মিস্টার জেন্ট বসে আছে ২২ তলা বিল্ডিং- এর আন্ডারগ্রাউন্ডের একটি কক্ষে।কক্ষটি অত্যন্ত গোপন ও সুরক্ষিত।আন্ডারগ্রাউন্ডের কক্ষগুলির মধ্যে এই কক্ষটি সবচেয়ে বৃহৎ।জেন্টের বাম পাশের কক্ষে আছে পলল আর ডান পাশের কক্ষে মিস সুজয়া।সুজয়ার দায়িত্ব জেন্টকে সার্বক্ষণিক সেবা দেয়া।অনুমতি ছাড়া কক্ষের বাইরে সুজয়া বের হতে পারে না।নিয়ম নেই।
জেন্টকে আজ একটা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করতে হবে।মাথাটা জ্যাম হয়ে আছে, হালকা করা দরকার। জেন্ট সুইচ প্রেস করলো।মুহূর্তের মধ্যে পলল এসে হাজির হলো।
জেন্ট পললকে বললো – পলল
পলল রোবটের মতো বললো – ইয়েস স্যার
জেন্ট মাঝে মাঝে কনফিউজড হয়ে যায়- পলল কি মানুষ নাকি সে আসলে একটা রোবট!
জেন্ট কপালের ভাঁজ এড়িয়ে বললো- জেরিনকে আসতে বলো।
পলল ‘ইয়েস স্যার’ বলে চলে গেলো।
জেন্ট পললের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে কিছু একটা আঁচ করতে চাইলো কিন্তু আঁচ করতে পারলো কিনা – বুঝা মুশকিল।
জেরিন শুধু আজকের জন্যই আসবে।কাজ শেষ করে সুজয়ার কাছ থেকে চেক নিয়ে চলে যাবে।জেরিনের কাজ হলো কক্ষে প্রবেশ করবে ধীর লয়ে।উত্তর দিকে একটি দীর্ঘ গ্লাস।জেরিন সেই গ্লাসের সামনে গিয়ে দাঁড়াবে অলস ভঙিমায়।গ্লাসের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে জেন্টের সংগে চোখাচোখি হবে গ্লাসে ভেসে থাকা জেরিনের চোখের সংগে।জেন্ট রঙিন জলের গ্লাসে চুমুক দিবে।আর সেই সংগে বিলোল চাহনিতে জেরিনের সংগে চোখাচোখি। বাংলাদেশের এক অখ্যাত কবি হাসানুদ্দিনের ‘লাল কার্ড’ কবিতার মতো -‘এখন আমি গ্লাসে ঢালা মদ/এক চিপ ফুরাতেই আরেক চিপ নেবার চেষ্টা/প্রেম মানে সিগ্রেটের ছাই/কখন যে পড়ে যায়/ঠিক নাই’।
গ্লাসের দিকে মুখ করেই জেরিন ক্রমশ অনাবৃত হতে থাকবে।গ্লাসে ভাসা জেরিনের দিকে জেন্টের শিকারী চাহনি। জেরিন কাঁচা দক্ষতায় সেরে নিচ্ছে তার জন্য বরাদ্দকৃত পারফরমেন্স।জেন্টের কাজ এক চিপ ফুরাতেই আরেক চিপ নেবার চেষ্টা- কুৎসিত ক্ষিক-ক্ষিক হাসি আর চেয়ারে বসেই স্থির দৃষ্টিতে জেরিনের দিকে অশ্লীল তাকিয়ে থাকা।জেরিন মেঝেয় ছটফট করে এক সময় নেতিয়ে পড়লেই ছুটি।কাংগিত চেক।
কিন্তু আজ জেরিন কক্ষে প্রবেশ করার পর গ্লাসের দিকে যেতেই জেন্ট বেল বাজালো।কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পললের প্রবেশ-‘স্যার’।
জেন্ট পললের দিকে না তাকিয়ে এমনকি জেরিনের দিকেও না তাকিয়ে বললো- মেয়েটিকে চলে যেতে বলো।
জেন্ট ঠিক কোন দিকে তাকিয়ে আছে পলল সম্ভবত আবিষ্কার করতে ব্যর্থ হলো।সে জেরিনের দিকে তাকিয়ে ইশারা করলে জেরিন হত-বিহ্বল দৃষ্টিতে পললের দিকে তাকালো।পললের দ্বিতীয় ইশারায় জেরিন কক্ষ থেকে বেরিয়ে গেলো।জেন্ট চিৎকার করে একটা অশ্লীল গালি উচ্চারণ করলো।গালিটা জেন্ট কাকে দিলো কেনো দিলো – ইত্যাদি নিয়ে পললকে এক চিলতেও বিচলিত মনে হচ্ছে না।সম্ভবত জেন্টের এসব উদ্ভট আচরণের সংগে পলল খুব পরিচিত।পলল রোবোটিক স্টাইলে বেরিয়ে গেলো।পললের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে পুনরায় অনুপস্থিত কারো উদ্দেশে জেন্ট উচ্চারণ করলো- শালা, তোর চোদ্দগুষ্ঠিকে আমি খগেন করে দেবো।
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন