সকালের ডাকে চিঠিটা এসেছিল। অফিসে বেরুবার সময় লেটার বক্সের কাঁচে সেটার অবস্থান দেখে বিপ্লব চেঁচিয়ে বলে গিয়েছিল, ‘লেটার বক্সে চিঠি আছে।’
এই বাড়িতে চিঠি মানে হল ইলেকট্রিক বা টেলিফোন কোম্পানির বিল অথবা ইনসুরেন্স কোম্পানির রিমাইন্ডার। হাতের কাজ শেষ করে চিঠি দেখতে বসেছিল অঞ্জনা। এখন অফুরন্ত সময়। বেলা একটা নাগাদ ধীরে সুস্থে স্নান সেরে ভাত খেয়ে আবার সিরিয়াল দেখা। দুপুরে ঘুমায় শরীরে চর্বি জমার ভয়ে। বিয়ে হয়েছে বছর পাঁচেক, বাচ্চা হয়নি। প্রথমদিকে ওষুধ খেতো। অঞ্জনা। সেটা বছর দেড়েক। তারপর যখন বাচ্চার সখ হল তখন সেটা বন্ধ। কিন্তু তবু কিছুই হচ্ছে না। শেষপর্যন্ত মাসখানেক হল পরীক্ষা করিয়েছে বিপ্লব ভালো ডাক্তারণীকে দিয়ে। তিনি বলেছেন অঞ্জনার কোনও ক্রটি নেই। এবার বিপ্লবকে করাতে হবে।
স্বামীর মুখ দেখে বুঝতে পেরেছিল অঞ্জনা খুব অস্বস্তিতে আছে। অফিসে কাজের চাপ বেড়ে গেছে বলে আপাতত এড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে ভেবেছে অঞ্জনা। যদি দেখা যায় বিপ্লবেরই ক্রটি তাহলে কী হবে? ফোন করেছিল সে ডাক্তারণীকে। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন তাহলেও মা হতে পারবে। অঞ্জনা। নলজাত শিশুদের তো ভালোভাবেই গ্রহণ করেছে সমাজ।
স্নান সেরে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসার পর মনে পড়ল। চাবি বের করে দরজা খুলে রাস্তাটা দেখল অঞ্জনা। সুনসান রাস্তা। একেই পাড়াটা নির্জন, দুপুরের দিকে নির্জনতা আরও বেড়ে যায়। তালা খুলে মাথা বাড়াল অঞ্জনা। ইলেকট্রিকের বিল এসেছে সেটা বের করতেই খামটাকে। দেখতে পেল। খামটা তুলতেই নিজের নাম ঠিকানা লেখা দেখে অবাক হয়ে গেল। তাড়াতাড়ি বাক্সে চাবি দিয়ে দরজা বন্ধ করে ভেতরে ঢুকে সে খামটাকে উলটে-পালটে দেখল। হাতের লেখা তার অচেনা। ইলেকট্রিকের বিল বিপ্লবের টেবিলে রেখে চেয়ারে বসে সন্তর্পণে খামের মুখ খুলে ভাঁজ করা কাগজটা বের করল সে।
‘অনু শেষপর্যন্ত তোমার ঠিকানা পেলাম। এ যেন বছরের-পর-বছর গভীর জলের নিচে দমবন্ধ করে পড়ে থাকার পর হুস করে ওপরে উঠে বুক ভরে বাতাস নেওয়া। অনু, তুমি এখন কেমন আছ? তোমার ওই চোখ দুটো আমি আজও ভুলতে পারি না। তোমাকে ভালোবেসে যাব শেষ শ্বাস ফেলা পর্যন্ত। স।’
শরীর ঝিমঝিম করে উঠল। কে এই স? কে তাকে অনু বলে ডাকত? নিশ্চয়ই বিয়ের আগে ওর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। বারাকপুরের নোনা চন্দনপুরের কত ছেলেই তো যেচে তার সঙ্গে কথা বলত। কেউ-কেউ প্রেমের প্রস্তাবও দিয়েছিল। মনে করে তিনজনের মুখ দেখল অঞ্জনা। নামগুলো হুট করে মনে এল। পরিমল, তপন, গৌতম। কারও নামের প্রথম অক্ষর স নয়। তাহলে এই স কে?
খেতে বসেও অস্বস্তি গেল না। তবে কি বারাকপুরের কেউ নয়। কলেজে পড়ায় সময় বাবা-মায়ের সঙ্গে দাদার ওখানে বেড়াতে গিয়ে দিন-কুড়ি থেকেছিল সে। দিল্লিতে। কিন্তু সেখানে তো কেউ তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়নি। একটা ছেলে, তখনই চাকরি করে, নাম সন্তোষ। দূর সন্তোষ কী করে হবে! সন্তোষকে নিয়ে সে দিদির সঙ্গে হাসাহাসি করত। মায়ের সঙ্গে থাকত পাশের। বাড়িতে। বউদি তাকে জিজ্ঞাসা করত, ‘কী ব্যাপার? কবে বিয়ের নেমন্তন্ন খাব?’
একগাল হেসে সন্তোষ জবাব দিত, ‘মা তো মেয়ে দেখছে, পছন্দ হলেই–।’
‘কার পছন্দ?আপনার না আপনার মায়ের?’
‘কী যে বলেন? আমি মেয়েদের কী জানি যে পছন্দ করব! মা যাকে বলবেন। তবে কলকাতার মেয়ে নয়। মা বলেছেন কলকাতার মেয়েদের আমি ম্যানেজ করতে পারব না।’
‘সেকি? কেন এমন ধারণা হল?’
‘শুনেছি কলকাতার মেয়েরা খুব দেমাকি হয়।’
সন্তোষ চলে যেতে বউদির কী হাসি। থামতেই চায় না। অঞ্জনাও না হেসে পারেনি। তবে সেই সময় একটু রাগও হয়েছিল। অযথা কলকাতার মেয়েদের বদনাম করছে লোকটা।
না…। কে তার জন্যে এত ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে আছে? বিপ্লব শুনলে চিঠিটা দেখতে চাইবে। আচ্ছা হাতে সময় থাকলে লেটারবক্স খুলে খামটা বের করে বিপ্লব বলত, ‘তোমার চিঠি?’ খামের মুখে ছিঁড়ে নিজে চিঠিটা বের করত না কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকত শোনার জন্যে, কে চিঠি লিখেছে। তারপর প্রশ্নের-পর-প্রশ্নে জেরবার করে তুলত তাকে।
চিঠিটাকে ছিঁড়তে গিয়ে ছিঁড়ল না অঞ্জনা, ঠিকানা দূরের কথা পুরো নামই যে চিঠিতে নেই –সেটা রাখার কোনও যুক্তি নেই। তবু রাখল সে। আলমারি খুলে সবচেয়ে নিচের শাড়ির ভাঁজ। এই আলমারিতে হাত দেয় না বিপ্লব।
সন্ধের পর বিপ্লব বাড়ি ফিরল চাইনিজ খাবারের প্যাকেট নিয়ে। মেজাজ ভালো থাকলে ও মাঝে মাঝে খাবার আনে। হাত-মুখ ধুয়ে পোশাক পালটে বা খেতে খেতে অফিসে যা-যা হয়েছে সব বলে গেল। ওর এক সহকর্মিনী, যিনি বিবাহিতা এবং সন্তানের মা, আর একজন সহকর্মীর প্রেমে পড়েছেন, ব্যাপারটা জানতে পেরেছেন সহকর্মীর স্ত্রী। এ নিয়ে জোর নাটক চলছে।
শুনতে-শুনতে অঞ্জনা ফস করে বলে ফেলল, আচ্ছা কোনও মেয়ে যদি এসে দাবি করে যে সে তোমাকে ভালোবাসে তাহলে কী হবে?
‘দূর! এরকম দাবি করার সুযোগই দিইনি কাউকে।’
‘আহা, তুমি দাওনি, সে হয়তো মনে-মনে ভালোবেসেছে তোমাকে।’
বউ-এর মুখের দিকে তাকাল বিপ্লব, ‘দুপুরের বাংলা সিরিয়াল?’
‘ধরে নাও তাই। তুমি জানতে না কেউ তোমাকে ভালোবাসে। তারপর অনেক দিন কেটে গেছে। তুমি যখন নিজেকে খুব একা ভাবছ তখন সেই মেয়েটির কথা জানতে পারলে সে এখনও। তোমাকে ভালোবাসে। তুমি কী করবে?’
‘কতদিন পরে জানা গেল?’
‘ধরো, কুড়ি বছর!’
‘তাহলে তো সে বুড়ি হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া আমাকে কেউ ভালোবাসে শুনলেই আমার মনে তার জন্য প্রেম আসবে কেন?যত্তসব?’
আলোচনা শেষ করে দিয়েছিল বিপ্লব। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে সংসার গুছিয়ে অঞ্জনা যখন বিছানায় এল তখন বিপ্লবের চোখ বন্ধ। খুব রাগ হয়ে গেল অঞ্জনার। স্বামীর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে সক্রিয় করতে চাইল সে। বিপ্লব বিরক্ত হল। কিন্তু শেষপর্যন্ত রোবটের মতো আচরণ করে গেল। মিনিট খানেকের মধ্যেই সে তৃপ্ত হয়ে যেন নিষ্কৃতি পেল। পাশ ফিরে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। অঞ্জনার শরীরে তখন আগুন, যা নেভানোর ক্ষমতা বিপ্লবের নেই। কিংবা শরীরে-শরীরে যে আগুন জ্বলে তা নিভিয়ে দেওয়ার কথা পৃথিবীর অনেক পুরুষের মতো বিপ্লবও জানে না। চুপচাপ থাকল অঞ্জনা।
সাতদিন বাদে দ্বিতীয় চিঠিটা এল। এল বিকেলের ডাকে যখন বিপ্লব আসে। একই হাতের লেখা, সম্বোধনও একই। ‘অনু, তুমি নিশ্চয়ই আবার আমার চিঠি পেয়েছ। ধরে নিচ্ছি সেই চিঠি তোমার স্বামী পড়েননি, তোমার বাড়িতে কি ফোন নেই?নাম্বারটা পেলে আর চিঠি লিখতে হত না। চোখ বন্ধ করলেই তোমাকে দেখতে পাই। তোমার তাকানোর ভঙ্গিমা, এত দিন পরেও মনে আছে, অন্যসব মেয়েদের থেকে আলাদা। এখনও সেভাবেই তাকাও তো! তোমার স।’
আজ খুব রাগ হল। লোকটা পেয়েছে কী? মেঘের আড়ালে থেকে তীর ছুঁড়ে মজা দেখবে? বিপ্লব বাড়িতে ফেরামাত্র সে প্রথম পাওয়া চিঠিটা বের করে সামনে রাখল।
বিপ্লব অবাক হল, ‘কী?’
‘পড়ে দ্যাখো।’
চোখ বুলিয়ে বিপ্লব হতভম্ব, ‘কে এই স?’
‘জানি না। এরকম কোনও লোকের সঙ্গে আমার কখনও আলাপ হয়নি।’
‘তাহলে তোমাকে এই চিঠি লিখল কেন?’
‘এর উত্তর আমি কি করে দেব? আমিই তো ভেবে পাচ্ছি না।’
‘লোকটা ফোন করেছিল?’
‘না।’
‘বিয়ের আগে তুমি কি কারও সঙ্গে–?’
‘না। স আদ্যক্ষরের কাউকে আমি চিনি না।’
‘মহা মুশকিল। একেবারে উটকো লোক তোমাকে প্রেমপত্র পাঠাল!’
‘তার মানে তুমি কি ভাবছ আমি ওই লোকটাকে চিনি, চেপে যাচ্ছি এখন, আচ্ছা, ও যদি আমার প্রেমিক হত তাহলে চিঠিটা তোমাকে দেখাতাম?’
‘তা ঠিক, দ্যাখো, ওয়েট করো, আর চিঠি লেখে কিনা–।’
যে চিঠিটা আজ এসেছে সেটার কথা বলল না অঞ্জনা। মুখ ঘুরিয়ে বলল, ‘একটা বাচ্চা হয়ে গেলে বেঁচে যেতাম।’
‘অ্যাঁ? ও হ্যাঁ। চলো, কালই ডাক্তারের কাছে যাই।’
‘তোমার ব্যাপার আমি যাব কেন?’
‘না। আমার একা যেতে অস্বস্তি হচ্ছে তুমিও চলো।’
পরীক্ষা শেষ হলে ডাক্তার রায় দিলেন বিপ্লবের পক্ষে কখনওই বাবা হওয়া সম্ভব নয়। সান্ত্বনা দেওয়ার ভঙ্গিতে বললেন, ‘এখন এসব নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না। আপনার স্ত্রী ইচ্ছা করলেই টেস্টটিউব বেবির মা হতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনি বাবা হতে পারবেন।’
গুম হয়ে গেল বিপ্লব। ওর দিকে তাকিয়ে যাবতীয় হতাশা, আক্ষেপ একটু-একটু করে গিলে ফেলল অঞ্জনা। বিপ্লবকে শুনিয়ে বলল, ‘বাঁচা গেল। চারপাশ তো দেখতে পাচ্ছি, কষ্ট করে বড় করতাম, তারপর স্বার্থপরের মতো চলে যেত। তার চেয়ে এই ভালো।’
কয়েকদিন বিপ্লব একটু বেশিরকমের চুপচাপ ছিল। তার সহকর্মী বন্ধু সব শুনে পরামর্শ দিল, ‘দ্যাখ ভাই, বউ বলেছে ছেলেটা আমার তাই জানছি আমি। একটার বেশি তো সন্তান নেই, তাই ওর ওপর বিশ্বাস রাখা ছাড়া উপায় নেই। তুই চিন্তা করছিস কেন? মহাভারতের দিকে তাকা। পাঁচ পাণ্ডবের বাবা কুন্তীর স্বামী নয়। রাম-লক্ষণদের বাবা দশরথ নয়। বংশ রক্ষার জন্য তখন স্ত্রীর সন্তানকে নিজের সন্তান বলে মেনে নিত পুরুষরা। এখন তো আমরা চাই না অন্য পুরুষের কাছে স্ত্রীকে পাঠাতে। কিন্তু তার বদলে টেস্টটিউব বেবি পাওয়ার সুযোগ হয়েছে। একেবারে। বিজ্ঞানসম্মত ব্যাপার। রাজি হয়ে যা।’ বিপ্লব মৃদু প্রতিবাদ করেছিল, কিন্তু কার না কার–
‘সাপের বিষ থেকে ওষুধ তৈরি হয়। সেই ওষুধ নেওয়ার সময় আমরা কি জানতে চাই কোন সাপের বিষ থেকে তৈরি হয়েছে? এও তেমনি। তোরা কেউ জানতেই পারবি না কি থেকে কী হল!’ বন্ধু উপদেশ দিল।
অঞ্জনারও চোখ মুখে হতাশার ছায়া। বিপ্লবের কথা শুনে বলে উঠল, ‘যা। অসম্ভব।’
‘কেন অসম্ভব?’ বিপ্লব মরিয়া হল। ‘চিনি না জানি না, কী যে বলো! তা ছাড়া বাচ্চা বড় হলে তাকে কী জবাব দেব?’
‘জবাব দেওয়ার প্রয়োজনই হবে না কারণ সে জানতে পারবে না। তা ছাড়া চেনাজানা লোকের তো দরকার নেই। তার পরিচয় ডাক্তার তোমাকে দেবেনই না।’
একটু-একটু করে নিমরাজি হল অঞ্জনা। বিপ্লব তাকে নিয়ে দুবার ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল। তিনি ওদের একটু অপেক্ষা করতে বললেন।
তৃতীয় চিঠিটা এল এই সময়, ‘অনু কাল তোমাকে দেখলাম। একঝলক। তুমি জানলায় দাঁড়িয়েছিলে। চোখ পড়তেই সরে গেলে। তুমি কি আমাকে দেখেছিলে?কী জানি? দেখলাম তুমি সেই আগের মতনই আছ। বড় ইচ্ছে করছে, একদিন তোমার দরজায় গিয়ে দাঁড়াতে। দাঁড়ালে দরজা কি খুলবে না অনু? তোমার ‘স।’
নেকু! শব্দটা আপনা থেকেই মনে উঠল। পুরুষ মানুষই এরকম ন্যাকামি করতে পারে। যে চিনতে পারছেনা তাকে প্রেমপত্র দিচ্ছে! ছ্যা। তবে চিঠির কথা বলল না বিপ্লবকে, শেষপর্যন্ত ডাক্তার খবর দিয়েছেন, আগামী পরশু সকালে যেতে হবে নার্সিংহোমে, সন্ধেবেলায় বাড়ি এসে বিপ্লব জানাল, নার্সিংহোম থেকে ফিরে এসে ঠিক কী ভাবে চলতে হবে সব তিনি অঞ্জনাকে। বুঝিয়ে দেবেন। রাত্রে পাশে শুয়ে অঞ্জনা বুঝতে পারছিল বিপ্লব বেশ নার্ভাস। সে চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ল।
পরদিন বিপ্লব অফিসে বেরিয়ে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক বাদে অঞ্জনা যখন টিভির সামনে তখন বেল বাজল। সেলস গালগুলো এসময় প্রায়ই বিরক্ত করে, দ্বিতীয়বার বেল শোনার পর ব্যাজার মুখে উঠে দরজা খুলল অঞ্জনা। সঙ্গে-সঙ্গে তিনজন ছেলে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ল ভেতরে। অঞ্জনা চিৎকার করল: একী? কে আপনারা? কেন ঢুকছেন?’
‘চিৎকার করবেন না। আপনার কোনও ক্ষতি করব না।’ একজন বলল।
‘কে আপনারা?’
‘চিনবেন না। আমাদের বউদি পাঠিয়েছেন।’
‘বউদি?’ অবাক হল অঞ্জনা।
‘যার স্বামী আপনাকে চিঠি লেখে। সেই চিঠিগুলো চাই। বুঝতেই পারছেন আমরা বেকার ছেলে। তিনজনের তিন হাজার পকেটে আসবে।’
‘কার চিঠির কথা বলছেন আপনারা?’
‘সত্যরঞ্জন মিত্র। বউদি জানতে পেরেছেন উনি আপনাকে প্রেমপত্র লেখেন।’
‘কী করে জানলেন?’
‘ওর নাকি প্রেমপত্র লেখা অভ্যেস। আপনার কথা আমরা চাপ দিয়ে বের করেছি। এখন চুপচাপ চিঠিগুলো দিয়ে ভাইদের উপকার করুন।’
‘কিন্তু আমি ওকে চিনি না। ওই নামের কেউ।’
‘তাও বলেছে সত্যদা! আপনাকে জানলায় দেখে প্রেমপত্র লিখেছে।’
নির্দ্বিধায় চিঠি তিনটে দিয়ে দিল অঞ্জনা। তারপর কীরকম জীবনে খালি-খালি লাগছিল তার। হঠাৎ মনে হল তার জীবনে এখন প্রেম নেই। বিপ্লব প্রেমের কথা বলতে জানে না। নকল বাবা। হওয়ার জন্য সে এখন মরিয়া। এই চিঠিগুলো তাকে বিরক্ত করলেও কোথাও একটা ভালো লাগা তৈরি করত। নলজাত সন্তানের মতো চিঠিজাত প্রেমও যে জরুরি তা এই প্রথম উপলব্ধি করল অঞ্জনা।
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন