সুধীনদা রাজুকে খুব জরুরিভিত্তিতে দেখা করতে বলেছে।রাজু কলেজ থেকে সোজা চলে এলো সুধীনদার দোকানে।সুধীনদা সিগ্রেটে টান দিয়ে বললেন- ধীরে ধীরে লাইনঘাট ক্লিয়ার হচ্ছে।আর কয়েকটা কাজ করলেই আমরা আশা করি খুব ভালো ফিডব্যাক পাবো।
রাজু ক্লিয়ার নয় যে কোন ধরনের ফিডব্যাক তারা পাবে।রাজু এমনকি সুধীনদাকে প্রশ্নও করে না যে সুধীনদার আল্টিমেট গোলটা আসলে কী।তবে রাজু ধারণা করে নেয় যে সুধীনদা দেশের বাইরে কোনো একটা বিষয়ে বিশেষ রকমের কোনো সম্পর্ক করতে চাইছেন।রাজু দাদাকে প্রশ্ন না করে বিষয়গুলি আবিষ্কার করে নিতে চাইছে কারণ দাদাকে প্রশ্ন করে কোনো লাভ নেই।দাদা নির্দিষ্ট সময়ের আগে কোনো উত্তর দেবেন না কিংবা কখনোই উত্তর দেবেন না।তবে রাজু দীর্ঘ ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করে চলেছে সেই উত্তরের উদ্দেশেই।
দাদা বললেন – তোমার অপারেশন কবে?
রাজু বললো- টাকা ম্যানেজ হলেই করে ফেলবো।
-কী রকম ম্যানেজ হয়েছে?
এখনো তেমন কিছু পরিমান নয়।
দাদা সিগ্রেটে টান দিলেন।রাজু ভাবছে যে-জরুরি কাজে দাদা রাজুকে ডেকেছে সেই জরুরি কাজটার কথা কিন্তু দাদা রাজুকে এখনো বলে নি।মাস খানিক হলো রাজুর গল ব্লাডারে পাথর ধরা পড়েছে।ডাক্তার অপারেশন করতে বলেছেন।এসব নিয়ে রাজুকে বেশ ঝামেলার মধ্যেই দিন কাটাতে হচ্ছে।তবুও দাদা ডাকা মাত্রই রাজু ছুটে এসেছে।এ আসা শুধু সাহিত্যকে ভালোবাসে বলেই আসতে পারা, আসা হয়ে ওঠা।
দাদা কিছুই বলছে না বলে রাজু বললো – দাদা আজ তাহলে উঠি।
দাদা তবুও কিছু বলছে না।আরেকটা সিগ্রেট ধরিয়ে বললো- চা খাবে?
রাজু নির্লিপ্তভাবে উত্তর দিলো- খাওয়া যায়।
চা আনা হলো।রাজু চায়ে চুমুক দিচ্ছে দাদা সিগ্রেট ফুঁকছে।সিগ্রেটে ধোঁয়া উড়ছে।
দাদার মোবাইল বেজে উঠলো।রাজু লক্ষ্য করলো যে-ব্যক্তি ফোন করেছে মোবাইলর স্ক্রিনে তার নাম শো করেছে- অসীম করনজাই সিক্রেট।
দাদা ফোন রিসিভ করে জ্বি দাদা জ্বি দাদা কয়েকবার বলেই রেখে দিলো।
রাজু ভাবছে অসীম করনজাইয়ের পাশে সিক্রেট শব্দটির মানে কী? কারো নাম কি সিক্রেট হতে পারে – অমুক সিক্রেট তমুক সিক্রেট!কিন্তু এসব দাদার ব্যক্তিগত বিষয়।এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা নিশ্চয়ই শোভন বা স্বাভাবিক নয়।
মোবাইলে কথা শেষ করে দাদা বললেন- তোমাকে একটা খবর দেয়া হয় নি।
জ্বি বলেন দাদা।
-আমি তো এখন অনারারি ডক্টরেট ডিগ্রি দিচ্ছি।
রাজু কিছু না বলে চুপচাপ শুনে যায়।
-দেশের বাইরের একটা প্রতিষ্ঠানের সংগে কথা হয়েছে।ওদের কাছ থেকে অনারারি ডক্টরেট ডিগ্রির ব্যবস্থা করেছি।একটা মহিলাকে ৩ লাখ টাকা দিয়ে এনে দিয়েছি।তুমি ৫০ হাজার দিলেই হবে।সুযোগ সব সময় আসে না।এখন আসছে এখনি কাজে লাগাতে হবে।বুঝেছো?অনারারি ডক্টরেট ডিগ্রি রাজুর কাছে পুরোপুরি অপ্রাসঙ্গিক একটি ব্যাপার বলে মনে হলো।কিন্তু রাজুর কাছে একটু খটকা লাগলো।দাদা একটা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা দিয়ে দামি একটা ডিগ্রি আনবেন বিষয়টি মোটেই সাধারণ কিছু নয়।রাজুকে বের করতেই হবে বিষয়টি আসলে কী।শুধু এই কারণেই রাজু বললো – ওকে দাদা আমি ভেবে জানাবো।
– গুড।একটু তাড়াতাড়ি জানিও।
দাদা মোবাইল সেট বের করে কাকে যেনো ফোন করার জন্য ডিজিট টিপতে টিপতে রাজুর উদ্দেশে বললেন- ঠিক আছে আজ তাহলে আসো।
রাজু দোকান থেকে বের হতে হতে শুনতে পেলো দাদা মোবাইলে বলছেন- জ্বি দাদা জ্বি, আপনি জিনিস রেডি করতে থাকেন, আমি এদিকে আমার জিনিস রেডি করছি।
রাজুর মনে হলো ফোনের অইপাশের লোকটা কি সেই অসীম করনজাই সিক্রেট? কিন্তু এই করনজাই মহাশয় সিক্রেট কেনো?করনজাই মহাশয়ের স্ক্রিনও কি তবে শো করে- সুধীন দত্ত সিক্রেট?
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন