নির্বীর্য সময়ের ঝুলবারান্দায় অলস বসেবসে
একবুক কষ্টে কেনা আয়েশে
প্রিয় কমলা-কমলা হাতের
সিডিউলমত দুবেলা আঙ্গুরের
এই টসটসে দানা
আর খেতে ইচ্ছে করে না-
শুধুই খেতে ইচ্ছে করে, প্রবলভাবে খেতে ইচ্ছে করে এখন
এ অসভ্য সমাজটার প্রগাঢ় কলংকের পয়জন;
কেবলই সক্রেটিসের মতন অনিবার্যভাবে মরে
ইতিহাসের মতো প্রমাণ করতে ইচ্ছে করে-
আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী কি আমার অভিশপ্ত জন্ম
নাকি বিষাক্ত সমাজ নামক জঘণ্য
এ নষ্ট-গলিত-স্থবির দানবটাই?
-আমি আজ এর সুস্পষ্ট জবাব চাই……
কসবীর অধম নীল চরিত্রের অধিকারী
এই যে সুশীল-সেবক-সমাজ! আমি নাকি তারই
অতি কুলীন গোত্রের
সদস্য এক, প্রায় মিড-লেভেলের!
আমি নিশ্চিত জানি
এবং অন্তর্গত বিশ্বাসে এ কথা মানি-
আমি আমার ক্লাসলেস গোত্রের একদিন হব তাজ
কিংবা কিংবদন্তী একদিন, কিন্তু কেউতো জানল না আজ-
সেই সে অন্তরগত বীজের এক কিংবদন্তী,
যে নাকি
৩ লাখ মানুষের প্রশাসক অথবা প্রশাসক প্রায়,
আজ কতটা অস্তিত্বহীন! কতটা অসহায়!
এই অদ্ভুত নীতিহীন নীতির সমাজে
বাছবিচারহীন উদ্ভট এক রাজ্যে……
নির্জীব পাথরের মত নব্বইটি দিন ধরে
এই বিভ্রান্ত চরাচরে
বন্ধ্যা সকাল-সন্ধ্যায়
কত হাজার কিমি রাস্তায়
কষ্টের ফেরী করেছি কেবল-হরেক রকম কষ্ট!
দিন নষ্ট, রাত নষ্ট, মাথা নষ্ট….
হৃদয়ে কেবলই তাজা রক্তক্ষরণ;
দুঃখের আল্পনা এঁকেছি কেবলই মতুয়া বধুর মতন
মনের আড়ালে অমোঘ নিয়তি মেনেও……
ঐ ঢাউস কর্মমন্দিরের পোষাকি প্রহরী, পরিচয় জেনেও
ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় কুত্তার মতন-
কী-ই যে আইনের অনুশাসন!
মনে হয় আমি তার আজন্ম এক এক্টিভ প্রতিপক্ষ কেউ,
তাই ভিখিরির মতো নাছোড়বান্দা আমি-যেন এক ফেউ-
ঘুরি পিছে পিছে
ধরি হাটুর নীচে
অনুমতি চাই যেতে সেই জাহান্নামে,
যেখানে নামে-বেনামে
বসে আছে পুরোহিত রোবটেরা-
বাজ পাখির মতো শিকারী ঠোঁট তাক করা,
যেন খুবলে খুবলে খাবে অনুভূতি-অস্থি-মাংস-মজ্জা
আমার। তাদের নেই কোন রাখঢাক হায়া-লজ্জা!
সেখানে আরো রুটিন-অপেক্ষা করে আছে
পৌরাণিক মৌলবাদী সেজে
কোন এক গণ্য-মান্য-বরেণ্য,
কেবলই দ্রৌপদীর নান্দনিক বস্ত্র-হরণের জন্য
সমাজটার সোল অথারিটি সে যে!
আমি “কিংবদন্তী” এ সমাজের কেউ না যে
(সত্যি-ই তো আমি কেউ না, ক্লাসলেস গোত্রজ
মামা-খালু নামক যন্ত্রজ
ছত্র-ছায়া নেই যার কপালে
সে তো একবারেই পিএনজি এদেশে একালে)
কোথায় নীতি নৈতিকতা!
কোথায় মানবিকতা!
কোথায় সিভিল সমাজপতি!
কোথায় প্রশাসক কিংবদন্তী!
মিথ্যে সব মিথ্যে, পটে-আঁকা ছবি,
কেবলই রঙিন ফানুস সবই;
নিশ্চিত যাবে একদিন বিষাক্ত হাওয়ায় মিলিয়ে
বড়বেশি ধ্বংসের মধ্য দিয়ে…..
আর কখনো ইচ্ছে করে না আমার-
হেলাল হাফিজের মতো বারবার
এই কষ্ট ফেরি করতে,
এই জারজ দুঃখের আল্পনা আঁকতে
হাজার কিমি বুনো রাস্তায়, করিডোরে,
ভিজিটিং চেয়ারে চেয়ারে……
এখন শুধু ইচ্ছে করে বড়বেশি আগ্রাসী ইচ্ছাতে
চে’ গুয়েভারার মতো ইস্রাফিলের অলস শিঙাটি তুলে নিতে হাতে
(ফেব্রুয়ারি ২০০৪, ঘাটাইল, টাঙ্গাইল)
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন