আবুল হাসান

শিরোনাম: অভাবিত

গল্পকার: Author Avatar আবুল হাসান

পূর্ণিমা ছিল গত রাতে। শেষ পূর্ণিমা। তাই অনেক রাত পর্যন্ত জেগে ছিলুম ক’জন। আমাদের সঙ্গীরা কেউ বিষণ্ণ ছিল না। একজন মাত্র ক্ষণিকের জন্য একটা পাখির গান শুনতে চেয়েছিল আমরা তাকে উপহাস কোরেছিলাম। পাখির গানের জন্য নয়, তার বলার ধরনের জন্য। রাস্তার পাশের স্বর্ণচাপা গাছটা দেখে আমাদের মধ্যে আর একজন কয়েকটি ফুল দেখিয়ে দিয়েছিল। আমি তাদের কারোর দিকে মনোনিবেশ কোরতে পারিনি। কারণ, পূর্ণিমা ছিল গত রাতে। কিন্তু সেই পূর্ণিমায় কেন ঘুম আসছিল না এই ভেবে আমি সন্ত্রস্ত ছিলুম।

একে একে এক সময় সবাই উঠে গিয়েছিল। শুধু যায়নি একজন। আমি অনুভব কোরতে পারছিলুম যে, একজন যায়নি এখনো। কিন্তু কে সে, তাকে না চিনতে পারায় আমি স্বর্ণচাপার দিকে তাকিয়ে দেখলুম একটি পাখি।

পূর্ণিমায় পাখির গান খুব মনোরম। এই কথা বলায় আমরা সেই বন্ধুটিকে উপহাস কোরলুম আবার। কিন্তু এক সময় এসব থেকে সবাই নিষ্ক্রান্ত হলো। আর আমি ঘরে ঢুকে জানালা খুলে দিলুম। এক ফোঁটা পূর্ণিমা এসে ঢুকেছে চাঁদের ভাজে। আমার ভয়। আমি সারারাত ঘুমাতে পারবো না। কিন্তু শ্রান্তি সব সমস্যাকে হরণ করে। আমি এক সময় ঘুমিয়ে গেলাম।

পরদিন যখোন উঠি, তখোন একটি পাখির শব্দে আমার চেতনা হলো, আমি কালকে একজনকে উপহাস কোরেছিলাম। কিন্তু সে আমাকে কিছু বলেনি। সে একটি গান গেয়েছিল। যেটা আমার প্রিয়। সেটা আমি একা হলেই গাইতে চেষ্টা করি। ধীরে ধীরে আমার চারিদিকে মানুষের কষ্ঠ প্রসারিত হলো। জীবন ক্রমাগত দীর্ঘতর। কে একজন রাস্তা দিয়ে যায় আর হাসে। একজনের হাতে সাংসারিক বন্ধন। ছাতা মাথায় কোরে একজন চলেছে কাজে।

আমার ঘরের চারিদিকে রোদ উঠেছে। কল ঘরে পানির শব্দ। দক্ষিণের জানালায় তখোন একটি তরুণীকে দেখা গেল। তার কোমরে নীল রং-এর ব্যাগ ঝোলানো। সাদা শাড়ী পরণে। ইস্কুল-মিস্ট্রেসের মতো। কিংবা হতে পারে, পাশের কোনো ইস্কুলের শিক্ষকতা করে। নতুন পাশ কোরে বেরিয়েছে। হয়তো বা মিস্ট্রেসই। কিন্তু থাক। মেয়েটি যাই হোক, আমার কোনো কিছু যায় আসে না। আজকাল কে কার খবর রাখে। আগ্রহ করে এত প্রবল! দিনকালের চিহ্ন আর জীবনের ক্ষত পুষছি চামড়ার তলায়। আমি নিজেকে নামিয়ে আনলুম আপন দরকারে। হকার কাগজ দিয়ে গেছে। একটি সংবাদে চক্ষু স্থির। ছবিটা ভীষণ নির্মম। আত্মহত্যার ছবি; না দুর্ঘটনার বুঝতে পারছিলাম না। ভালো করে পড়ে দেখি খুন। কে বা কারা তাকে খুন কোরে ফেলে চলে গিয়েছে। মুখের বা পাশে ছুরির গভীর ক্ষত। গলায় আঘাতের চিহ্ন। চোখের একদিকে মণি কাটা। ভীষণ নির্মম ছবিটা। তাকাতে পারছিলাম না। আর কোনো সংবাদ পাঠে মন তাই সায় দিলনা। তাড়াতাড়ি বাথরুমে গেলাম। কলের পানি পড়ছে। পানির অজস্র ধারায় এক মুহূর্তে ভুলতে পারলুম ব্যাপারটা। কিন্তু ঘরে ঢুকেই আবার চোখে পড়লো। তখোন আমি গত রাতের পূর্ণিমাকে কাছে টানতে চাইলে একটি কাক এসে সামনের একটি দাঁড়িয়ে থাকা গাছের ছায়া ঠুকরে দিল।

বুঝতে পারলুম এ মুহূর্তে কিছু খাওয়া দরকার। খিদে পেয়েছে। কিন্তু রুটি কাটার ছুরি নিয়ে রুটি কাটতে গেছি। কোনোদিন এরকম হয় না। বরং এটা হওয়া অসম্ভবও। আমি ভাবতে পারলাম না। আমার হাতের আঙ্গুলে তখন রক্ত। অনেকখানি কেটে গেছে। ঘরে ডেটল ছিল। তাই বেঁচে গেলুম।

কিন্তু ভয় আমাকে এতক্ষণে পেয়ে বসেছে। গতরাত থেকে ভয়। পূর্ণিমার গা থেকে যেনো একটি ভয়ের সূতো ক্রমাগত বেরিয়ে এসে আমাকে গতরাতেই বেঁধে ফেলেছে। এখন আমি কোথায় যাই। মনে হলো ঘরে আর থাকা উচিত নয়। কারণ, এ ঘরেই যতসব ঘটনা ঘটে গেছে কাল থেকে। আমি অগত্য বেরিয়ে পড়লুম। রাস্তায় কারো সাথে দেখা হলো না।

রাস্তায় অনেক সময় অনেকের সাথে দেখা হয়, কিন্তু আজ কাউকে দেখতে না পেয়ে নিজেকে অন্য রকম মনে হলো। একটি বাস আসছে। সাইকেলের উপর একটি কিশোর। কিন্তু কোথাও যাওয়ার তাড়া নেই আমার। নির্দিষ্ট গন্তব্য নেই।

ভাবলাম, অনেক দিন অনেক জায়গায় যাই না। প্রিয় জায়গাগুলি ধীরে ধীরে বিস্মৃত হতে চলেছে। আমি একটি রিক্সা ডাকলাম।

ক্রমাগত আমার চোখের সামনে তখোন কয়েকটি রেস্তোরাঁ ভেসে উঠলো। আর ক্রমাগত আমি তার নাম আউড়ে গেলাম। এক একটি রেস্তোরাঁর সাথে এক একটি স্মৃতি বাধা। চিন্তা করলুম, আমি কোনোটাই আজ বাদ রাখবো না। হাতে অনেক সময়। কোনো কাজ নেই। সুতরাং একম একটা পরিদর্শন মন্দ নয়।

এক রেস্তোরাঁয় ঢুকে একজনের সাথে দেখা হলো। তিনি আমাকে চিনতে পারলেন। আমি লম্বা আয়নায় মুখের কুঞ্চন দেখছিলাম। আমি স্মৃতির কাছাকাছি এসে যাওয়ার আর একটি রেস্তোরাঁর অভিমুখে রওয়ানা হলাম। রাস্তায় অনেক লোকজন। একটি রিক্সায় দু’টি যুবতী যাচ্ছে। নিটোল ভরা স্বাস্থ্য। সুখী আঙ্গুলের উপর রিক্সার হুডের ছায়া। ভিখারীর দল সেই রিক্সায় গা ঘেঁষে। তাদের হাতে পয়সার থালা। এক জায়গায় দেখলুম রুমাল বিক্রেতা। সারি সারি সাদা রঙিন রুমাল উড়ছে সূতোয় বাঁধা পায়রার মতো। একজন দর করছিলেন। কিন্তু অনেক দাম। ইতিমধ্যে যে রেস্তোরাঁয় এসে ঢুকলাম এটা আমার এক সময়ের প্রিয়। এগিয়ে গিয়ে সেই চেনা টেবিলায় বসে দেখি, একদিন ব্লু পেন্সিলে একটি প্রেমিকের নাম যেভাবে লিখে রেখে গিয়েছিলাম, সে ঠিক তেমন আছে। মুছে যায়নি। নিশ্চিত একটি স্মৃতি কত অকাতরে এখানে গা উঁচু কোরে বেঁচে আছে, আর আমি, আমার মন হলো তখোন, অথচ আমি কত কিছুকে মুছে নিয়েছি। একটি লোকের দীর্ঘশ্বাস তখোন আমার গা ছুঁয়ে গেল। আমি ডাকলুম? বেয়ারা, বেয়ারা! সেই চিকন বিষণ্ণ মুখের চেহারাটা নেই। আর একজন মোটাসোটা এসে টেবিলের কাছে ঘেঁষে থাকলো। আমি জানতে চেয়েছিলাম একটা কথা। কিন্তু পরিবর্তে এক কাপ চায়ের অর্ডার দিতে হলো।

দেয়ালো কারো ছবি নেই এই রেস্তোরাঁয়; একমাত্র ইরানের রাজা আর রাণী ছাড়া। দূর দেশের ইরান। আমার কেমন মরুভূমির কথা মনে পড়ে গেল। হয়তো এইজন্য যে, আমি এসেছিলাম স্মৃতি সংগ্রহ কোরতে, কিন্তু তা হলো না।

তবে কি মানুষের একবারই স্মৃতি সংগৃহীত হয়? যখোন সে অচেতন থাকে? কিন্তু আমার ভিতর তো গতরাত থেকেই এক রকম অস্থির সচেতনতা। তাই আজ থেকে থেকে সর্বনাশের চিহ্ন দেখছি। রাস্তায় যখোন নামলাম তখন সামনের কাউন্টারে লোক নেই। ওদিকে একটি চায়ের দোকানে মাত্র যুদ্ধের বাজনা বাজছে। পানের দোকানে সিগ্রেট ফুঁকতে ফুঁকতে একদল যুবক এসে দাঁড়ালো। আবার যেপথ দিয়ে এসেছিলাম, ঠিক সেপথে যেতে এই রুমাল বিক্রেতাকে চোখে পড়লো। চারদিকে পুরনো দালান, ব্যস্ত সময়, রাস্তায় কেবল মানুষের প্রবাহ। ছাতার দোকানে কয়েকজন বসে ছাতা কিনছে। আমি অনুমান কোরলাম আষাঢ় মাস আগত। এক সময় রাস্তা কিছুটা ফাঁকা হলো। মসজিদে আজান শোনা গেল। এক সময় সিনেমার শো ভাঙ্গলো। ঘূর্ণি হাওয়ার মতো পাক খেতে খেতে মানুষের শব্দ শূন্যে মিলিয়ে গেল। আমি কোথাও না গিয়ে ঠায় সেইখানে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু খুব বেশীক্ষণ নয়। আবার কেউ যেনো গা চাড়া দিয়ে উঠলো। সকালের খুনের ব্যাপারটা মনের ভিতর গাঁথা। আবার তারপরে হাতের কাটাটাও মনে এলো। রেস্তোরাঁ ঘুরে স্মৃতিতে নিষ্ক্রান্ত হয়ে তবু কিছুতেই কিছু হলো না। আমি দ্রুত পা চালিয়ে দিতে একজনের গায়ে ধাক্কা লাগলো। তিনি কিছু বললেন না। খুব খারাপ লাগলো বরং লোকটার কিছু গালাগাল দেয়া উচিত ছিল। কিন্তু… পরিবর্তে আমি তাকে মনে মনে গালি দিতে দিতে রাস্তা পেরুই আর দেখি লোকটা কাছে আসে কিনা। কিন্তু সে আসে না। দূরে কোথায় যেন সরে যায়। গতকাল রাজীব বলেছিলেন, আমি ঐ দোকানে থাকবে। কিন্তু রাজীবের সাথে সে দোকানে দেখা করায় লাভ নেই। অগত্য কি করি। একটি পাঠাগার রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকে। সেখানে গিয়ে সেই মেয়েটার সাথে দেখা হলো। রোজ রাত পর্যন্ত কী এতসব পড়ে। অন্যদিন হলে খুব বিরক্তি লাগতো। আর শরীর খুব খারাপ। মুখের দাঁতের একটা নেই। চোখের কোণায় কালি লেগে থাকা একটা ভাব। মোটের উপর মেয়েটির চেহারা কুৎসিত। আজ তাকে কেন যেন কুৎসিত বলা গেল না, এক এক সময় সমস্ত কুৎসিত এত সুন্দর হয়ে উঠে কেন বুঝা যায় না। তবু এরকম হয়। মেয়েটিকে আজ পাড়াগাঁর লিচু গাছের উপরের নরোম কোমল মেঘলা-সবুজের মতো পবিত্র এবং সুন্দর মনে হলো। অনেকক্ষণ তাকিয়েও মেয়েটা যখোন আপত্তি করলো না তখোন আবার খারাপ লাগলো। অগত্য উঠতে হলো। ভাবলাম প্রতিদিন রাতের বেলায় যেখানে আমি সেখানে এসে অবশেষে মুক্তি।

কিন্তু এসে দেখি টেবিল ফাঁকা। কোনো রাজনীতিপ্রিয় কয়েকজন প্রৌঢ় ভদ্রলোক বসে আছেন। রাজনীতি নিয়ে কোনো তর্কের আসর নেই। ভালো করে কান দিয়ে শুনলাম কিন্তু কোনো কিছু ভালো মনে হলো না। এক সময় ফাঁকা চেয়ারগুলিও একে একে পূর্ণ হয়ে গেল। আর মোমবাতির মতো ঘনিষ্ঠ সব মানুষে আলোকিত হয়ে গেল আমাদের টেবিল।

সঞ্জীব বললো, পুর্ণিমায় কাল ঘুমোতে পারিনি। রাহাত অন্য কথায় কান দিয়ে শুধালেন–ও ছবিটা ভালো হয়নি। এদেশের সিনেমা পরিচালকগুলো একেবার রদ্দি। মাথায় যদি কিছু থাকতো। আমি কোনো কথায় সায় না দিয়ে অন্য টেবিলে একটু নির্জনতা খুঁজলাম। কিন্তু আমরা আসলে তলে তলে ব্যস্ত, তাই কোথাও নির্জনতা খোজা বাতুলতা। ক্রমে ক্রমে আবার টেবিল ঘন হয়ে উঠলো। আলাপ সালাপে সময় যায় আর আমার আজকের দিন চূর্ণ চূর্ণ কোরে পড়তে থাকে। রুমাল উড়ে হাওয়ায়। দু’একটি তরুণী খিল কিল কোরে হেসে উঠে। গতরাতের পূর্ণিমায় একটি পাখির শীষ ভালো লাগতে গিয়ে কেন আবার ভালো লাগেনি মনে পড়ে। পাশের বাসার সেই বুড়ো ভদ্দরলোক কাল তার পোষা কুরুরটাকে তাড়িয়ে দিলেন মনে পড়ছে। একজন ভিখারী গতরাত্রে তার বাসায় এসেছিল। ভিখারী তো নয়, একটি পূর্ণ বয়স্কা। ভিখারিণী। কি জন্য? কি জন্য?

–এই যে, কথা বলছে না যে? হঠাৎ চোখে তাকাই। দেখি রাজীব এসেছেন তার সঙ্গে আর একজন ভদ্রলোক।

–এনাকে চেনো না? ইনি জনাব…তিনি পরিচয় করিয়ে দিলেন। আজকেই যেনো কোনো এক পত্রিকায় ভদ্রলোকের তো একটি লেখা দেখেছিলাম? একবার ভাবি, বলি। কিন্তু তাঁর দেহের পোশাক বহু মূল্যবান। চুল শ্যাম্পু করা। শরীর থেকে সুগন্ধ বেরুচ্ছিল। পোশাকের ব্যবধানে কথার আর সেতু খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অগত্য তিনিই বোলতে শুরু কোরলেন, অনেকদিন রুমাল কিনিনি, আজ একটি কিনলুম। ভীষণ দাম হয়ে গেছে রুমালের। ঐ কাপড়ের ঐ সেই ছোট ফিনফিনে মশারী-মার্কা কাপড়ের রুমালগুলো আর পাওয়া যায় না। রাজীব বললেন, আজ কম হলেও ডজন খানেক দোকানে ঢুকলাম। একটা ডিয়ার পেন্সিল কেননা জানি কেনার সখ হলো। কিন্তু সেই রং এর আর পেলাম না বলে কেনা হলো না।

–কোন রং-এর? আমি না জিজ্ঞেস করে পারলাম না। কলাপাতা রং-এর

কলাপাতা রং-এর পেন্সিল কিনেছি ছোটবেলায়। হঠাৎ কেমন নস্টালজিয়া বোধ হলো, সারা মনে একটা কম্পন। কিন্তু বেমালুম সব ভুলে যেতে চাইলাম। আর তখোন কথা শুনলাম–রাজীব বলছে, আপনি কাল দেখা করবেন কিন্তু।

রাজীব কথাগুলো বোলতেই ভদ্দরলোক উঠে দাঁড়ালেন। তিনি যাওয়ার আগে হঠাৎ কেন জানি আবার একটু না বসে পারলেন না। কথা চললো। ঝিনুকের খোল দিয়ে বানানো একটা অ্যাশট্রের দাম কত জানতে চাইলেন তিনি। আমার দরটা জানা ছিল, বোলে দিলাম। তার কথা বলার ভঙ্গিতে একটা অপরিস্ফুট আচ্ছন্নতা। আমি তাকে জিজ্ঞেস কোরলাম আপনি কি খুব ক্লান্ত?-না? গলার কণ্ঠস্বর তার যেনো আটকে গেল। তিনি চলে যেতে আমরা আবার যে যার কথায় ফিরে এলাম।

রাজীবকে বোলোম, কাল একবার আমার ওখানে এমন সময় কি একটা শব্দ, শোরগোল শোনা গেল। এ্যাকসিডেন্ট’ শব্দটা কানে এলো। কে একজন চিৎকার করছে ধরো’ ‘ধরো। আমরা সন্ত্রস্ত। বিশেষতঃ আমি। কাল রাত থেকে ঘরের ভিতর বন্দী আমি। সকাল থেকে ভালো যাচ্ছে না। মৃত্যু না অপরাধবোধ আমাকে ক্রমাগত নীরব করে দিচ্ছে বুঝতে পারলাম না।

আমি চেয়ারটায় গা হেলান দিয়ে বসে থাকলাম। পরক্ষণে রাজীব এলেন। আরো কয়েকজন। সঞ্জীবের হাত রক্তে ছাপা। কি ব্যাপার? মুহূর্তেই একটি রক্তাক্ত শব চোখের সামনে এসে পড়লো} একি! শবটা তো সেই ভদ্দরলোকের! অথচ উনি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। কেবল কণ্ঠস্বরে বিষণতা ছিল। কিন্তু বাসনা ছিল প্রবল। উনি অ্যাশট্রের দাম জিজ্ঞেস করায় আমি দামটা বোলে দিয়েছিলাম। ঐ তার শেষ প্রশ্ন। আর কোনো কথা বলেননি। একজন বাললো, উনি ইচ্ছে কোরে বাসের পাদানীতে পা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। আর একজন বললো, বাস থামাতে বলা হয়েছিল।

এমন আকস্মিক দুর্ঘটনায় আমি আশ্চর্যান্বিত হলাম। ভদ্রলোকের বাসনার মধ্যে কোনো বিষণ্ণতা ছিল না। ছিল তার গলায় শুধু দুঃখের অধিকার। তবু ভদ্রলোক যেন আত্মহত্যা কোরলেন? কেন আত্মহত্যা কোরলেন?

এখন পর্যন্ত গল্পটি পড়া হয়েছে ৮৭ বার
যদি গল্পটি সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন