হঙকঙেতে সারাবছর আপিস করেন মামা―
সেখান থেকে এনেছিলেন চীনের দেশের শ্যামা,
দিয়েছিলেন মাকে,
ঢাকার নীচে যখন-তখন শিষ দিয়ে সে ডাকে।
নিচিনপুরের বনের থেকে ঝুলির মধ্যে ক’রে
ভজহরি আনত ফড়িঙ ধরে।
পাড়ায় পাড়ায় যত পাখি খাঁচায় খাঁচায় ঢাকা
আওয়াজ শুনেই উঠত নেচে, ঝাপট দিত পাখা।
কাউকে ছাতু, কাউকে পােকা, কাউকে দিত ধান―
অসুখ করলে হলুদজলে করিয়ে দিত স্নান।
ভজু বলত, ‘পােকার দেশে আমিই হচ্ছি দত্যি,
আমার ভয়ে গঙ্গাফড়িঙ ঘুমােয় না একরত্তি।
ঝােপে ঝােপে শাসন আমার কেবলই ধরপাকড়,
পাতায় পাতায় লুকিয়ে বেড়ায় যত পােকামাকড়।
একদিন সে ফাগুন মাসে মাকে এসে বলল,
‘গোধূলিতে মেয়ের আমার বিয়ে হবে কল্য।’
শুনে আমার লাগল ভারী মজা—
এই আমাদের ভজা
এরও আবার মেয়ে আছে, তারও হবে বিয়ে
রঙিন চেলির ঘোমটা মাথায় দিয়ে।
সুধাই তাকে, ‘বিয়ের দিনে খুব বুঝি ধুম হবে?’
ভজু বললে, ‘খাঁচার রাজ্যে নইলে কি মান রবে!
কেউ বা ওরা দাঁড়ের পাখি, পিঁজরেতে কেউ থাকে―
নেমন্তন্ন চিঠিগুলাে পাঠিয়ে দেব ডাকে।
মােটা মােটা ফড়িঙ দেব, ছাতুর সঙ্গে দই―
ছােলা আনব ভিজিয়ে জলে, ছড়িয়ে দেব খই।
এমনি হবে ধুম,
সাত পাড়াতে চক্ষে কারও রইবে না আর ঘুম।
ময়নাগুলাের খুলবে গলা, খাইয়ে দেব লঙ্কা―
কাকাতুয়া চীৎকারে তার বাজিয়ে দেবে ডঙ্কা।
পায়রা যত ফুলিয়ে গলা লাগাবে বক্বকম―
শালিকগুলাের চড়া মেজাজ, আওয়াজ নানারকম।
আসবে কোকিল, চন্দনাদের শুভাগমন হবে―
মন্ত্র শুনতে পাবে না কেউ পাখির কলরবে।
ডাকবে যখন টিয়ে
বরকর্তা রবেন বসে কানে আঙুল দিয়ে।’
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন