স্বাধীনতা শব্দটি—
বইয়ের পাতায় আর খবরের কাগজে সীমাবদ্ধ দেখেছি;
দেখেছি, টেলিভিশনের রঙিন পর্দায়—
সাদাকালোর নির্মম নয় মাস।

স্বাধীনতা বলতে দেখেছি আনুষ্ঠানিকতার
বর্ণিল চাদরে—রংবাজি আর রকমারি জলসা,
রুদ্ধ হয়ে যাওয়া বাকযন্ত্রে খৈ ফোটাতে দেখেছি স্বাধীনতার;
দেখেছি চোখে-মুখে শঙ্কা,
ছিড়েখুঁড়ে খাওয়ার মতো হুংকার।

রাজনৈতিক নেতাকর্মীর ভাষায় শুনেছি—
স্বাধীনতার স্তুতি, হাহাকার।
হায়! স্বাধীনতা—চোখের-মুখের-পা ও পদের স্বাধীনতা;
পথে-পথে বিরান পাথার!

স্বাধীনতা শব্দটি শুনেছি যতবার:
খুঁজেছি স্বাধীনতা কে ততবার;
খুঁজেছি ঘরে-বাইরে, অলিতে-গলিতে, মার্কেট, স্টেশনে,
খুঁজতে-খুঁজতে বেড়িয়েছি দিগদিগন্তে;
উঠতে-উঠতে উঠেছি আসমান বরাবর,
নামতে-নামতে নেমেছি পাতালপুরে—
শুধু স্বাধীনতাকে খুঁজতে!
খুঁজেছি: পথে-ঘাটে, বস্তিতে, ভিক্ষার ঝুলিতে,
সাহেবের সর্গপুরে, মোল্লা-মৌলভীর মহল্লায়,
শান্তি নগরের চৌরাস্তায়—আবার গরম-পান্তায়।
খুঁজতে-খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে ফিরেছি:
প্রতিষ্ঠানে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, আদালত-উচ্চআদালতে,
সরকারি-বেসরকারি কার্যক্রমে;
শহীদ গাজীর বাড়িতে এবং—স্বাধীনতা নামের সুউচ্চ মঞ্চে!

শেষে এসে দাঁড়ালাম—
আমাদের শহীদদের পাশে, আমাদের ধর্ষিতার অভিজ্ঞতার কাছে, আমাদের ক্ষত-বিক্ষত বাংলার কাছে;
অবশেষে, এসে দাঁড়ালাম—
আমাদের জীবন্ত শহীদ তথা আমাদের মহান বীরের কাছে।
জিজ্ঞেস করলাম—
কেমন আছেন?
কেমন যাচ্ছে সময়?
কেমন আছে—বাংলাদেশ?
বুকের প্রসস্থ কপাট খুলে দিয়ে বল্লেন—
দ্যাখো, দ্যাখো হৃদয়ের ক্ষত—
আমরা কী এমন স্বাধীনতা চেয়ে ছিলাম?
আমরা কী এমন বাংলাদেশ চেয়ে ছিলাম?
আমরা কী মরতে শিখেছিলাম—এমন বাঁচার জন্য!

অতঃপর স্বাধীনতা শব্দটি, শেষগুলি ট্রিগার ছুঁয়ে লক্ষ্যবস্তুকে রঞ্জিত করার পর—
অসহয় বন্দুকের নলের মতো, স্তব্ধ, কোন এক শব্দ মাত্র।

সবিশেষে,
স্বাধীনতা খুঁজেছি প্রিয়ার ঠোঁটে, চিবুকে—
এমনকি মায়ের কোলে, স্তনে!
যা পাওয়ার ছিলো, তা বন্টনে।
কিন্তু, কিন্তু সর্বশেষে—
স্বাধীনতা না পেয়েই ফিরেছি—স্বাধীন বাংলাদেশে!

পরে পড়বো
১৮
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন