মিস্টার জেন্ট-এর ডেস্ক-এ নিয়োগ পেয়েছেন যিনি তার নাম মিস্টার এন রায়। এটা তার ছদ্মনাম। মূল নাম মজুমদার তিলক।এন রায়ের পছন্দ হলো ১৮।এন রায় বয়সে তরুণ। প্রায়শ দিনে তার দুইজন লাগে।তবে তিনি আগে অফিসের কাজ সেরে নেন। তারপর ১৬, ১৭,১৮ এভাবে সর্বনিম্ন ১৪।১৪ -এর নিচে নয়।১৪’র নিচে তিনি শিশু মনে করেন।তিনি শিশু প্রেমিক নন।জেন্টের অভ্যাস ছিলো অফিসের কাজের আগে মাংসল জৈব অবগাহন। এন রায় তরুণ ও আলদা রুচির মানুষ। স্মার্ট।সদা হাস্যোজ্জ্বল।তাকে দেখে বুঝা সম্ভবই নয় – হাস্যোজ্জ্বল এই লোকটি হাসতে হাসতে মানুষ খুন করার নিখুঁত ছক আঁকতে পারেন।এমনকি তার একটা ভয়ংকর ও গোপন মানসিক রোগ আছে।নারীর মধ্যে অবগাহনের পর তার ইচ্ছে হয় সেই নারীর দুই স্তন আর যোনিদেশে ফায়ার করে মেরে ফেলতে।সে যে-নারীর মধ্যে সাঁতার কাটবে অন্য কেউ ছোঁয়া তো দূরের কথা চোখেও যেনো দেখতে না পায়,সাঁতার শেষে এজন্যই তার ইচ্ছে হয় অই নারীকে খুন করে ফেলতে।তবে তার রোগের পরিধি ইচ্ছে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ।আজ সে কাজ হিসেবে নিয়েছে গান শুনা।এখানে গান শুনাও একটি অফিসিয়াল টাস্ক।ইচ্ছে হলে প্রযুক্তির মাধ্যমে শুনা যায়।আবার ইচ্ছে হলে সরাসরি কোনো শিল্পীর কণ্ঠেও শুনা যায়।গান শোনাবার জন্য এখানে শিল্পী নিয়োগ করা আছে তবে সেইসব শিল্পীর বাইরে কোথাও গান শুনানো নিষেধ যেহেতু এখানে গান শুনানোই তাদের চাকুরি। তবে মাসের পর মাস মূলত তাদের বেকারই থাকতে হয়।খালি গলায় এমনকি অনলাইনেও এখানে তেমন কেউ গানটান খুব একটা শুনে না।
এন রায় গান শুনার জন্য যে শিল্পীটিকে এনেছেন তার নাম অরুনিমা।অরুনিমা নামটা এন রায়ের খুব পছন্দ হলো:
মনে পড়ে কবেকার পাঁড়াগার অরুণিমা সান্যালের মুখ
উড়ুক উড়ুক তারা পউষের জ্যোৎস্নায় নীরবে উড়ুক।
কেমন আছো অরুনিমা
-জ্বি ভালো, স্যার।
এন রায় বলতে চেয়েছিলো ‘স্যার’ নয় আমাকে বরং ভাইয়া ডাকলে খুশি হবো কিন্তু বলা হলো না কারণ এই অফিসে ভাইয়া-টাইয়া বলার অনুমতি নেই।
এন রায় বললো – গুড।
থ্যাংক ইউ স্যার
-ওয়েলকাম।
অরুনিমার চোখ দুটি প্রচন্ড ধারালো আর প্রভাবশীল। যে কেউ প্রেমে পড়ে যাবে।এন রায়ও প্রেমে পড়েছে কিনা বুঝতে পারছে না।
এন রায় চাইলো অনেক্ষণ ধরে অরুনিমার চোখের দিকে চেয়ে থাকতে।চেয়ে থাকলে এক ধরনের সুখ সুখ অনুভূতি হতে পারে।কিন্তু এভাবে অনেক্ষণ চেয়ে থাকতে হলে এন রায়ের অরুনিমাকে বলতে হবে যে অরুনিমা যেনো অনেকক্ষণ ধরে এন রায়ের সংগে চোখাচোখি করে।শব্দটি ‘চোখাচোখি’ হবে নাকি ‘চোখের দিকে তাকিয়ে থাকা হবে’ এন রায় নিশ্চিত হতে পারে না।সে বাংলা ভালো জানে না।অদক্ষ বাংলাতেই সে বললো – অরুনিমা আজ তোমাকে গান শুনাতে হবে না।
তাহলে কী করবো স্যার?
-আজ শুধু আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকবে।
ওকে স্যার।
এখানে ‘না’ বলার কোনো নিয়ম নেই।এন রায় যদি বলে বেডে যেতে তাহলে অরুনিমাকে তাই করতে হবে।এটা বরং অরুনিমার জন্য সুখবর হবে কারণ বেডে গেলে ওভারটাইম হিসেবে অরুনিমাকে অফিস এক্সট্রা পে করবে।
অরুনিমার চোখের দিকে অনেক্ষণ তাকিয়ে থেকে এন রায়ের কোনো অনুভূতি হলো না।এন রায়ের মনে হলো অনুভূতি হতে হলে প্রেমময় কোনো সম্পর্ক প্রয়োজন।এমনকি এই চোখাচোখির মধ্যে কোনো যৌনতাও টের পায় নি সে।বরং এন রায় মনে করে- চোখাচোখি তো একটি রোমান্টিক বিষয় হবার কথা।এখানে যৌনতা কেমন যেনো বেমানান।কিন্তু নারী পুরুষের মধ্যে যে সম্পর্ক তা কি যৌনতার বাইরে কিছু হতে পারে?এন রায়ের এই মুহুর্তে মনে হচ্ছে- হতে পারে।কিন্তু কেনো হতে পারে সেটা ব্যাখ্যা করার মতো এলেম বা প্রজ্ঞা এন রায়ের নেই।তার কেনো যেনো মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।সে অরুনিমাকে বললো – তুমি যেতে পারো।
অরুনিমা ‘জ্বি স্যার’ বলে চলে গেলো।
এন রায়কে স্যার তিনটা ভিডিও গেম দিয়েছেন।এই গেমগুলি তাকে খেলতে হবে।এসব বাচ্চাদের গেম।খুন খারাবির গেম।বাচ্চাদের জন্য বিজ্ঞানীরা কেনো খুন খারাবির গেম বানায় এন রায়ের বোধগম্য নয়।এন রায়ের ইচ্ছে আছে বাচ্চাদের একটি স্কুল খুলবার যেখানে বাচ্চারা মানবিক মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে।কিন্তু খুন খারাবির চাকুরির টাকা দিয়ে মানুষ গড়ার স্কুল তৈরী করতে চাওয়া- তুমুল সাংঘর্ষিক নয় কি? এন রায়ের হাসি পায়।মানুষ এক আজব প্রাণী বটে।এক চূড়ান্ত স্ববিরোধী প্রাণী।এন রায় গেমগুলি একবার করে খেলেছে।এই গেমগুলির মধ্যে তার কাজের ক্লু আছে- তাকে এভাবেই বলা হয়েছে।কিন্তু এন রায় কোনো ক্লু খুঁজে পাচ্ছে না।সে বেল প্রেস করলো।
সুজয়া রুমে প্রবেশ করলো।
-সুজয়া।
জ্বি স্যার।
– মেধাবী একটি মহিলা নিয়োগ দাও।খুব দ্রুত।
মেধাবী এবং সৃজনশীল। মনে থাকবে?
জ্বি স্যার।
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন