#যারা_বলবে_মানুষ_মানুষের_ভাই_তারা_আলকুরআনের_স্পষ্ট_আয়াত_অস্বীকারকারী_কাফের।
বরং আমাদের আকিদা হল; মুমিন পুরুষগণ ও মুমিন নারীগণ একে অপরের নিকটবর্তী বন্ধু, অন্তরঙ্গ সঙ্গী অথবা ওলী বা অভিভাবকত্ব। আর যারা হিন্দু বা বিধর্মী তাদের সাথে সম্পর্ক হবে প্রতিবাসীর।অবশ্যই তাদের হক আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু মনে রাখতে হবে আল্লাহ মুমিনদের উপর কাফেরদেরকে বন্ধু বানানো হারাম করেছেন। কারন তারা মুমিনদের ধ্বংস করার গভীর চক্রান্ত করছে। আমি আজ সরাসরি আল কুরআনের মাধ্যমে এই ব্যাপারে আলোচনা করব।
১, হিন্দু, খৃস্টান ও ইয়াহূদী সহ সকল মুশরিক মুমিনদের ধ্বংস করার গভীর চক্রান্ত করছে। অনিষ্ট, অমঙ্গল বা ক্ষতি করাই তাদের মৌলিক কাজ। এবং তাদের এই চক্রান্ত বুকের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছে।
দলিলঃ১ আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا بِطَانَةً مِنْ دُونِكُمْ لَا يَأْلُونَكُمْ خَبَالًا وَدُّوا مَا عَنِتُّمْ قَدْ بَدَتِ الْبَغْضَاءُ مِنْ أَفْوَاهِهِمْ وَمَا تُخْفِي صُدُورُهُمْ أَكْبَرُ قَدْ بَيَّنَّا لَكُمُ الْآيَاتِ إِنْ كُنْتُمْ تَعْقِلُونَ (118)
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের আপনজন ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা তোমাদের অনিষ্ট সাধনে কোনো ত্রুটি করবে না। যা তোমাদের ক্ষতি করে তাই তাই তারা কামনা করে। তাদের মনের হিংসা ও বিদ্বেষ তাদের মুখ থেকে প্রকাশ পেয়ে গেছে এবং যা কিছু তারা নিজেদের বুকের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছে তা এর চেয়েও মারাত্মক। আমি তোমাদের জন্য নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বিবৃত করেছি। যদি তোমরা অনুধাবন করো।
২, যারা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ-বিশ্বাস স্থাপন করে না তারা আমাদের জাতির পিতা ইব্রাহীম আঃ এর চির শত্রু।
দলিলঃ আল্লাহ তা‘আলা সূরা মুমতাহানার ৪নং আয়াতে বলেন,
﴿قَدْ كَانَتْ لَكُمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِي إِبْرَاهِيمَ وَالَّذِينَ مَعَهُ إِذْ قَالُوا لِقَوْمِهِمْ إِنَّا بُرَآَءُ مِنْكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ كَفَرْنَا بِكُمْ وَبَدَا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَاءُ أَبَدًا حَتَّى تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَحْدَهُ﴾
‘‘তোমাদের জন্য ইবরাহীম ও তার সাথীগণের মধ্যে চমৎকার নমুনা রয়েছে। যখন তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিল, তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদত করে, তার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদেরকে অস্বীকার করছি। তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করা পর্যন্ত তোমাদের মধ্যে ও আমাদের মধ্যে চির শত্রুতা ও বিদ্বেষ প্রকাশিত হয়েছে’’। সূরা মুমতাহানার ৪
৩, হিন্দু,খৃস্টান ও ইয়াহূদী সহ সকল বিধর্মী পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। এবং তাদের টার্গেট শত্রু হল মুমিন, মুসলমান।
দলিলঃ আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَىٰ أَوْلِيَاءَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ﴾
‘হে ঈমানদারগণ! ইয়াহূদী ও খৃস্টানদেরকে নিজেদের বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। আর যদি তোমাদের মধ্য থেকে কেউ তাদেরকে বন্ধু হিসাবে পরিগণিত করে তাহলে সেও তাদের মধ্যেই গণ্য হবে। অবশ্যই আল্লাহ যালেমদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন না’’। (সূরা মায়েদা: ৫১)
৪। এজন্য তোমরা তোমাদের স্পষ্ট শত্রুদের বন্ধু মনে কর না। আল্লাহ তাদের স্পষ্ট শত্রু বলেছেন, তারপরেও তোমরা কেন তাদের বন্ধু হিসাবে গ্রহন কর? অথচ এটা সরল পথ হতে বিচ্যুত হওয়ার কারণ’’।
দলিলঃ আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ تُلْقُونَ إِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَقَدْ كَفَرُوا بِمَا جَاءَكُمْ مِنْ الْحَقِّ يُخْرِجُونَ الرَّسُولَ وَإِيَّاكُمْ أَنْ تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ رَبِّكُمْ إِنْ كُنتُمْ خَرَجْتُمْ جِهَادًا فِي سَبِيلِي وَابْتِغَاءَ مَرْضَاتِي تُسِرُّونَ إِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَأَنَا أَعْلَمُ بِمَا أَخْفَيْتُمْ وَمَا أَعْلَنتُمْ وَمَنْ يَفْعَلْهُ مِنْكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَوَاءَ السَّبِيل﴾
‘‘হে মুমিনগণ! তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা তো তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ তোমাদের কাছে যে সত্য আগমন করেছে, তারা তা অস্বীকার করছে। তারা রসূলকে এবং তোমাদেরকে বহিস্কার করে, এই অপরাধে যে, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস রাখ। যদি তোমরা আমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য এবং আমার পথে জেহাদ করার জন্যে বের হয়ে থাক, তবে কেন তাদের প্রতি গোপনে বন্ধুত্বের পয়গাম প্রেরণ করছ? তোমরা যা গোপন কর এবং যা প্রকাশ কর, তা আমি খুব জানি। তোমাদের মধ্যে যে এটা করে, সে সরল পথ হতে বিচ্যুত হয়ে যায়’’। (সূরা মুমতাহানাহ: ১)
৫। হিন্দু, খৃস্টান ও ইয়াহূদী সহ সকল বিধর্মীদের সাথে চলাফেরা তোমাদের কত সহজেই মুমিন থেকে যালেম বানিয়ে তুলবে। তা তোমরা কল্পনা করতে অক্ষম।
দলিলঃ আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَتَّخِذُوا آبَاءَكُمْ وَإِخْوَانَكُمْ أَوْلِيَاءَ إِنْ اسْتَحَبُّوا الْكُفْرَ عَلَى الإِيمَانِ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ﴾
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় পিতা ও ভাইদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করো না, যদি তারা কুফরকে ঈমানের উপর প্রাধান্য দেয়। তোমাদের মধ্য হতে যারা তাদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে, তারাই হবে যালেম’’। (সূরা তাওবা: ২৩)
৬। হিন্দু, খৃস্টান ও ইয়াহূদী সহ সকল বিধর্মীদের বন্ধু ভাবা ব্যাক্তি আল্লাহ এবং পরকা্ল অস্বীকার কারী কাফের।
দলিলঃ আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿لاَ تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ ۚ﴾
‘‘যারা আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, তাদেরকে তুমি আল্লাহ ও তার রসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবে না। হোক না এই বিরুদ্ধাচরণকারীরা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা তাদের জাতি-গোত্র’’। (সূরা মুজাদালা: ২২)
৭। এভাবেই সকাল বেলা মুমিন থাকা সত্বেও বিকেলে সে কাফের হয়ে যায়।
নবিজি বলেনঃ
وَيُمْسِي مُؤمِناً ويُصبحُ كَافِراً، يَبيعُ دِينَهُ بعَرَضٍ مِنَ الدُّنيا». رواه مسلم
মানুষ সে সময়ে সকালে মুমিন থাকবে এবং সন্ধ্যায় কাফের হয়ে যাবে অথবা সন্ধ্যায় মুমিন থাকবে এবং সকালে কাফের হয়ে যাবে। নিজের দ্বীনকে দুনিয়ার সম্পদের বিনিময়ে বিক্রয় করবে। [মুসলিম ১১৮, তিরমিযি ২১৯৫, আহমদ ৭৯৭০, ৮৬৩১, ৮৮২৯]
৮, তাহলে আমরা কাদের কে প্রকৃত বন্ধু বানাব? আল্লাহ মুমিন, মুসলমান কে বন্ধু বানানো ওয়াজিব করেছেন।
দলিলঃ১
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلاَةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُونَ * وَمَنْ يَتَوَلَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا فَإِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْغَالِبُونَ﴾
‘‘আল্লাহ, তার রসূল এবং মুমিনগণই হচ্ছেন তোমাদের বন্ধু। যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং রুকু করে। আর যে আল্লাহ তার রসূল এবং মুমিনদেরকে বন্ধু বানায়, তারাই আল্লাহর দলভুক্ত। নিশ্চয় আল্লাহর দল বিজয়ী’’। (সূরা মায়িদা: ৫৫-৫৬)
দলিলঃ ২
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ﴾
‘‘মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই। সুতরাং তোমরা দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও’’। (সূরা হুজরাত: ১০)
১০, কাজেই আমাদের জন্য ওয়াজিব কাফেরদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া, এবং মুমিনদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া’’।
দলিল
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ﴾
‘‘মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল। আর যারা তার সাথে আছে তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল’’। (সূরা ফাত্হ: ২৯)
১০, মুমিন তুমি হতাস কেন? অথচ এই দুনিয়া তোমার জন্য বানানো হয়েছে তুমি কি তা জান?
দলিল ১
আল্লাহ তা‘আলা সূরা জাসিয়ার ১৩ নং আয়াতে বলেন,
﴿وَسَخَّرَ لَكُمْ مَا فِي السَّمَوَاتِ وَمَا فِي الأرْضِ جَمِيعًا مِنْهُ إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ﴾
‘‘এবং তিনি আসমান ও যমীনের সমস্ত জিনিসকেই তোমাদের অনুগত করে দিয়েছেন। সবকিছুই তার পক্ষ থেকে। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে’’। (সূরা জাসিয়া: ১৩)
দলিল ২ তিনি আরো বলেন,
﴿هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُمْ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا﴾
‘‘তিনি তোমাদের জন্য ভূপৃষ্টের সকল বস্তু সৃষ্টি করেছেন’’। (সূরা বাকারা: ২৯)
মোঃ রাকিবুল হাসান
০১৭৬১১২৫৬২৭
ইসলামি লেখক,
দারুননাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসা,ঢাকা।
সতর্ক বার্তা কেউ বাজে কমেন্ট করবেন না।
যারা বলবে মানুষ মানুষের ভাই, তারা আল কুরআনের স্পষ্ট আয়াত অস্বীকার কারী কাফের।
আলোচনা - যারা বলবে মানুষ মানুষের ভাই, তারা আল কুরআনের স্পষ্ট আয়াত অস্বীকার কারী কাফের।
লেখক: ক্ষুদ্রলেখক মোঃ রাকিবুল হাসান
প্রকাশ - রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
এখন পর্যন্ত লেখাটি পড়া হয়েছে ১৯৮ বার
যদি লেখাটি সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন