১৯৯৮ সাল আমি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করি। একদিন মা মাদ্রাসা থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় নিয়ে আসলো। আমাদের পরিচিত এক ভাই আমাদের বাড়িতে আমার বড় বোনের সাথে বসে আছেন। মাকে জিজ্ঞেস করলাম তিনি এখানে কেন? মা বলল ও তোর দুলাভাই। বুঝলাম আমার বোনের বিয়ে হয়েছে তার সাথে। বাসায় ঘটা করে আয়োজন হচ্ছে। বাড়ি-টা আমাদের খুব নিচু ছিল, পাশে বিল।
বর্ষা হলেই বাড়িতে পানি উঠে। বাবা এক ঘরে মাটি ফেলে উঁচু করে বসার ব্যবস্থা করেছে। দুলাভাইয়ের বাড়ি থেকে কিছু লোক আসবে আমন্ত্রণে। তারা এলো। সেখানে দুলাভাইয়ের বাবা ছিল, তার ভাইয়েরা ছিল, আরো অনেকে! পরিচয় পর্ব শেষ হলে। খাবারদাবার শেষ করে, বোনকে নিয়ে আজ গাজীপুর যাবে। তার শ্বশুর বাড়িতে। সাথে আমাকে নিয়ে যাবে। ও.. বলতে ভুলে গিয়েছিলাম “আমরা দুই ভাই এক বোন” আমার বোন আর আমি তিন বছরের ছোট বড়, আমি মেজো ছেলে। এরপর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশনে সবাই মিলে আসলাম। জীবনে প্রথম রেলগাড়ি দেখা। তার কারণ জন্ম আমাদের ঢাকায়। গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর। ওখানের রেলের যোগাযোগ নেই। যাই হোক, রেলগাড়ি আসলো আমি তো খুব অবাক! বাহ.. এই নতুন জিনিসটা কি? বিয়াই বলল এটা হল রেল গাড়ি। চড়ে উঠলাম বোন আর আমি, জীবনের প্রথম রেল গাড়িতে চড়া। এই একটা নতুন অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। গাড়ি চলছে ভালোই লাগছে। ঝকঝক করে চলছে রেলগাড়ি। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছি গাছপালা, রেল লাইনের দুপাশে বাড়িঘর, আরো কত কি! নতুন বউকে নিয়ে কাওরাইদ স্টেশনে নামলো তারা। দুলাভাই বলল সামনেই বাড়ি, চলো রিক্সা করে যাই। দুলাভাই অনেক দিন পর বাড়িতে যাচ্ছে তাও আবার নতুন বউকে নিয়ে। বাড়ি গিয়ে পৌঁছালাম। সেখানে আবার অবাক করার বিষয়! বাড়ি দেখেছি ইটের বাড়ির মত! কিন্তু এখানে সব বাড়ি নাকি মাটির। আমি তো বিশ্বাস করতে পারলাম না কি করে এটা মাটির বাড়ি হয়? আমার সাথে ঠাট্টা করছেন নাতো? বাড়ির সকলে বলল না এটা মাটি বাড়ি। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি সেই নতুন অনুভূতি।
এখন পর্যন্ত গল্পটি পড়া হয়েছে ১৫৯ বার
যদি গল্পটি সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন