আমার বন্ধু বান্ধব পাড়া পড়শীরা
শীতের দাপট কমতে না কমতেই
দলবেঁধে আনন্দ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ে।
পাড়ার বেবাক মানুষ ধোপা নাপিত মাছ মুরগী ওয়ালা
সবজি বিক্রেতা রিকশা ভ্যান মুদি দোকানদার
পান ওয়ালা আসিফ চায়ের টংয়ের নাহিদ
তরুন যুবক ছেলে ছোকরার দল
এমনকি সারা বছর মিনতি খাটা গনিও পান চিবায়
আর কক্সবাজার আনন্দ ভ্রমণের রঙিন ব্যানার টানায় অলি-গলিতে ঈদের মত উৎসব উৎসব আমেজ
ছড়িয়ে পড়ে,এভাবেই দেখছি গত দেড় দশক!
ইদানিং তরুণ প্রজন্ম সিনেমা হলে যায় না।
খেলার মাঠে যায় না,অজান্তে সেই কবে পাড়ার হকি ফুটবল হাডুডু হারিয়ে গেছে।
সারাক্ষণ মোবাইল স্ক্রিনে চোখ রাখে।শিকারী শকুনের মত। টিকটক বিনোদনে অস্থির ! নীল সমূদ্রে ভাসে।
শহরের অলি গলি বস্তিতে বার্গার ক্যাফে শপ লাল নীল!
বিনোদন এখন মৌলিক চাহিদার অঙ্গ !
আমার ছেলে মেয়ে দুটো উসখুস করে!
বাবা এ পাড়ায় আমাদের এতো বড় বাড়ি সুন্দর গাড়ি
অথচ আমরা ভ্রমণে যাইনা কেন ?
সত্যি কথা ওদের শখ আহলাদ বাড়ির চার দেয়াল
আর গাড়ির চাকায় আটকে গেছে অনেক অনেক বছর! ভুলেই গেছি ভ্রমণ আমাদের হৃদয় প্রশান্ত করে!
আজকে পেপারে দেখলাম একজন সরকারি কর্মকর্তা ছুটি না পাওয়ায় চার চারজন কে পিটিয়ে
হনহনিয়ে অফিস থেকে রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছে!
বহুকাল আমি ফাইল বন্দী! নাকি স্বেচ্ছা কারাবন্দী!
আমার রাত্রি দিন কাটে অপরিচিত কিছু মানুষের সাথে সারাক্ষন ঋণখেলাপীদের লাভ লোকশানের গল্প শুনে।
আমার অনেক ঋণ আছে ছেলে মেয়ে স্ত্রী আর বন্ধু স্বজনের কাছে। আমার মৃত্যুর পর হয়তো ওরা
এসে বলবে আমরা কি বলেছিলাম তোমাকে কারুনের
মতো কৃপন হতে! হয়তো কেউ বলবে কতবার বলেছি
চলো সমুদ্র ভ্রমণে যাই! মনটা হালকা করি!
বুক ভরে শ্বাস নেই সুন্দর বনে অথবা নিঝুম দ্বীপে।
হয়তো আমার স্ত্রী শোকে চিৎকার করে বলবে
দেখো কতোবড় স্বার্থপর সে – সকাল না হতেই
অন্ধকারে একা একা চলে গেলো অনন্ত ভ্রমণে!
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন