে বাইরে এসেই শয়তানি
করুন করুন রক্তে আছে, রক্তের চেয়েও বেশি আছে মস্তিষ্কের কোষে
কোষে।
এই ফাগুনে দুদণ্ড কি সময় আছে কথা বলবেন বসে!
মাগনা মদের পিছন পিছন তুফান ছোটা একটুখানি কমিয়ে এনে বসবেন
কি?
লাভ হবে না এমন কথা দুটো চারটে বলার মতো মন আছে কি?
এই বঙ্গে বীরপুরুষের অর্থ হল যে করেই হোক রাখতে পারা দুদশখানা
প্রেমিকা।
আমার কাছে বীরপুরুষের থুরি ওই চামচিকাদের দর উঁচুতে তুলে
ধরেও পাঁচশিকা।
আমার জীবন আমার জীবন
কেউ নেই তা শেয়ার করার।
যেমন ইচ্ছে জীবন যাপন করছি আমি, বন্য হলে বন্য
এসবের তো সবই আপনি জানেন অরণ্য।
চিরকালের একা আমি একাই ছিলাম ভালো,
আপনি এসে ঝড়ের মতো নিবিয়ে দিয়ে আলো,
আরও বেশি একা করলেন, আরও ভয়াবহ। থাক সে কথা,অন্য কথা,
আমার কথা।
আপনি তো আর একলা নন, আপনার আসর সব ঋতুতেই জমকালো।
আপনি এত তুচ্ছ, এত তৃণ, তবু তৃণের দিকে বারেবারেই নুইতে হয়,
হৃদয় ছাড়া মেয়েমানুষের অন্য কিছুই শত্রু নয়।
৬.
যখন সুখ দিচ্ছেন আমাকে, অসুখ দিচ্ছেন বুঝিনি।
চুম্বনের জন্য বিযুক্ত করেছি ঠোঁট, গোপনে বিষ দিয়েছেন মুখে, বুঝিনি।
৭.
আপনার ব্যাধি নিয়ে আমি এখন ভেলায় শুয়ে আছি,
ভেসে ভেসে ভেলা ওপারে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে, দেখছেন যাচ্ছে।
যাচ্ছে, তাতে কী! আপনার উৎসবে কোনও জলের ছিটে তো লাগছে
না!
যারা ভালোবাসি, যারা বুঝি না হিসেব নিকেষ, তারা ভেসে যাচ্ছি
ওইপারে,
ওইপারে গলে গলে পড়ছে আগুন।
সূর্যাস্তের সৌন্দর্য মদ্যপান করতে করতে উপভোগ করতে
ভালোবাসেন, করবেন।
আপনার সবই তো বুঝি, শুধু ভালোবাসেননি, বুঝিনি।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১৪৩ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন