আজ হাটবার।বৈশাখের শেষ কালের এক সন্ধ্যা।ভালই মেঘ করেছে, আজ মনে হয় কাল- বৈশাখী হবে।কলিম খুড়ো লুঙ্গির থলেই সদাই নিয়ে জোর পায়ে বাড়ি ফিরছে গ্রামের পথ ধরে। মনটা ভালই খারাপ।হাটে যাওয়ার কালে দেখে পথের কিনারে আইজুদ্দিনের নারকেল গাছটাতে জটিয়ে নারকেল ধরেছে। যে পরিমান নারকেল ধরেছে তা তার নিজের পাঁচ টা গাছেও নাই।সমাজে কিছু মানুষ থাকে যারা পরের ভাল দেখলেই ছ্যাত করে ওঠে,কলিমুদ্দিন সেই দলের সভাপতি। সে মনে মনে বদদোয়া করতে করতে বাড়ি ফিরছে, যেন আজ বিরাট ঝড় হয় আর আইজুদ্দিনের নারকেল গাছটা ভাইঙ্গা পড়ে।
এরই মাঝে বাতাসের বেগ বেড়ে গেল, মাঝে মাঝে বিদ্যুচ্চমকাচ্ছে। সন্ধ্যা ঘুরে গেছে।হঠাৎ কলিম খুড়ো আবিষ্কার করল সে এখন আইজুদ্দিনের নারকেল গাছটার খুব কাছে চলে এসেছে।নারকেল গাছের দিকে চরম অনিচ্ছা সত্ত্বেও আরেকবার তাকালো,তাকিয়েই চোখ বড়বড় হয়ে গেল,হঠাৎ গাছের নারকেল গুলো ঝলমলে আলোয় ঝলসে গেল,তার বুকটা ধ্বক করে উঠল।
পুরো একদিন পর কলিম খুড়ো চোখ খুলে দেখে সে বিরাট এক দালানের মেঝেতে শুয়ে আছে,তার চারপাশ দিয়ে আত্মীয় স্বজন ভীড় করে আছে,সবার চোখেই উৎকন্ঠা আর জল।আশপাশে তার মত আরো অনেকেই শুয়ে আছে। বুঝল সে হসপিটালে আছে।চারপাশের সবাই তাকে যেন কি বলছে,সে কিছুই শুনতে পাচ্ছে না। তার মনে পড়ে গেল কাল সন্ধ্যার কথা। কি জোরেই না বাজটা পড়েছিল নারকেল গাছটার উপরে!হতচ্ছাড়া বাজটা তার কানদুটোরও বারোটা বাজিয়ে গেছে।
______________
মোরাল অব দি স্টোরিঃ পরের জন্য কাটা খালে নিজেও পড়া লাগে,কখনো সাথে সাথে কখনো সময় সাপেক্ষে।
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন