আমার কেবলি ভুল হয়ে যায়
অনভ্যস্ত মাতালের মতো
ফুল তুলতে ভুল হয়ে যায়
দেশলাই কিনে দোকানীর কাছে
ফেরত নিয়ে আমি কখনো
পয়সা গুনে দেখিনি
বলার সময় মনগড়া বিজ্ঞান
আর অবৈজ্ঞানিক ঘোড়া চালালে
আমি কথার মধ্যে ঢুকিয়ে দি
স্বয়ংক্রিয় আলজিভ।
আজকাল অবশ্য ‘উচিৎ’ শব্দটি
নিজেই ‘অনুচিত’ হয়ে গেছে-
কে যে কখন ওৎ পেতে থাকে
বলা মুশকিল।
তবু আমি এমনকি লিখবার সময়
অসভ্য অক্ষরে লিখে ফেলি
তিনপ্রস্থ বিরোধী উচ্চারণ।
আমার কেবলি পাপ হয়ে যায়
তবে কি পরাজয়,প্রত্যাখ্যাত
চিঠির মতো কেবলি
গ্লানি নিয়ে বাঁচা!
হলোই বা – এরকম অন্যরকম করে
বেঁচে থাকা খুব তো মন্দ নয়।
কী হবে আর, বড়োজোর একটা জীবন
চমৎকার হেরে যাবো।
মঞ্চে মদিরায় চিহ্নিত থাকবে না
আমার পুষ্পিত পাঁজরের ঘ্রাণ
অথবা উড়ে যাবো অচেনা আঙুলের
নিরঙ্কুশ অন্ধ আঘাতে;
হলেও,ইদানিং আর পরোয়া করি না।
আমার কেবলি দেরি হয়ে যায়
বন্ধুরা নরম শরীর ছেনে
মধুর সর্বনাশে বিভোর,
আমি তখনো আবিষ্কার করিনি
ঘুমের মধ্যে আকষ্মিক প্রথম বর্ষণ
প্রকাশ্যে দূরে থাক
লুকিয়ে চুরিয়ে দেখে নেইনি
শ্বাসরুদ্ধময় নারী শরীর।
বন্ধুদের আরও কতো কিছু হলো
আমার হলো না কিছু – না উন্নতি,
অবনতি কোনো।
আমার কেবলি ক্ষয় হয়ে যায়
শুয়োরের বাচ্চারা শিল্প সভ্যতার নামে
লুটে নিলো উনুনে ছড়ানো রোদ্দুর
প্রতিহিংসায় আমি তেড়ে উঠিনি
তাচ্ছিল্যের হাসি নিয়ে করুণার চোখে
তাকিয়ে দেখেছি- ওসব শিল্প সভ্যতা
বস্তুত ঝুলে পড়া বেশ্যার
টকটকে লিপস্টিক মাখা ঠোঁট।
শিল্প সভ্যতা থেকে আমি চিরকাল
ঘুরে গেছি জখম ঝলসিত
নগ্ন জীবনের দিকে।
কৃত্রিম ঠোঁটের বিরুদ্ধে এ আমার
আজন্ম রক্তাক্ত ক্ষরণ
নষ্ট যোনির বিরুদ্ধে এ আমার
আজন্ম ধারালো চাবুক।
সাজানো সত্যের বিরুদ্ধে
এভাবে আমার আজীবন
ভুল হয়ে যাবে পাপ হয়ে যাবে।
চিমনির কালো ধোঁয়া হয়ে
অহিংস কবিতা-পুরুষের মতো
উড়ে যেতে যেতে শেষ ট্রেনের
অপেক্ষায় আমি
চিরদিন গন্তব্যে না ফেরা মানুষ।
আমার কেবলি ভুল হয়ে যায়
কেবলি রাত হয়ে যায়
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন