আমাদে বেলপাহাড়ি বাঁশপাহাড়ির জঙ্গলে
রাজাবাসার জঙ্গলের ধারে
তুমি কে আইলে হে
তুমি কি পুলিশ
তুমি পুলিশ লও ত তাহালে তুমি কী
কি দেখছ তুমি ?
ইটা চিনতে পারছ নাই
বাবুই ঘাস ,
বাবুই ঘাস এর দড়ি পাকাই খুদ কিনে খাই,
ভাত ?
ভাত পাব কুথা
কবে চাল ফুটেছে মনে নাই
নাম শুনেছ কুঁইলাপালের হাট
সে বহুত দুর
রাত থাকলে হাঁটলে পরে
পৌঁছাবে সেই বিহান ভোরে
তা কুঁইলাপালের হাটে
এক বোঝা কাঠ বিচলে
মারে কাটে তিরিশটি টাকা
সেও কি হয় সব দিন
যেদিন হয় সেদিন ভাঙা উনানে মাটির হাঁড়িতে
চাল ফুটে
চাল ফুটলে কচি শালপাতায়
গরম ভাতের ভাপ উঠে
চাল ফুটলে ডুলুং লদীর পাড়ে
চাঁদ উঠে
তখন যবুনার কথা মনে পড়ে
ওই যে গো আমাদে যবুনা
আহা ওইটুকুনি একটুন ছেলা
তুমরা বলবে মেইয়া
আমরা কিন্তুক মেইয়াকে বলি ছেলা
সেই ছেলার গতর গেছল না খাইতে পায়ে
বাবুই দড়ির পারা শুকায়ে
তাবাদে একদিন বলা নাই কওয়া নাই
সে ভুখা পেটে জ্বলে ওঠে চলে গেল জঙ্গলে ।
ঔয়
আখন উয়ার বাপকে শুধালে বলে ,
ছেলাটা গেছে দেশের কাজে
দেশ কাকে বলে গ ?
সেই দেশের আবার কাজটা কি বঠে ?
ইয়ার মাঝে সিদিন রাত তখন তিনপহর
আমাদে তালপাতার কুঁড়াঘরে আগুড়ের উধারে
কে যেমন ফিসফিস করে,
“তুই কাঁদিস কেনে মা
ও মা তুই কাঁদিস কেনে
জানিস নাই আমি লড়তে গেছি জঙ্গলে”
ঘুমের ঘোরে ধড়ফড় করে আগুড় খুলে দেখি
চারদিকে ফি ফুটছে জ্যোসটায়
কেউ নাই
কেউ কুথাও নাই
তখন দূরে ব হুতদূরে পাহাড়কোলের উধারে
জঙ্গলের উদিকে গোলাগুলির শব্দ ছুটে
সেই শব্দে হট্টিটি হট্টিটি করে ডানা ঝাপটাই
লাকাড়ে উঠে টিটি পাখের দল
ডর করে
আমার বড় ডর করে
ওইটুকুনি ছুটু একটুন ছেলা
তার আবার কিসের লড়াই হে
তুমরা বলতে পার
আমাদে যবুনা যে লড়তে গেছে
সেটা কিসের লড়াই ?
শুনেছিলম বহুতকাল আগে
চাল কাড়ের জঙ্গলে
জল জঙ্গল আর জমিনের হক লিয়ে
লড়তে গেছল বিরসা ভগবান
সে লড়াই কি এখনও শেষ হয় নাই
সে লড়াই কি শেষ হয় নাই এখনও।

মন্তব্য করতে ক্লিক করুন