সই পাতালো কি শরতে আজিকে স্নিগ্ধ আকাশ ধরণী?
নীলিমা বাহিয়া সওগাত নিয়া নামিছে মেঘের তরণী!
অল্কার পানে বলাকা ছুটিছে মেঘ-দূত- মন মোহিয়া
চঞ্চুতে রাঙ্গা কলমীর কুঁড়ি- মরতের ভেট বহিয়া।
সখীর গাঁইয়ের সেঁউতি- বোঁটার ফিরোজায় রেঙ্গে পেশোয়াজ
আসমানী আর মৃন্ময়ী সখী মিশিয়াছে মেঠো পথ- মাঝ।
আকাশ এনেছে কুয়াশা- উড়ুনী, আসমানী- নীল- সাঁচুলী,
তারকার টিপ, বিজলীর হার, দ্বিতীয় – চাঁদের হাঁসুলী।
ঝরা বৃষ্টির ঝরঝর আর পাপিয়া শ্যামার কূজনে
বাজে নহবত আকাশ ভূবনে- সই পাতিয়েছে দু-জনে!
আকাশের দাসী সমীরণ আনে শ্বেত পেঁজা- মেঘ ফেনা ফুল,
হেথা জলে থলে কুমুদে আলুথালু ধরা বেয়াকুল।
আকাশ০ গাঙ্গে কি বান ডেকেছে গো, গান গেয়ে চলে বরষা,
বিজুরীর গুণ টেনে টেনে চলে মেঘ- কুমারীরা হরষা।
হেথা মেঘ পানে কালো চোখ হানে মাটির কুমার মাঝিরা,
জল ছুড়ে মারে মেঘ-বালা দল, বলে- ‘চাহে দেখ পাজীরা!’
কহিছে আকাশ, ‘ওলো সই, তোর চকোরে পাঠাস নিশিথে,
চাঁদ ছেনে দেবো জোছনা- অমৃত তোর ছেলে যত তৃষিতে।
আমারে পাঠাস সোঁদা- সোঁদা- বাস তোর ও-মাটির সুরভি,
প্রভাত ফুলের পরিমল মধু, সন্ধ্যাবেলার পুরবী!’
হাসিয়া উঠিল আলোকে আকাশ, নত হ’ইয়ে এল পুলকে,
লতা-পাতা-ফুলে বাঁধিয়া আকাশে ধরা কয়, ‘সই, ভূলোকে
বাঁধা প’লে আজ’, চেপে ধরে বুকে লজ্জায় ওঠে কাঁপিয়া,
চুমিল আকাশ নত হ’ইয়ে মুখে ধরণীরে বুকে ঝাঁপিয়া।
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন