আমি তো নীলা নই

সামস রবি সামস রবি | কাব্য - নীলখামে রক্ত অশ্রু

তখন প্রায় মাসখানেক হয়ে গিয়েছিল,
তোমার বাড়ির চিলে কোঠায় উঠেছি।
কোন এক বসন্তের বৈকালে মৃদু বাতাস,
আমি জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছি,
শহরে অগোছালো দালান কোঠায়।
কোকিলের সুরের আভাস পাওয়া সম্ভব নয়,
তবুই অপূর্ণ বসন্ত উপভোগের চেষ্টা।
আমার চোখ আটকে গেল বিস্মিত এক দৃশ্যে,
বড় সড় জবা ফুলের টব, কয়েকটা ফুলও ফুটেছে
দুলছে পাতা দুলছে ফুল, সাথে ললনার দীঘল খোলা চুল।
ইচ্ছে হল অপরূপ দৃশ্যটি ক্যানভাসে বন্দি করি,
অর্ধ ক্যানভাসেই ঘুরে তাকিয়ে দৌড়ে চলে গেলে,
ক্ষণিকের মায়াবী চাহনির হরিনী চোখের ঝলকানিতে
হারিয়ে ফেলেছি দীঘল চুল, জবা, আর বসন্তকে।

(চলে গেছে এক যুগ, তবুও হয়নি অংকিত,
ভয় লাগে এই বুঝি হয়ে গেল ভুল।)
পাথর দিয়ে মুড়িয়ে তোমার প্রথম আর শেষ চিরকুট,
-ছাদের কোনায় আসেন ।
( জানিনা আজও পাথর দিয়ে ছুড়ে দিলে কেন
চাইলেতো হাতেই দিতে পারতে। )
মনে আছে তোমার? সেদিন তুমি কোন কথাই বলনি!
শুধু কয়েক সেকেন্ড করে দুই বার তাকালে,
আরেক বার এক পলক তাকিয়েই দৌড়ে চলে গেলে।
তোমাকে পিছন থেকে ডাকার সাহস হল না।
একদিন সকালে আকাশ মেঘলা, তুমি আসলে
- কেমন আছেন?
- ভালো।
- এখানে দাঁড়িয়ে কেন?
- মেঘলা আকাশের মেঘগুলাকে আপন করার ইচ্ছে হচ্ছে।

তুমি মৃদু হাসলে, তোমার এলোমেলো দাঁতের হাসি
আমি আরেক বার তোমার প্রেমে পড়লাম।
আমার আঁকা নীল আকাশের কিছু ছবিতে চোখ বুলিয়ে নিলে
কি যেন খুঁজছো!
জিজ্ঞেস করলে নীল কি বেশিই প্রিয়
আমি বললাম -হ্যাঁ
আবার জিজ্ঞেস করলে আমার প্রিয় মানুষের নাম কি
বললাম প্রিয় মানুষ নেই।
তবে যদি হয় তার নাম নীলা হবে!
বললে আমি তো নীলা না;
- তা তো জানি
- তবে?
শুধু এই একটি ছোট্ট শব্দ, বুঝে গিয়েছি সব
আপনি থেকে তুমি হলে, কেটে গেল কয়েক মাস।

হঠাৎ একদিন সকালে আমি যাব ইন্টারভিউ দিতে,
আন্টি আসলেন খুব হাসি মুখে;
- কেমন আছ?
- জ্বী ভাল, আপনি?
- হুম ভাল।
- কিছু বলবেন ?
'তিনি এতো সুন্দর করে বুঝিয়েছেন'
তোমার সামনে দাঁড়ানোর যোগ্যতা হারিয়েছি।
সেদিন আর দেওয়া হয়নি ইন্টারভিউ
অনেক কেঁদেছিলাম দরজা বন্ধ করে।
তুমি কলেজে থাকতে থাকতেই ছেড়েছি চিলে কোঠা।
না আন্টি একবারও বলেননি চলে যাও।
হয়তো আজ তুমি সব ভুলে গেছ
অথবা মাঝে মাঝে স্মৃতির পাতা খুলে আমার মত কাঁদো
তবে মেনে নিয়েছি বাস্তবতা, নিয়েছি সব
তুমিও নিয়েছ তা।

শুনেছি তোমার বড় মেয়ের নাম রেখেছ "নীলা"।
ভালো থেকো, ভাল থাকুক ভালোবাসা।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১২৩ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন