আমি কখনো পতঙ্গ হতে চাইনি,
আমি কখনো চাইনি এমন পাখি হতে,
ঝড়ে ডানা ভেঙে গেলে আশ্রয় না পেয়ে, যে পায় আরো সহস্র আঘাত।
কখনো চাইনি এমন চাতক হতে,
যার তৃষ্ণা নিবারণে ধেয়ে আসে মশক ভর্তি হেমলক।
আমি সবসময় মানুষ হতে চাইতাম,
আমি চাইতাম ফুটপাতের কাতারবন্দি জনতা হতে।
অথবা চাইতাম চিরকালীন ছাত্র হতে,
শিখতে চাইতাম সমাজ,শিখতে চাইতাম জগৎ সংসার।
আজ আমার চাওয়া বদলেছে, আশা বদলেছে, বদলেছে স্বপ্নও।
আজ আমি এক টুকরো কংক্রীট হতে চাই।
আমি চাই একটা আস্ত টোল প্লাজা হতে,
হতে চাই কোন এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে,
কিংবা ঝা চকচকে একটি মেট্রোস্টেশন হতে।
তবুও যদি রাস্ট্র আমার কথা ভাবে,
তবুও যদি রাস্ট্র সবার আগে,
আমাকে দেখতে আসে হাসপাতালের বেডে কিংবা মর্গে।
তবুও যদি আমার জন্য ফ্যালে দু ফোঁটা চোখের জল,
আড়ষ্ঠ কন্ঠে কথা শেষ করতে না পেরে পোডিয়াম ছেড়ে চলে যায়!
এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কিছু কী হয়?
কিন্তু না,
আমি মানুষ হয়ে থাকলাম, কীট-পতঙ্গের মতন।
আমি হয়ে থাকলাম ছাত্রসমাজ-
বুলেটের সম্মুখে বুক পেতে রাখা পাখির মতন।
হয়ে থাকলাম ফুটপাতের ফেরি করা হকার-
যে কিনা প্রিয়তমা স্ত্রী, গর্ভধারিণী মায়ের ছবি চোখে ভাসলেও থেমে যায় না,
ঘরে রেখে আসা সন্তানের আহার পথে বিলিয়ে দিয়েও ক্ষান্ত হয় না।
অবশেষে সেও ক্ষান্ত হয়, সে ও থেমে যায়, পড়ে থাকে ফুটপাতে;
রাস্ট্র হতে ছুটে আসা তপ্ত বুলেটের জন্য বুকের বা পাশ হতে কিছুটা রাস্তা ছেড়ে দিয়ে।
অবশেষে সে ও থেমে যায়।
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন