অভি শেষমেশ রিক্সাওয়ালা ভুমিকায় অভিনয় করে সম্পর্কটা বাঁচিয়ে নিলো। যদিও সব কৃতিত্বটা ডাঃ মৌসুমীর। মৌসুমী যদিও ওদের দুইজনের মানে মিরা আর অভির ভালো বন্ধু সেই কলেজ লাইফ থেকে। তবে অভি আর মিরার বন্ধুত্বটা খেলানা বাটির বয়স থেকে। খেলানা বাটির বর বৌ আজ সত্যি কারের বর বৌ হয়ে গেছে। দুই জনে সফল। আর্থিক অনটন নেই, দুই জনের দুই জনের প্রতি কোন অভাব অভিযোগ নেই। স্বচ্ছ সম্পর্কে দুই জনে দুজন দুজনকে অগাধ বিশ্বাস করে। তাই কোন পরিস্থিতিই তৈরি হবার সুযোগ ছিলো না যার জন্য ওদের সংসার ভাঙ্গার কথা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওদের সংসারটাও ভাঙ্গার মুখে দাঁড়িয়ে পড়লো।
মিরা আর অভির যৌন সম্পর্ক খুব ভালো, দুই জনেই দুই জনের সম্পর্কে উপভোগ করতো ভালো ভাবে। কোন অভিযোগ ছিলো না। কিন্তু সেই দিন একটা অদ্ভুত ব্যাপার ঘটলো।সাধারণতঃ মিরা ডগি স্টাইল পছন্দ করে। কিন্তু সেটাতেও ও তৃপ্তি পেলো না। নিজেই হর্স রাইট করলো। কিন্তু তবুও সন্তুষ্ট হলো না। তিন চার দিন ও অভিকে সহ্য করতে পারলো না।
শেষ একদিন ও বললো, “অভি আমাদের ডিভাইস নেওয়া উচিত, কারণ আমি একটা ভুল করেছি যার জন্য হয়তো আমার আর তোমার সাথে কিছু করতে ভালো লাগছে না। আমার তোমার গায়ের গন্ধ সহ্য হচ্ছে না।”
অভি বললো”ওয়াট রাবিস, তুমি কি বলতে চাইছো আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। আর তুমি কি ভুল করেছো …”
অভিকে জড়িয়ে ধরে মিরা ” আমি একটা ভুল সম্পর্কে জরিয়ে পরেছি,, তাই এখন তোমাকে আর সহ্য হচ্ছে না।”
অভি বুক ফেটে যাচ্ছে। কিন্তু অবুঝ নয়। কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড ও কাজ করে। কিছু সময় উচ্চাকাঙ্ক্ষা এখানে মানুষকে ভুল পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে। অভি কাঁপা কাঁপা গলায় বলল “তাহলে তুমি কি তোমার বস শেখার”বিয়ে করবে ??”
মীরা চিৎকার করে বলে উঠলো” শেখর স্যার সম্পর্কে এরকম ধারণা করতে পারলে কি ভাবে তুমি। উনি আমাকে নিজের মেয়ের মতো দেখে। তোকে বলেছিলাম, উনি আমাকে ওনার পুত্র বধু করতে চেয়েছিলেন।,,”
চেয়ার বসে মীর হাহ হাহ করে কাঁদতে শুরু করল।
পেশায় অভি মিডিয়া সেক্টরে কাজ করে। এবং একটি রাজনৈতিক দলের আইটি সেল সামলায়।সোস্যাল মিডিয়া ইনফ্লায়েন্সার, হিসেবে কাজ করে তাই ওর মাথা যথেষ্ট ঠান্ডা। ও এটুকু জানে কোন বিছানায় একটা রাত কাটালে, বিছানা চাদরটা টান টান থাকে না হয়তো, কিন্তু ভালোবাসার টান একটু কমে না। কারণ ভালোবাসা আর যৌনা উপভোগ এক নয়।
খুব শান্ত ভাবে ও মীর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো ” কি হয়েছে বলো, আর কার সাথে তোমার সম্পর্ক হয়েছে বললো, আমি তোমাকে ভালোবাসি আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে, তাকে বিয়ে দেবো।”
মীরা রেগে গিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো ” স্টুপিড আমি তোমাকে ছাড়াতে চাই কারণ আমি তোমাকে সুখী করতে পারবো না আর তাই। আমি একটা সম্পর্ক এসেছি ঠিক কিন্তু সেটা দূর্ঘটনা, আমি চিনিনা আমি যার সাথে সম্পর্ক করেছি। ” বলে আবার কাঁদতে শুরু করল।
অভি কিছু টা অবাক হয়ে গেলো। কিছু কৌতুহল কিছু ভয় মিশে ওর চোখে মুখে। খুব শান্ত ভাবে তবু ও জিজ্ঞেস করলো ” সোনা কি হয়েছে তোমার আমাকে ঠিক করে বললো।”
মিরা শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো অভিকে। ” সেই দাদাভাইয়ের এনাভারসিতে তুমি টিনার প্রতি একটু বেশি ঝুঁকে পরেছিলে। ওর সাথে বেশি কথা বলছিলে। আমার মনে মনে খুব কষ্ট হচ্ছিলো। আমি একটু বেশি মদ খেয়ে ফেললাম। তোমাকে বাড়িতে আসতে বললাম তুমি এলে না। বাড়িতে ফিরেছিলাম একটা রিক্সা করে, ছেলেটা খুব ভালো। টাল সামলাতে পারছি না দেখে, ও আমাকে ঘর অবধি ছেড়ে দিতে এলো। আমার মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি খেললো। তোমার পুরুষেরা খালি মেয়েদের শরীর উপভোগ করো। শরীর কেনো, পয়সা, ক্ষমতা দিয়ে। আমিও ওকে অনেক পয়সার লোভ দেখিয়ে সেক্স করলাম। কিন্তু তার পর থেকে তোমাকে কেন, আমার অফিসের ক্রেস সন্দীপনকে আমার আর ভালো লাগেছে না। ”
অভি এই ছোট্ট একটা পাগলামী দুর্ঘটনার জন্য সম্পর্ক ভাঙ্গাতে নারাজ। তারচেয়ে বর কথা। একটা রিকশা চালক কাছে সে হেরে যাবে একথা মেনে নিতে পারলো না। ভালোবাসার অনুভূতি মানষিক। তাই সেই দিন ব্যাপারটা মৌসুমী সাথে শেয়ার করলো।
মৌসুমী মীরা সাথে কথা বলে অদ্ভুত ব্যাপার আবিষ্কার করলো। কর্পোরেট অফিস পুরুষরা তাদের পৌরুষালী গন্ধ আড়াল করে দামী দামী গন্ধ দিয়ে। আর রিক্সাওয়ালা গায়ে ঘামের গন্ধটার প্রেম পড়ে গেছে মীরা। সেই থেকে আজকাল অভি মাঝে মাঝে কয়েক ঘণ্টা রিকশা চালায়। তারপর অপেক্ষা করে মীরা জন্য। তারপর মীরাকে নিয়ে যায় বাড়িতে। থুড়ি নিয়ে যায় ঘরে। বন্ধ ঘরে যেখানে এই অভিনয় টুকু বাঁচিয়ে রাখতে পারেছে ওদের সম্পর্কটাকে।
এখন পর্যন্ত লেখাটি পড়া হয়েছে ১৮ বার
যদি লেখাটি সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন