আমার দুয়ারে কে?
জালাল উদ্দিন রুমি
কে আমার দুয়ারে দাঁড়িয়ে, কে? তিনি জিজ্ঞেস করলেন।
আপনার বিনীত ভৃত্য আমি, উত্তর দিলাম।
তুমি কী করো? তিনি জানতে চাইলেন।
আপনাকে অভিবাদন জানানোই আমার কাজ হে প্রভু,
আমি বললাম।
কিন্তু কতদিন চলবে তোমার এই কর্মযজ্ঞ?
উৎসুক হয়ে জানতে চাইলেন তিনি।
যতদিন আপনি চাইবেন,
এই বলে আমি আশ্বস্ত করলাম তাকে।
আর কতদিন নিজেকে এই আগুনে পোড়াবে?
যতদিন অবধি না খাঁটি হতে পারি
নিশ্চিত করলাম তাকে।
এটি আমার ভালোবাসার প্রতিজ্ঞা
এবং এ ভালোবাসার জন্যই
আমি ত্যাগ করেছি আমার পদমর্যাদা।
তুমি শুধু তোমার নিজের পক্ষে
সাফাই গাইছো,
আসলে এর কোনো সত্যতা নেই।
তিনি আমার উপর জোর খাঁটিয়ে বললেন।
আমি অকুণ্ঠ চিত্তে বললাম,
এই যে দেখছেন আমার চোখের বিন্দু বিন্দু অশ্রু; এই অশ্রুই আমার স্বাক্ষী।
আমার ফ্যাকাশে মুখশ্রী;
এটিই আমার স্বাক্ষী।
কিন্তু তোমার প্রমাণাদির তো কোনো বিশ্বস্ততা নেই।
তোমার চোখ এতটাই আর্দ্র যে
সেখানে পৌঁছানোই দায়।
এবার প্রবল আস্থা নিয়ে আমি বলতে থাকলাম
আপনার ন্যয়বিচারের বহ্নিদীপ্ত প্রভাই
আমার ভেজা চোখকে সমুজ্জ্বল ও ত্রুটিবিহীন করে তুলবে।
তুমি আসলে কী খুঁজছো বলো-তো?
আপনাকে, আপনাকে প্রভু,
আপনাকে আমার স্থায়ী বন্ধু হিসেবে খুঁজছি।
কী চাও তুমি আমার কাছে,
বলো তো, বলে ফেলো।
আপনার দিগন্তবিস্তৃত অনুগ্রহ,
এক সমুদ্র অশ্রু নিয়ে বললাম আমি।
তোমার সাথে এ যাত্রায় আর কে কে ছিল বলতো দেখি?
কেউ না, শুধুই আপনার চিন্তার মগ্নতা, প্রভু, শুধুই আপনার চিন্তার মগ্নতা।
কিন্তু বিশেষ কি আকর্ষণ করলো তোমায় যে,
এখানে আসলে তুমি?
কেন! আপনার কোমল পানীয়ের সুঘ্রাণ,
সেইই তো আমায় ডেকে নিয়ে এলো এখানে।
কিসে তোমার পূর্ণতা আসে বলবে কি?
বলবো না কেন!
আমার পূর্ণতা আসে সম্রাটের সাহচর্যে।
কিন্তু, সেখানে কী পাও তুমি?
শত শত অলৌকিকতা।
আচ্ছা, এখানে এত নির্জনতা কেন, বলো-তো?
আমি বললাম, তারা সবাই চোরকে ভয় পায়।
কিন্তু কে সেই চোর? তিনি জিজ্ঞেস করলেন।
যে আমাকে আপনার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে
সেই-ই চোর,
আমি বললাম।
কিন্তু তাদের নিরাপত্তা?
কর্ম এবং ত্যাগের মাঝেই– আমি বললাম।
কিন্তু সেখানে ত্যাগ করবার মতো কিইবা আছে?
পরিত্রাণ প্রাপ্তির প্রত্যাশা, প্রভু, আত্মপরিত্রাণের প্রত্যাশা।
কিন্ত তাদের দুর্দশা কিংবা দুঃখটা কোথায় বলো দেখি?
আপনার প্রাণবান ভালোবাসার উপস্থিতিতে।
এই জীবন থেকে তুমি কীভাবে সুখ অণ্বেষণ করো?
নিজের কাছে নিজেই সৎ থাকবার মাঝেই– আমি বললাম।
এই মুহূর্তে প্রকৃতই সময় হলো নীরব থাকবার।
আমি যদি তাঁর প্রকৃত অস্তিত্ব নিয়ে তোমাদের বলি
তাহলে তোমরা তোমাদের সত্তা ছেড়ে আকাশে উড়বে, হারিয়ে যাবে সুদূর নীলিমায়।
কোনো পিছুটানই আর ধরে রাখতে পারবে না তোমাদের।
(অনুবাদ করেছেন – মনজুরুল ইসলাম)
আপনার বিনীত ভৃত্য আমি, উত্তর দিলাম।
তুমি কী করো? তিনি জানতে চাইলেন।
আপনাকে অভিবাদন জানানোই আমার কাজ হে প্রভু,
আমি বললাম।
কিন্তু কতদিন চলবে তোমার এই কর্মযজ্ঞ?
উৎসুক হয়ে জানতে চাইলেন তিনি।
যতদিন আপনি চাইবেন,
এই বলে আমি আশ্বস্ত করলাম তাকে।
আর কতদিন নিজেকে এই আগুনে পোড়াবে?
যতদিন অবধি না খাঁটি হতে পারি
নিশ্চিত করলাম তাকে।
এটি আমার ভালোবাসার প্রতিজ্ঞা
এবং এ ভালোবাসার জন্যই
আমি ত্যাগ করেছি আমার পদমর্যাদা।
তুমি শুধু তোমার নিজের পক্ষে
সাফাই গাইছো,
আসলে এর কোনো সত্যতা নেই।
তিনি আমার উপর জোর খাঁটিয়ে বললেন।
আমি অকুণ্ঠ চিত্তে বললাম,
এই যে দেখছেন আমার চোখের বিন্দু বিন্দু অশ্রু; এই অশ্রুই আমার স্বাক্ষী।
আমার ফ্যাকাশে মুখশ্রী;
এটিই আমার স্বাক্ষী।
কিন্তু তোমার প্রমাণাদির তো কোনো বিশ্বস্ততা নেই।
তোমার চোখ এতটাই আর্দ্র যে
সেখানে পৌঁছানোই দায়।
এবার প্রবল আস্থা নিয়ে আমি বলতে থাকলাম
আপনার ন্যয়বিচারের বহ্নিদীপ্ত প্রভাই
আমার ভেজা চোখকে সমুজ্জ্বল ও ত্রুটিবিহীন করে তুলবে।
তুমি আসলে কী খুঁজছো বলো-তো?
আপনাকে, আপনাকে প্রভু,
আপনাকে আমার স্থায়ী বন্ধু হিসেবে খুঁজছি।
কী চাও তুমি আমার কাছে,
বলো তো, বলে ফেলো।
আপনার দিগন্তবিস্তৃত অনুগ্রহ,
এক সমুদ্র অশ্রু নিয়ে বললাম আমি।
তোমার সাথে এ যাত্রায় আর কে কে ছিল বলতো দেখি?
কেউ না, শুধুই আপনার চিন্তার মগ্নতা, প্রভু, শুধুই আপনার চিন্তার মগ্নতা।
কিন্তু বিশেষ কি আকর্ষণ করলো তোমায় যে,
এখানে আসলে তুমি?
কেন! আপনার কোমল পানীয়ের সুঘ্রাণ,
সেইই তো আমায় ডেকে নিয়ে এলো এখানে।
কিসে তোমার পূর্ণতা আসে বলবে কি?
বলবো না কেন!
আমার পূর্ণতা আসে সম্রাটের সাহচর্যে।
কিন্তু, সেখানে কী পাও তুমি?
শত শত অলৌকিকতা।
আচ্ছা, এখানে এত নির্জনতা কেন, বলো-তো?
আমি বললাম, তারা সবাই চোরকে ভয় পায়।
কিন্তু কে সেই চোর? তিনি জিজ্ঞেস করলেন।
যে আমাকে আপনার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে
সেই-ই চোর,
আমি বললাম।
কিন্তু তাদের নিরাপত্তা?
কর্ম এবং ত্যাগের মাঝেই– আমি বললাম।
কিন্তু সেখানে ত্যাগ করবার মতো কিইবা আছে?
পরিত্রাণ প্রাপ্তির প্রত্যাশা, প্রভু, আত্মপরিত্রাণের প্রত্যাশা।
কিন্ত তাদের দুর্দশা কিংবা দুঃখটা কোথায় বলো দেখি?
আপনার প্রাণবান ভালোবাসার উপস্থিতিতে।
এই জীবন থেকে তুমি কীভাবে সুখ অণ্বেষণ করো?
নিজের কাছে নিজেই সৎ থাকবার মাঝেই– আমি বললাম।
এই মুহূর্তে প্রকৃতই সময় হলো নীরব থাকবার।
আমি যদি তাঁর প্রকৃত অস্তিত্ব নিয়ে তোমাদের বলি
তাহলে তোমরা তোমাদের সত্তা ছেড়ে আকাশে উড়বে, হারিয়ে যাবে সুদূর নীলিমায়।
কোনো পিছুটানই আর ধরে রাখতে পারবে না তোমাদের।
(অনুবাদ করেছেন – মনজুরুল ইসলাম)
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১৩৯ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন