একটি ভ্যালেন্টাইন স্ট্যাটাস
একটি ভ্যালেন্টাইন স্ট্যাটাস
শান্তনূর

গল্প - একটি ভ্যালেন্টাইন স্ট্যাটাস

লেখক: শান্তনূর
প্রকাশ - রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ধরণ: রম্য, হাসির

ছেলেটা সকালে ঘুম ভেঙে বিছানাতে শুয়েই স্টাটাস দিল,
“vallentine a ma baba vai bonke valo basun. tarai apnar asol vallentine.”
তারপর তড়িঘড়ি করে উঠে হাতমুখ ধুয়ে দুটো মুখে দিয়ে গতকাল বাপের সাথে আধাযুদ্ধ করে কেনা হাটু ছেড়া প্যান্টটা পরে, আরেক তরফা যুদ্ধ করে বিশেষ দিবস উপলক্ষে পকেটমানির তিনগুন খসিয়ে বাইকটা নিয়ে ভোঁ করে দে ছুট।

কিছুক্ষণ পর ছেলেটিকে হাইওয়েতে দেখা গেল, লং ড্রাইভে। ব্যাকসিটে বসা পুষ্পশোভিত এক ষোড়শী ললনা।বাইক ছুটছে হাওয়ার বেগে উইড়া উইড়া।রাস্তার বিপরীত দিকের গাড়ি গুলো সাঁই সাঁই করে টেক ওভার করছে ওদেরকে। ওদের গাড়ি চলছে ততো চলছেই,চলছে তো চলছেই………..।
ছেলেটির হঠাৎ মনে হলো সে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে,ক্রমেই গাড়ি স্লো হচ্ছে কিন্তু অসম্ভব রকম ঝাকুনি অনুভূত হচ্ছে।বুঝতে পারল পেছনের টায়ারটা পাংচার হয়ে গ্যাছে, মূহুর্তেই সে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলল।
প্রিয় পাঠক কি ভাবছেন? দেশের দুটো ভবিষ্যত এখানেই শেষ হয়ে গেল?
না ছেলেটির আরো কিছু প্রাপ্তি বাকি আছে তাই ওকে সেদিন সন্ধ্যায়ই দেখা গেল হাসপাতালের বেডে। একটা হাত আর এক পায়ে প্লাস্টার,একটা পা ব্যান্ডেজ দিয়ে পাকানো দড়িতে ঝুলছে সিলিঙের আংটায়।মাথা আর শরীরের বাকি অনেক জায়গাতেও ব্যান্ডেজ। পাশে বসা মা জননী, আঁচলে মুখ ঢেকে কাঁদছেন।দরজার বাইরে তাকিয়েই বুকটা ছ্যাৎ করে উঠল।দুইটা পুলিশ দাড়ানো!! মা বলল, ”তোর বাবা আসতে পারছেনা’, তার নামেও কেস দিয়েছে মেয়েটার বাপ।তখনই ওর মেয়েটার কথা মনে হল ওর। মা বলে চলেছে, ‘ মেয়েটার মাথায় হেলমেট থাকায় ছিটকে পড়লেও তেমন কোন আঘাত লাগেনি; ছিলে, কেটে গেছে।তাও তাদের মেয়েকে কিডন্যাপের মামলা দিয়েছে।মেয়ের বয়স কম বলে তার বক্তব্য নিচ্ছেনা পুলিশ।তা নিয়ে মেয়েটারও নাকি কোন হেল দোল নেই,চুপচাপ শুয়ে আছে। তোর বাবা গেছে উকিলের সাথে কথা বলতে।”
ছেলেটা তখন বুঝতে পারল সকালের ফেসবুক স্ট্যাটাসের চরম সত্যতা।সে সত্যি সত্যিই বুঝতে পারল, মা,বাবা ই সত্যিকারের ভালবাসা,
“””””tarai asol vallentine.””””

এখন পর্যন্ত লেখাটি পড়া হয়েছে ৬২ বার
যদি লেখাটি সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন