কবিতা - বর্ণমালার প্রভাতফেরি

লেখক: মোঃ আব্দুল মজিদ এনডিসি

না, বইয়ের পাতা থেকে নয়, একেবারে বাঙালির বুকের ভেতর থেকে
রক্তের রং শুষে নিয়ে, তারপর শিমুল-পলাশ-গাঁদায় শরীর এঁকে
কতিপয় বর্ণ আজ এই রংহীন সৌম্য-শান্ত ভোরের পায়ে পায়ে
অচেনা কিশোরের হাতেধরা গাছের ডালেডালে ঝুলে অমর একুশের মিনারের গাঁয়ে!

বাতাস আজ শোকে স্তব্ধ জোয়ারের পূর্ণতার মুহূর্ত পাওয়া নদীর মতো
একেবারে অনড় সব নগ্নপায়ে আসা মানব-মানবীর ঠোঁটগুলো যত
আর ভেতরের জমে থাকা শোকের ছায়া যেন শরীর ছাপিয়ে গড়ে পড়ছে; ধরে নিক
মাটি আজ, যে কিনা শোকের আল্পনা বুকে নিয়ে শোকার্ত ততোধিক।

তবুও বর্ণগুলি দুলছে যেন অকারণে, জানিনা কোন শোকে আরো অস্থির
হয়ে আছে তারা। বয়সী শোকমিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে অতঃপর বর্ণগুলি ধীর
হলো বেদিমূলের দুপাশে এসে; অতিবিনয়ে সকৃতঙ্গ প্রণতি জানায় মিনারকে যেন
যার পিছনে আজো চেয়ে আছে এক বয়সী রক্তিম সূর্য; সে চেয়ে আছে কেন ?
কী সে বলতে চায় এতদিন ধরে রংহীন শোকের এই ভোরে আজো বুঝি নাই।
সমবেত সজ্জিত বাঙালির পিছনে স্তব্ধ দাঁড়িয়ে আমি দিব্য দেখতে পাই-

শোকে মুহ্যমান ঝুলন্ত বর্ণগুলি অস্থির হয়ে দুলেদুলে কী যেন প্রতিবাদ করে
মিনারের কাছে; হয়ত একদিন শরীর হারানোর ভয়ে তাই স্তব্ধ শোকাচ্ছন্ন স্বরে
প্রতিবাদে মুখর। কেননা, এ দেশীয় একজন মনীষীতো বলেছিলেন একদা-
একুশের বেদিমূলে ডালে ঝুলেথাকা বর্ণগুলি ছাড়া কিছুই থাকবে না, তাই কি বেহুদা
মুখর হলো এই বাঙালির দুখিনী বর্ণমালা আজ শোকাহত একুশের ভোরে অকস্মাৎ?
কার বিরুদ্ধে? তবে কি এই সমবেত স্মার্ট, এ্যাডভান্সড বাঙালির বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ?

এখন পর্যন্ত লেখাটি পড়া হয়েছে ৩৪ বার
যদি লেখাটি সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন