ইস্টিশানের কাছে

খালপাড়ের বড় রাস্তার ফুটপাতে

ওদের সংসার,

একফালি পলিথিনের ছাউনি

কাপড়ের পুটলি, রেলিঙে ঝোলানো থলে,

এনামেলের হাঁড়ি, কড়াই, থালা, বাটি, গেলাস,

হাতল ভাঙ্গা চায়ের কাপ, প্লাস্টিকের বালতি, ইত্যাদি

এর বেশি আর কিছু নেই

ওদের ফুটপাতের সংসারে এর বেশি নেই কিছুই

তবু আধময়লা ছেঁড়া গেঞ্জি গায়ে

ঘাড় গুঁজে বিড়ি বাঁধতে বাঁধতে

একমুখ হাসি হেসে বছর পঞ্চাশের

সেলিম মিঞা বললে,

“নেই বাদ দিয়ে আছে র হিসাব করুন কত্তা

দেখবেন সব হাওয়া

যত দুঃখ

সব হাওয়া”

গলির মোড়ে ভাতের হোটেলে বাসন ধুয়ে

সবে ফিরলে সালমা বিবি

তাকে দেখে পুরনো দিনের গপ্পো জুড়ে দিলে সেলিম

“তখন ইস্টিশানে রিকশা টানি

একদিন এক বাদল দিনে হঠাৎ দেখা ওর সঙ্গে

তখন কাজের মাসির কাজ করত পাঁচবাড়িতে

তারপর আর কি

তারপর রেল কলোনির লাইনধারের বস্তিতে ঘর বাঁধা

বছর ঘুরতে ফুটফুটে ছেলে

সে বড় হলে ইস্কুল ছেড়ে

কাজ শিখতে গেল নিতাই মিস্ত্রির গ্যারেজে

তারপর হেলপার থেকে মিস্ত্রি না হতেই

কোথায় যে গেল চলে

সে আর এলো না ফিরে

এখন ভাবি না ওসব

ভেবে কি হবে

সব আল্লার দয়া

তাঁর দয়াতে ছেলে আমাদের কোথাও না কোথাও আছে

ভালোই আছে”,

আমি অবাক হয়ে শুধোলাম,

ছেলে যে নেই এ কথাটা মনে হয় না

এ কথাটা একবারও মনে হয় না আপনার,

উত্তরে সেলিম ভাইয়ের হো হো করা হাসি,

“নেই বাদ দিয়ে আছে র হিসাব করুন কত্তা

দেখবেন সব হাওয়া

যত দুঃখ

সব হাওয়া”

পরে পড়বো
৫৯
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন