বর্তমান

কবিতা - পুনর্জন্মের দাগ

বর্তমান

তোমার শাড়ির নীল থেকে জেগে ওঠে এক গোপন গ্রহ,
যেখানে আমি— এক নির্বাসিত জ্যোতির্বিজ্ঞানী,
চোখে ট্র্যাজিক বেদনার দূরবীন আর হৃদয়ে শুধু
ভ্রমণরত ধ্রুবতারা।

তোমার হাসিতে লুকানো এক পুরনো বসন্তের গান,
যা শুনলেই হৃদয় থেমে গিয়ে চায় নতুন প্রাণ।
তোমার চোখ— দু’টি নীলজল ঘেরা নির্জন ঘাট,
যেখানে ডুবে গিয়ে জেগে ওঠে চুপচাপ প্রহরভাত।

তুমি হাঁটলে— সময় থামে, বাতাস কাঁপে ধীরে,
তোমার গালে লজ্জা নামে আকাশের নরম নীলে।
তুমি কেবল সুন্দরী নও, তুমি এক নীরব কবিতা,
যাকে ছুঁয়ে নয়— অনুভব করাই প্রেমের শ্রেষ্ঠ ভাষা।

তোমার শরীর নয়,
তুমি নিজেই এক রক্ত-জাগা মহাবিশ্ব,
যার প্রতিটি পিণ্ডে ঘূর্ণায়মান আমার পরম গোপনতা।
তোমার চোখের নিচে
একটি ভোর সেজে ওঠে প্রতিদিন,
যেখানে আমার সব অন্ধ প্রেম গিয়ে আত্মঘাতী হয়।

তুমি জানো না,
তোমার নাভিমূল থেকে যে ঘ্রাণ ওঠে,
তা আমার শরীরে এক অসমাপ্ত উত্থান রাখে—
মেঘের মতো, মাটির মতো, মৃত ঈশ্বরের মতো অপ্রকাশ্য।

তোমাকে দেখে আমি নীরব হয়ে উঠতে পারি না,
আমি ভেঙে পড়ি—
একটি জ্যোৎস্নায় পোড়া গির্জার নিচে
যেখানে প্রেম নয়,
মুক্তি খোঁজে অভিশপ্ত আত্মা।

আমি শুধু তোমায় চাই না,
আমি তোমার ভেতরে জন্ম নিতে চাই—
বারবার, একাধিকবার, পুনর্জন্মের সব নিয়ম ভেঙে।

তুমি কেবল প্রেমিকা নও—
তুমি আমার শরীরঘ্রাণে লেখা ধর্মচ্যুতি,
যার ভেতর নামলে প্রেম নয়—
আত্মা হয়ে ওঠে
দগ্ধ, অবাধ্য, পবিত্র এক পুনর্জন্মের দাগ।

২৭
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন