দ্য কিলার আউটসাইডার – ৪১
দ্য কিলার আউটসাইডার – ৪১
যুবক অনার্য

গল্প - দ্য কিলার আউটসাইডার – ৪১

যুবক অনার্য
বুধবার, ২১ মে ২০২৫ হাসির

বিদেশে আসার পর একটি মুহুর্তের জন্যেও টিটু দেশকে ভুলে থাকতে পারে নি।তার সমস্ত মন আর শরীর জুড়েই শুধু জন্মভূমি শুধু মাতৃভূমি।কিন্তু ইদানিং বেশ কিছুদিন ধরেই দেশের প্রতি তার তৈথৈ অনুভূতিতে যেনো ভাটা লেগে যাচ্ছে।কিন্তু এর জন্য কি সে দায়ী নাকি দায়ী অই নীল চোখের এলিস মেয়েটা! আসলে টিটু কোনোদিন ভাবতেই পারে নি তার জীবনে এলিসের মতো অসম্ভব চমৎকার একটি মানুষ ঝড়ের মতো এসে সব লণ্ডভণ্ড করে দেবে।কিন্তু এলিস ঠিক ঠিক এলো আর টিটুকে কোথায় যেনো উড়িয়ে নিয়ে গেলো।তবে এলিস কিন্তু দেখতে আহামরি কিছু নয়।বরং তার মনটাই আহামরি অসাধারণ। টিটু বস্তুত এলিসের সেই সুন্দর মনের প্রেমেই হাবুডুবু খাচ্ছে।তবু,যতো যা-ই হোক, দেশকে কি ভুলে থাকা যায়! দেশেমাতৃকার চেয়ে শ্রেষ্ঠ পৃথিবীর আর কিছুই নয় অন্য কিছু নয়।যে-দেশটি ছেড়ে সে চলে এসেছে এই এতোদূর সেই দেশের অবস্থা খুবই করুণ ।টিটুর সন্দেহ হচ্ছে দেশের সার্বভৌমত্বই না আবার হুমকির মুখে পড়ে যায়!১১ একরের সেই হলরুমের ঘটনায় দেশ তোলপাড় হয়ে আছে। সব হিসেবই কি তবে উলটেপালটে গেলো!যদি টিটুর সন্দেহ সত্য হয় তবে, তখন উপায় কী! এসব ভাবনাই টিটু শেয়ার করে এলিসের সংগে। এলিস খুব সহজ সরল মেয়ে।তবে মেধা মোটামুটি মন্দ নয়।সে টিটুকে ভরসা দেয়।বলে- নিশ্চয়ই মানুষ জাগবে ফের ফের জাগবে মানুষ।
কবিতার এই বাক্য এলিস টিটুর কাছ থেকেই শুনেছে।টিটুর কাছ থেকে সে বাংলা ভাষাটাও ধীরে ধীরে রপ্ত করে নিচ্ছে।কিন্তু এলিসের কথায় টিটুর হতাশা কমে না কিংবা বাড়েও না।হতাশা চলমান হয়ে থেকে যায়।টিটু দেশে ফিরে যেতে চায়।দেশের জন্য তার অস্থির লাগে।এলিস দেশে যেতে নিষেধ করে কারণ এর মধ্যেই টিটুর বন্ধু জিলম গ্রেপ্তার হয়েছে।দেশে ফিরলে টিটুও যে গ্রেপ্তার হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।আর গ্রেপ্তার হলে তো কোনো কাজই করা যাবে না।তারচেয়ে বরং সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই দেশে ফেরার কথা ভাবা যেতে পারে।এখন বিদেশের মাটিতে থেকেই দেশের জন্য যতোটুকু সম্ভব কাজ করে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কিছু নেই।
টিটু এলিসকে বলে- সত্যিই কি বিকল্প নেই?
এলিস বলে- আছে।
টিটু বলে- কী আছে?
-দেশের মানুষের কাছে দেশের আসল শত্রুকে চিনিয়ে দিতে হবে।ধীরে ধীরে শত্রুর বিরুদ্ধে জনমত তৈরী করতে হবে।
টিটু জীবনানন্দের ভাষায় বলে- কিন্তু সে অনেক শতাব্দীর মনিষীর কাজ।
-মনিষী লাগবে না। প্রতিটি দামাল ছেলেই হয়ে উঠবে মনিষীদীপ্ত প্রাণ।
এলিসের কথাটা টিটুর মনে ধরে।তার চোখে এক টুকরো আশার বীজ ছলকে উঠতে চায়।কিন্তু ছলকে উঠে পরক্ষণেই যেনো নিভে যায়।এলিস টিটুর মনের এক্সপ্রেশন টের পেয়ে ভাবে:না, হচ্ছে না।টিটুকে আজ অন্যভাবে অনুপ্রাণিত করতে হবে।এলিস টিটুর খুব কাছে এসে টিটুর চোখের দিকে তাকিয়ে ধীরে ধীরে তার গোলাপী গোলাপী ঠোঁট টিটুর ঠেঁটের খুব কাছে নিয়ে আসে।এলিস চাইছে পরের দৃশ্যটি টিটু সম্পন্ন করুক।এলিসের জুলজুল আর আলুথালু এপ্রোচে টিটু মুহুর্তের জন্য একটু কেমন কেমন ফিল করে এবং পরবর্তী দৃশ্য সম্পন্ন করেই চমকে ওঠে।-টিটু কি তখন ঘ্রাণ পায় অন্য কোনো জীবনের যেখানে দেশ নেই কাল নেই শুধু আছে বেঁচে থাকবার এক অনন্ত সৌরভ আর অমরত্বের মতো ক্ষুধা, চিতার ক্ষিপ্রতায় ধাবমান এক হরিণের আত্মসমর্পিত সুখ!

৯২
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন