যুবক অনার্য

গল্প - দ্য কিলার আউটসাইডার -৩

যুবক অনার্য
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ রহস্য

মা বললো- তুই আজ একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরিস।তাড়াতাড়ি ফেরার কারণ জানতে না চেয়েই জিলম ‘ওকে’ বলে বেরিয়ে গেলো।

চাইলেই জিলম যে-কোনো জায়গায় বসতে পারে না, তাই রুদ্রকে বলেছিলো টিটুর বাসায় বসলে ভালো হয়।টিটু আজ বাসায় নেই।আন্টি দরোজা খুলে দিলেন।বললেন- রুদ্র এসে অপেক্ষা করছে।তোমরা ড্রইং রুমে গল্প করো।আমি টিটুকে ফোন দিচ্ছি।চলে আসবে।

রুদ্র কী একটা বইয়ে চোখ বুলাচ্ছিলো।
জিলম বললো – আজ একটু তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে।
কেনো?
-মা বলেছেন।
বেশ তো যাবি,সমস্যা কী!
-সমস্যা নেই।কিন্তু একটু টেনশন হচ্ছে।
বাদ দে।কিচ্ছু হবে না।মায়েরা তো এমনই হয়।

জিলম কি একটু অন্যমনস্ক হলো!

বেল বাজছে।টিটু এসে গেছে।আন্টি দরোজা খুলে দিলেন।টিটুর সেই পুরোনো আর চিরায়ত হাসি।দুষ্টু আর নিষ্পাপ।
-কিরে তোদের এতো লেট কেনো?

কেউ কোনো উত্তর দেয় না।উত্তরের কোনো প্রয়োজনও বোধ করে না টিটু।
রুদ্র বইয়ে চোখ রেখে -মনে হলো- না পড়ে কিছু একটা ভাবছে মনে মনে।রুদ্র কি কোনো কিছু নিয়ে চিন্তিত!

জিলম কথা শুরু করে- শোন, মা’র বয়েস হয়ে গেছে।এখন আসলে সব কিছু আমাকেই সামলাতে হয়।তোরা আছিস বলেই সাহস পাই।স্বপ্ন দেখি।
টিটু বলে – তুই স্বপ্ন দেখিস?
কেনো, স্বপ্ন না দেখার কি আছে!
-কী স্বপ্ন দেখিস?
তোকে বলতে হবে?জিলমকে মৃদু উত্তেজিত মনে হলো।
টিটু বললো- রেগে যাচ্ছিস?
হ্যাঁ যাচ্ছি।তো?
এসব কোনো কথাই মনে হয় রুদ্রর কানে ঢুকছে না।রুদ্র বিড়বিড় করে পড়ছে আর গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে।গ্লাসে যে বরফকুচি নেই সেদিকেও ওর কোনো খেয়াল নেই।
জিলমকে উত্তেজিত দেখে টিটু শুধু স্মিথ হেসে চুপ করে গেলো।আসলে টিটু বুঝতে পারে জিলমের পারফরমেন্স ম্যাচিউর্ড নয়।সে তার দলকে সুন্দর করে পরিচালনা করবার জন্য যথার্থ যোগ্য এখনো হয়ে ওঠেনি।এখনো সে অনেক কিছুই ভুল করে। ভুল লোককে প্রায়োরিটি দেয়।- এসবকিছু ইনডিরেক্টলি টিটু বলতে চেষ্টা করেছে অনেকবার কিন্তু জিলম পাত্তা দেয় নি,উলটো রেগে গিয়েছে।টিটু ঠিক করেছে সে এসব দলটল বাদ দিয়ে দেশের বাইরে কোথাও চলে যাবে।কিন্তু এ কথা সে কারো সংগে শেয়ার করে নি এমনকি ওর মায়ের সংগেও না।
জিলম গ্লাসে বরফকুচি নিয়ে চুমুক দিলো।টিটুও বরফ কুচি নিলো কিন্তু চুমুক দিতে ইচ্ছে হচ্ছে না।ওদিকে সাদির মাথা সোফায় এলিয়ে পড়েছে।অলরেডি নাক ডাকাচ্ছে- ঘঁত ঘঁত…

জিলম সংক্ষিপ্ত যে-ব্রিফ দিলো তাতে, টিটু লক্ষ্য করলো, জিলমের যে পরিকল্পনা তা খুব সুদূরপ্রসারী নয়।বরং দলের গুরুত্বপূর্ণ অনেকের সংগেই তার এক ধরনের স্নায়ুদ্বন্দ্ব তৈরী হতে পারে যা মোটেই শুভ কিছু নয় ।

সেদিনের মতো আড্ডা শেষ হলো সন্ধ্যার কিছু আগে।

১১২
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন