দ্য কিলার আউটসাইডার -১৯
দ্য কিলার আউটসাইডার -১৯
যুবক অনার্য

গল্প - দ্য কিলার আউটসাইডার -১৯

যুবক অনার্য
শুক্রবার, ০৭ মার্চ ২০২৫ রহস্য

‘টোয়েন্টি টু গ্রেট পোয়েটস অব এশিয়া’ প্রকাশ পেলো ‘আঁধার ও অন্ধকার’ থেকে।

সুধীনদা বললেন- এবার সমগ্র পৃথিবীর কবিতা নিয়ে সংকলন করতে হবে।

দাদা রাজুকে প্রয়োজনীয় ম্যাটার ম্যানেজ করে দিবেন বলে জানালেন।টাইপের কাজ করবে আব্দুল আজিজ।টাইপের খরচ বহন করতে হবে রাজুকে যা বরাবর রাজুকেই করতে হয়।

রাজু বললো- এটা কোথা থেকে বেরুবে?
দাদা বললেন- দেশের বাইরে থেকে।এই প্রোডাকশনের মূল্য এখানে নেই।এখানে এসব পড়বার পাঠকও নেই।

রাজু কিছু বলে না।

দাদা আবার বলে- নীরবে কাজ করে যাও।সাহিত্য থেকে যখন রিটার্ন আসে তখন সুদে-আসলে রিটার্ন আসে।এখন বিনিয়োগ করে রাখো , ইন ফিউচার এর ফল পাবে।বুঝেছো?
-জ্বি দাদা।

সুধীনদার সংগে রাজুকে পরিচয় করে দিয়েছিলো ধীরেনদা।সুধীনদার একটি কবিতার সংকলনে ধীরেনদার কবিতা নিয়েছিলেন।এজন্য ধীরেনদা সুধীনদার প্রতি খুব কৃতজ্ঞ। যখন সুধীনদার সংগে পরিচয় তখন রাজুর প্রথম কাব্য ‘অতলান্তিক আঘাতে ওষ্ঠ ছোঁবো তোমার’ প্রকাশ পেয়ে গেছে।
রাজু সুধীনদাকে বইটি দিয়েছিলো। দাদা পড়ে মন্তব্য করেছিলেন- তুমি যা লিখেছো তার মধ্যে কোনো শৈলী নেই।শৈলী ছাড়া কবিতা হয় না।

তারপর থেকেই রাজু দাদার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে।সত্যিকার অর্থে সেদিন যদি দাদা রাজুকে শৈলীর বিষয়টি হাতেকলমে ধরিয়ে না দিতেন তাহলে রাজুর পক্ষে সম্ভব হতো না ধরতে পারা যে কেনো জীবনানন্দ দাশ বিনয় মজুমদার শক্তি চট্টোপাধ্যায় ভাস্কর চক্রবর্তী আল মাহমুদ শহীদ কাদরী আবুল হাসান রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বড়ো কবি।সত্যিই সম্ভব হতো না।তারপর থেকেই রাজুও চিনে গিয়েছিলো কোন কোন কবির কবিতা হয়েছে আর কোন কোন কবির কবিতা হয়নি কাদের হচ্ছে কাদের হচ্ছে না।আর দাদার সেই অবদান থেকেই রাজু বুঝতে পারে যে এই সময়ের তরুণদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শৈলীঋদ্ধ কবির নাম রাকিবুল হক ইবন আর তামান্না সুলতানা তুলি।

রাজু অনেকটা ভাবনার জগতে তলিয়ে গিয়েছিলো।দাদার কথায় রাজুর সম্বিৎ ফিরে এলো।দাদা বললেন- কাজ শুরু করে দাও।সামনেই আসছে সুদিন।সুভাষ দা তো বলেছিলেন ‘ ফুল ফুটুক না ফুটুক/ আজ বসন্ত’; আমরা ফুল ফুটিয়েই বসন্ত আনবো।

দাদার কথাটা রাজুর ভালোই লাগলো।কিন্তু কোন বসন্তের কথা বলছেন তা রাজুর বোধগম্য নয়।সেই বসন্ত নিয়ে দাদাকে প্রশ্ন করারও কোনো মানে হয় না।রাজু বললো- দাদা, চা খাবো।

রাজু চা খাচ্ছে।সুধীনদার ফোন বেজে উঠলো।কিন্তু সুধীনদা ফোন রিসিভ করছেন না।বার বার রিং হচ্ছে।তবু শেষ পর্যন্ত দাদা ফোন রিসিভ করলেন না।একটু পরে দাদা অসীম নামের কাউকে ফোন করে বললো- দাদাকে ফোন করে বলে দাও আমি অসুস্থ।কিছুদিন পরে ওটা দিয়ে দিবো।পার্টি রেডি করতে কিছুটা সময় লেগে যাবে।

ফোন রেখে দাদা বিড়বিড় করে কী যেনো বললেন।তারপর রাজুর দিকে তাকিয়ে কপট উত্তেজিত ভঙিমায় বললেন- কেউ আমার দিকটা বুঝতে চায় না শুধু নিজেদেরটাই বুঝে।আমি একা আর কতোটা কুলিয়ে উঠতে পারি,বলো!

রাজুর মনে হলো দাদা এখনি টাকা চাইবে।কিন্তু রাজুর ধারণা মিথ্যে হলো। দাদা বললো- সময় নষ্ট না করে তুমি ‘চৌচির’ থেকে ক্লিন্টন বুথ সিলি’র জীবনানন্দের অনুবাদটা নিয়ে যাও।নেক্সট কাজটার জন্য অইটা খুব জরুরি।

রাজু ‘জ্বি আচ্ছা’ বলে দোকান থেকে বেরিয়ে এসে রাস্তার একটা টঙ থেকে সিগ্রেট ধরালো।রাজুর সামনেই ফোনে মিথ্যে বলে দাদা মনে হয় একটু অপ্রস্তুত বোধ করেই রাজুকে তাড়াতাড়ি বিদেয় করে দিলো।কিন্তু এসব নিয়ে রাজুর কোনো মাথা ব্যথা নেই।রাজুর মাথা ব্যথা ইদানিং সুর্মিকে নিয়ে।আচ্ছা সুর্মিকে একটা ফোন দিলে কেমন হয়!

১১৬
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন