দ্য কিলার আউটসাইডার – ৩৮
দ্য কিলার আউটসাইডার – ৩৮
যুবক অনার্য

গল্প - দ্য কিলার আউটসাইডার – ৩৮

লেখক: যুবক অনার্য
প্রকাশ - শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫ ধরণ: রহস্য

অনেকদিন পর বিভুর স্ক্রিনে ভেসে উঠলো রহিমা বেগমের মোবাইল নাম্বার।
হ্যালা ম্যাডাম স্লামালিকুম।
রহিমা সালামের উত্তর না দিয়ে বললেন- এখনি বাসায় চলে আসো।

বিভু তখনি রওনা হয়ে ৪৩ মিনিট ৩ সেকেন্ডের মধ্যে পৌঁছে গেল রহিমার বাসায়।রহিমা অপেক্ষা করছিলেন।
বিভুকে বললেন- আগে লাঞ্চ করে নাও।

লাঞ্চের টেবিলে বিভু চরম উত্তেজনা নিয়ে খাচ্ছে আর অপেক্ষা করছে।অপেক্ষা ভেঙে রহিমা বললেন-
তোমাকে যেভাবে বলবো ঠিক সেইভাবে স্টেপ বাই স্টেপ কাজ করতে হবে।
বিভু মাংসের টুকরায় কামড় দিয়ে বললো-জ্বি ম্যাডাম।
-এটা আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এর উপর নির্ভর করছে আমার ও তোমাদের ভাগ্য।
বিভুকে যে- মাংস দেয়া হয়েছে সেটা গরু না খাসি তা নিয়ে বিভুর কোনো মাথা ব্যথা নেই।সে মাংসের টুকরো পানি দিয়ে গিলে বললো-জ্বি ম্যাডাম।

রহিমা বেগম কোনোরকম ভূমিকা ছাড়াই কথা বলতে পছন্দ করেন।আজও বিভুর সংগে ভূমিকা ছাড়াই বলে চলেছেন-প্রথমে ঘোড়াগুলিকে চিহ্নিত করবে।
দ্বিতীয় নাম্বার হলো ট্যাগ দিবে।বাকি অপারেশন চালাবে তৃতীয়পক্ষ।
বিভু শেষ লোকমা মুখে পুরে দিয়ে বললো-ওকে, ম্যাডাম।
-তুমি কাজ শুরু করে দাও।
জ্বি ম্যাডাম।
-আর একটা কথা মনে রাখবে- যদি অপারেশন ব্যর্থ হয় তাহলে অন্য কোনো নাটক তৈরি করে রাখবে।
তা তো বটেই, ম্যাডাম।আপনি নিশ্চিত থাকুন- নাটকের প্রয়োজন পড়বে না।সমগ্র আকাশটাকেই খাঁচা বানিয়ে রাখা হবে।পাখি উড়াল দিলেও অবস্থান করতে হবে আকাশ-সীমার অভ্যন্তরে।
রহিমা বেগম তবুও নিশ্চিত হতে পারছেন না।
– মনে রেখো ব্যর্থ হওয়া যাবে না কিছুতেই।
বিভু খুব কনফিডেন্স নিয়ে বলে- ব্যর্থ হবার প্রশ্নই আসে না ম্যাডাম।
-গুড।
রহিমা মুখে বলে- ভেরি গুড।আর মনে মনে বলে- শালা বিভু,মালুর বাচ্চা মালু,ব্যর্থ হলে তোর চোদ্দগুষ্ঠি আমি খগেন করে দিবো।
বিভু এক কাঠি সরেস হয়ে বলে – আপনার জীবনে তো কোনো ব্যর্থতা দেখিনি, ম্যাডাম।

রহিমা খুশি হলো কিনা বুঝা গেলো না।বিভু কোনো কথা খুঁজে না পেয়ে অপেক্ষা করছে।
রহিমা তাকে একটি গোপন মোবাইল নাম্বার দিয়ে বললো- এরপর যাবতীয় যোগাযোগ এই নাম্বারে করবে।সমস্ত নির্দেশনা এই নাম্বারে যিনি আছেন তিনিই তোমাকে দেবেন।তিনি কে তা তোমার জানার দরকার নেই।তুমি শুধু কমান্ড ফলো করে যাবে।
বিভু,যাকে রহিমা মনে মনে মালুর বাচ্চা বলে গালি দেয়,বলে-জ্বি ম্যাডাম, আমি বুঝতে পেরেছি।
ঠিক এই মুহুর্তের পর তুমি বা তোমাদের কেউ আমাকে আর ফোন দিবে না।আমাকে এখন অন্য কোনো নাট্যাংশ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হব।বুঝেছো?
বিভু,যার চোদ্দগুষ্ঠি রহিমা বেগম খগেন করে দিতে চায়,বলে- ইয়েস ম্যাডাম।
-এখন তাহলে আসো।আমি একটু ক্লান্ত। বিশ্রাম করতে হবে।

রহিমাকে সালাম দিয়ে বিভু চলে গেলো।রহিমা বেগম সালামের উত্তর না দিয়ে চিৎকার করে ডাকলেন- মনিষা এই মনিষা।
মুহুর্তের মধ্যেই মনিষা হাজির হলো।
রহিমা বললেন – ফ্রিজ থেকে বোতল বের কর।গলা শুকিয়ে গেছে।
মনিষা বোতল নিয়ে এলো।
রহিমা বেগম লাইট নিভিয়ে দিতে বললেন।তারপর এক গ্লাস ঘোলা জল ঘট ঘট করে গলায় ঢেলে দিয়ে বোতলাটা ধরাম করে মেঝেয় ফেলে দিয়ে কাকে যেনো উদ্দেশ্য করে বললো- ঘুঘু দেখেছো ঘুঘুর ফাঁদ দেখো নি।

রহিমার এই আচরণের সংগে মনিষা পরিচিত।
রহিমা তার বেডরুমে চলে যাবার পর মনিষা কাচের টুকরাগুলি মেঝে থেকে পরিষ্কার করতে করতে ভাবছে- তার জীবনটাও এই কাচের বোতলের মতোই যাকে রহিমা বেগম নামক এক ডাইনি ভেঙে চৌচির করে দিয়েছে সেই কবেই।

৫২
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন