তৃনা যে দক্ষ অভিনেত্রী সেটা আমি জানি। কিন্তু আমি ওর মায়ায় আর ভুলেছি। ওর ব্লাউজের হাতা সরিয়ে ওর কাঁধে চুমু খেলাম। নিজেকে ওর একটু শক্ত করে। চাপ কাঁপা কাঁপা গলায় বলল ” আমি সত্যি বলছি বিশ্বাস করতে পারছি না। আপনিও আমার সাথে এরকম করবেন।”
আমি উনাকে ঘুরিয়ে নিয়ে উনার ব্লাউজের দড়িটা খুলে, ওনার মসৃণ চওড়া পিঠ চুমু খেতে খেতে বলাম।” বেশি কথা বলেন না, কাজ করুন, এখনো আপনাকে কিছু হলেও সন্মান করি, আপনার কথা গুলো শুনলে হয়তো ঘৃণা করবো…”
উনি আমার দিকে ঘুরে , আমার জড়িয়ে ধরে বললেন। ” আপনি যে বলেন, আমাকে ভালোবাসেন, আমার ছেলেকে নিজের ছেলের মত দেখেন… আজ কি হয়েছে, আমার সাথে আপনি এমন করছেন কেন? আপনি কোন আমার খারাপ ভাবে স্পর্শ করেন নি, আমার দরকার টাকা দিয়েছেন নিঃস্বার্থ ভাবে। আজ আমার ভীষন টাকার দরকার কিন্তু সেটা জেনে আমাকে এসব করতে বাধ্য করছেন। আপনি আমার শরীর পাবেন কিন্তু মন পাবেন না।”
আমি হো করে হেসে বললাম ” তৃনা দেবী আপনি শরীরটা দিতে জানেন আপনি কখনো মন দিতে জানেন না। মন দিলে এই দিন টা আপনাকে দেখতে হতো না। আপনি শরীরটা নিয়ে হয়তো আমি খেলা করতাম এভাবেই, কিন্তু আপনি পেতেন আমার স্ত্রী মর্যাদা।”
উনি কাঁপা কাঁপা গলায় বলল ” আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না বেলেছি বলেই কি এরকম করছেন। আমার ক্যারিয়ারের জন্য আমি বিয়ে করতে পারবো প্লীজ আমাকে আপনি বোঝার চেষ্টা করুন। আপনি আজ আমার এতো বড়ো ক্ষতি করেন না। ”
আমি বললাম” আমি সাহিত্যিক মানুষ প্রতিটা শব্দ বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা রাখি। আপনি নিজেই এখনি বললেন আপনিও। মানে আমার আগে আরো অনেক সাথেই এইরকম সম্পর্কে জড়িয়েছেন।”
উনি বললেন” সত্যি বলছি আমি আপনাকে যতটা প্রশয় দিয়েছি আর কাউকে এতোটা কাছে আসার সুযোগ দিই নি। যদি দিতাম তাহলে আরো সুযোগ পেতাম। প্লিজ আর বেশি দুরে এগিয়েন , আমি শ্রদ্ধা করি আপনাকে।”
আমি নিজেকে সংযত করে উনার খোলা বুক নাক ঘষতে ঘষতে বললাম। ” আপনার আমি খুব সন্মান করি সোনা, মিথ্যা কথা বলে সেই সম্মান নষ্ট করেন না। আপনি ভুলেন না ডঃ নাইয়া আপনাকে আমার সাথে আলাপ করে দিয়েছিলো। আপনার আই ফোনটা ওর মতো মানুষ বিনা স্বার্থে দেয় নি নিশ্চয় আপনাকে। তাছাড়া আমার ভাই সায়ণকে হিরো না করে প্রামাণিক হিরো করলেন কি জন্য, আর হঠাৎ প্রামাণিক আপনার নাম সব জায়গায় রেফার করছে সে গল্পটা কি আমার কানে আসেনি ভাবছেন?? সুতরাং আপনার কথা সব সম্পর্ক কিছু বিনিয়োগ করতে হয়। আমি সময় টাকা অবেগ সব কিছু আপনার প্রতি বিনিয়োগ করেছি। এখন রিটার্ন চাই, নতুন কিছু বিনিয়োগ আগে।”
উনি বললেন” ও আপনি যখন জোর করছেন, তখন আর কি করবো , তবে প্লিজ লাইট বন্ধ করে দেন , আমার লজ্জা লাগছে, আপনার হয়তো আমি একটু ভালোবাসি, মেয়ে সব পুরুষের কাছে শরীরটা এক্সপোজ করতে পারলেও , প্রিয় মানুষের কাছে একটু লজ্জা পায়।”
আমি যে বুড়ো হয়ে যাচ্ছি সেটা বুঝতে পারলাম।ওয়াস রুমে থেকে বেরিয়ে উনি পোশাক বদলাতে শুরু করলো।
আমি ডয়ার থেকে চেক বই করে চেক লিখতে বসলাম ” এসব বিষয়ে তেমন আমার অভিজ্ঞতা নেই, তাছাড়া অনেক পর এসব করলাম। তেমন মজা দিতে পারলাম হয়তো আপনি স্টিস ফাইট নন। সরি,,,”
কথা শেষ না হতেই হতেই উনি আমার ঠোঁটে আঙুল দিয়ে বললো” রোমান্সটাই আসল বাবু, পারফরম্যান্স দেখে লাভ নেই। আমি তোমার বৌ হবো না। আসল কথা টা শুন নেক্সট সপ্তাহে আমি আবার আসবো। লাইট অফ করে ছিলাম কারণ আমি জানি এ ঘরে তিনটে ক্যামেরা আছে। আমরা যা কথা বলছি সব কিছু রেকোর্ড হচ্ছে। নেক্সট সপ্তাহে আরো দশ হাজার টাকা বাড়িয়ে দিলে লাইট জ্বালিয়ে রাখতে পারবেন। রাজকে হায় বলবেন, আমি আমার সম্পর্কে সব কথা ও আপনাকে বলেছেন। আজ আসি।”
আমি পাশের ঘরে যেতে রাজ বললো। ” তুই ওকে চেকটা দিলি কেন আবার??”
আকাশ বললো। ” ছাড় ভালো করছে ও টাকা দিয়ে। ওর আজকের দিনটা দরকার ছিলো। কারণ টাকা গেলে টাকা আয় করে নেওয়া যায়। মন দিয়ে ফেলেই গল্পটা অন্যরকম হয়ে যায়। এখনি ফ্লেস আউট করে দে মেয়েটাকে তোর মন থেকে। ”
রাম ঘরে ঢুকে বললো ,” দাদা একটা মহিলা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করছে। বলছে নীলাঞ্জনার পরিচিত। দেখা করবেন। ”
নীলাঞ্জনা নাম শুনে আমি কেমন জেনো আবেগ প্রবণ হয়ে গেলাম। না করতে পারলাম না।
মেয়েটি নাম মধু পোর্টফোলিও ছবি দেখাতে দেখাতে দেখাতে বললো, ” নীলাঞ্জনা আমি বন্ধু, আপনার ডিভাইস হয়ে গেল প্রায় সাত আট বছর। এখন আপনি বিয়ে করলেন। আমরা সব বন্ধুরা বলাবলি করি ও কত বোকা।”
আমি বললাম”নীলাঞ্জনা প্রসঙ্গটা ছাড়ুন আমি যদি সফল হয়ে থাকি সেটা ওর জন্য। ছাড়ুন আমি আপনাকে চিনতে পারছি ওর স্কুল বন্ধু , আপনার বোধহয় রানাঘাটে বিয়ে হয়েছিল, ,,”
ওনি কথা শেষ করতে না দিয়ে উনি বললেন” আমার বর মাতাল ছিলো , আমাকে কতো মারধর করতো, সব সহ্য করে নিয়েছি, সংসারটা ছেড়ে কোনদিন বাপের বাড়ি চলে আসি নি । কিন্তু ও চলে গেল আমাকে একা ছেড়ে রেখে। ”
বলে এক পশলা কেঁদে নিলো।”টাকা পয়সা আমার অসুবিধা নেই কিন্তু আমি নিজের একটা আইডেন্টিটি চাই, ঠিক আপনার মতো। ”
আমি অবাক হয়ে গেলাম” আমার মতো মানে।”
উজ্জ্বল চোখ নিয়ে উনি বললেন” আপনার সব লেখা আমি পড়ি, আপনি এখনো নীলাঞ্জনা ভালোবাসেন। কিন্তু ওকে ফেরানো চেষ্টা না করে বা দেবদাস না হয়ে সমাজের কাছে উদাহরণ হতে চেষ্টা করেছেন। ”
আমি বললাম” ও”
উনি বললেন” আমি আপনার সাথে কাজ করতে চাই, তৃনা ও আমার বন্ধু,সবাই জানে তৃনা সাথে আপনি আর কাজ করবেন না কখনো, ওর জায়গায় আমাকে একবার সুযোগ দিন। আমি অনেক জায়গায় ঘুরে ঘুরে বড়ো ক্লান্ত, সবাই খালি বিছানায় যেতে বলে আমি সেইরকম ঘরে র মেয়ে বলুন” বলে কাঁদতে শুরু করে দিলো।
আমি একটু ইতস্তত হয়ে, গেলাম। বললাম ” আপনি একটু শান্ত হয়ে বসুন আমার ক্যামেরামান, আর পরিচালক বন্ধুকে আপনার ছবি গুলো দেখিয়ে নিয়ে, আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি কোনো। একটু শান্ত হয়ে বসুন”..
আকাশ ছবি গুলো ঠিক মতো দেখলো না। ” তুই চোখের জল দেখ আবার ভুলছিস, এরা অভিনেত্রী হতে এসেছে , এদের কথায় ভুললে আবার কষ্ট পাবি।”
আমি বললাম ” তাহলে না করে দেবো।”
রাজ বললো ” আমরা কি তোকে না করতে বলেছি।”
আমি অবাক হয়ে বললাম” তাহলে ”
আকাশ ইলিশ মাছের পেটিতে কামর দিয়ে বললো” বর্ষা কাল ইলিশ মাছের পেটি ভাজা খাবার সময়, এই সময় মিস করলে আর পাবি না। বসা ঘর থেকে শোবার ঘরে নিয়ে যা, চোখের জল মুছে দে একটু ভালো করে। তুই খুশি হ উনাকে একটু খুশি করে নে।”
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন