ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত

কবিতা - যুদ্ধ-শান্তি

লেখক: ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত

ভয় নাই আর কিছু ভয় নাই আর।
শুভ সমাচার বড় শুভ সমাচার॥
পুনর্ব্বাধার হইয়াছে দিল্লী অধিকার।
“বাদশা বেগম” দোঁহে ভোগে কারাগার॥
অকারণে ক্রিয়াদোষে করে অত্যাচার।
মরিল দুজন তাঁর প্রাণের কুমার॥
ছেলে মেয়ে আদি করি যত পরিবার।
দিবানিশি করিতেছে শুধু হাহাকার॥
কোথা সেই আস্ফালন কোথা দরবার?
হাড়ে মাটী বাড়ে দূর্ব্বা হয়ে গেল সার॥
একেবারে ঝাড়ে বংশে হ’ল ছারখার।
শিশু সব মারা যাবে বিহনে আহার॥
দূরে থাক্‌ সমুদয় সম্পদ-সঞ্চার।
পড়িয়া ব্রিটিশ-কোপে প্রাণে বাঁচা ভার॥
করেছিল যে প্রচার বিষম ব্যাপার।
হাতে হাতে প্রতিফল ফ’লে গেল তার॥
অদ্যপিও রবি শশী হতেছে প্রচার।
অদ্যাপিও হয় নাই সত্যের সংহার॥
অদ্যপিও ধর্ম্ম এক করেন বিহার।
তিনি কি কখনো সন এত পাপভার?
কোথা দীনদয়াময় সর্ব্বামূলাধার।
আহা আহা মরি কিবা করণা তোমার॥
অন্তরীক্ষে থেকে সব করিছ বিচার।
তোমা বিনে জয় দানে সাধ্য আছে কার॥
সমুচিত শাস্তি পেলে যত দুরাচার।
অতএব তব পদে করি নমস্কার॥

যমুনার জল আর পূর্ববৎ নাই যে।
হয়েছে রুধিরে ভরা কেমনেতে নাই রে?
তৃষ্ণায় সে জল আর কেমনেতে খাই রে?
ভাসিছে তাহাতে সব শব ঠাঁই ঠাঁই রে॥
ঝাঁপ দিয়ে মরিতেছে সকল সিপাই রে।
এ কূল ও কূলে তার ভম্ম আর ছাই রে॥
কুকুর শৃগাল হেরি যে দিকেতে চাই রে।
শকুনি গৃধিনী উড়ে শব্দ সাঁই সাঁই রে॥
শা-জাদার শাণিতেতে মিটে গেল খাঁই রে।
খেয়ে সব পরাভব মেনেছে সবাই রে॥
স্থানে স্থানে মৃতদেহ পর্ব্বতের চাঁই রে।
পচাগন্ধে নাক জ্বলে কোথায় দাঁড়াই রে?
মলহীন একটুকু স্থান নাহি পাই রে।
কোথা খেয়ে কোথা শুয়ে সুখে নিদ্রা যাই রে?
সব দিকে সমদশা কোন্‌ দিকে চাই রে?
এ দেশেতে নাহি দেখি হিংসাহীন ঠাঁই রে॥
যমুনার তটে এসে যমুনার ভাই রে। *
বিকট বদনে এক বিস্তারিল হাই রে॥
সাধু সাধু ধর্ম্মরাজ বলি হারি.যাই রে।
ঘুচাইল যত কিছু আপদ বালাই রে॥
ব্রিটিসের জয় জয় বল সবে ভাই রে।
এসো সবে নেচে কুঁদে বিভূগণ গাই রে॥

এখন পর্যন্ত লেখাটি পড়া হয়েছে ১২২ বার
যদি লেখাটি সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন