যুবক অনার্য

গল্প - দ্য কিলার আউটসাইডার – ৩১

যুবক অনার্য
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ রহস্য

সুজয়া যে-মেয়েটিকে নিয়োগ দিয়েছে তার নাম আতসি। এন রায় আতসিকে ডেকে পাঠিয়েছে। আতসিকে আজ কাজ দেবার কথা।আতসি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে এন রায়ের দিকে তাকিয়ে আছে।এন রায় কিছুই বলছে না।আতসি ভাবছে আজ যদি কাজ না পায় তাহলে সে নিশ্চিত হতে পারছে না যে সে আদৌ চাকুরিটা পেয়েছে কিনা।আতসির সামনে খাবার দেয়া হয়েছে।আতসি কিছু খাচ্ছে না।এন রায়ও তাকে কিছু খেতে বলেছে না।কিন্তু আতসির সত্যিই অনেক খিদে পেয়েছে।আজ সে নাশতা করেও আসে নি।এন রায় তাকে খেতে বললে সে নির্দ্বিধায় খেতে শুরু করতো।খাবার কথা না বলে এন রায় জিজ্ঞেস করলো- আপনার হাসবেন্ড কি করেন?
আতসি বললো-নেই।
নেই মানে?
– ছিলো।
এখন কোথায়?
-জানি না।

এন রায়ের মনে হলো আতসি তার হাসবেন্ডের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইছে।এন রায়ও এড়িয়ে গেলো।

আপনার তো একটা বেবি আছে,তাইনা?
– জ্বি
কোন ক্লাসে পড়ে?
-ক্লাস থ্রি।
গুড।ও এখন কোথায়?
-বাসায়।
কার কাছে?
-আমার মায়ের কাছে।
গুড।

এন রায় কি এবার আতসিকে খেতে বলবেন?খিদেটা বড্ড মোচড় দিয়ে ওঠেছে।
এন রায় এমন সময় বললো- একি, আপনি তো কিছুই খেলেন না!।কিছু একটা তো খাওয়া উচিৎ ছিলো।

আতসি এন রায়ের কথায় হতভম্ব হয়ে গেলো। অনেকটা ‘খেয়ে আসছেন নাকি গিয়ে খাবেন’ রকমের কথা।আতসির খুব রাগ হলো।সে বললো – ইট’স ওকে।নো প্রব্লেম।

এন রায় আতসির ইট’স ওকে-কে যেনো বা বিনাবাক্যে মেনে নিলো।এন রায় উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দিলো।আতসি বুঝতে পারলো এন রায় হ্যান্ডশেকের উদ্দেশেই হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।আতসি হাত বাড়ালো।হ্যান্ডশেক করতে করতে এন রায় বললো-
ভালো থাকবেন।
আতসি বললো – আপনিও ভালো থাকবেন।

সুজয়া এসে আতসিকে নিয়ে গেলো এমন একটি কক্ষে যেখানে একটা টেবিল দুইটি চেয়ার আর একটা আলমিরা আছে।আতসির এক মুহুর্তের জন্য মনে হলো – তবে কি এই কক্ষেই আতসিকে কাজ করতে হবে?কিন্তু তার যে চাকুরিটাই এখনো জুটেনি।
আতসি বললো – স্যার তো আমাকে কোনো কাজের কথা বললো না।
আতসির প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সুজয়া আতসিকে একটা চেক দিলো।
এটা নাও।পার্সে রাখো।
-এটা কি?
একটা চেক।

চেকে লেখা টাকার অংক দেখে আতসি হতভম্ব হয়ে গেলো।কী বলবে বুঝতে পারলো না।একটা অস্বস্তিকর অবস্থা।
সুজয়া বললো – তুমি এখন যেতে পারো।
আতসি না গিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেই বললো-আমাকে কি স্যারের পছন্দ হয় নি?স্যারের কি মনে হয়েছে যে আমি কাজ পারবো না।কিন্তু আমাকে যে বলাই হয় নি আমার কাজ কী তাহলে বুঝবেন কী করে যে আমি পারবো না?

আতসি এক নিঃশ্বাসে অনেকগুলো কথা বলে কেমন বোকা বোকা নার্ভাস চেহারা নিয়ে সুজয়ার দিকে তাকালো।
সুজয়া বললো- তোমাকে পছন্দ হয়েছে।যদি প্রয়োজন হয় পরে তোমাকে ডাকা হবে।আপাতত তোমার সংগে আমাদের ডিলিং এখানেই শেষ। এর বেশি কিছু তোমাকে বলবার আর কিছু নেই।তুমি আজ আসতে পারো।

কাজ না করেই টাকা কেনো- আতসির মাথায় কিছুই ঢুকছে না।সে বুঝতেও পারছে না চেকটা ফেরত দেয়া ঠিক হবে কিনা।তার এই মুহুর্তেই টাকা এতো দরকার যে সে চেকটা ফেরত দেবার মতো সাহসও সঞ্চয় করতে পারছে না।কনফিউশন নিয়ে আতসি দাঁড়িয়ে আছে। তার জানা নেই যে এই ভবনেই তার ডাক পড়বে এক ভয়ংকর আর নিষ্ঠুরতম কাজ সম্পাদনার উদ্দেশে।

৮৭
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন