এখনও কি জল ঝরছে ওই পোড়া মাটির কলস থেকে?
নাকি ফাটলগুলো সব মানচিত্রের রেখা হয়ে বিদ্রুপ করছে আমায়?
আমি তো চেয়েছিলাম শিমুল তুলোর মতো নিশ্চিন্তে ভাসতে,
অথচ বাতাসের আঙুলে এখন শুধু ধারালো নখের আঁচড়!
বলতে পারো, আর কতদিন এই হিন্দু হওয়ার ছাপ নিয়ে টিকে থাকা যাবে?
এই ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের উঠোনে আস্ত একটা তুলসী মঞ্চ কি ভারী হয়ে উঠছে?
আমার পৈতেটা কি এখন কেবলই একটা ফাঁস, যা দিনরাত আমায় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়ায়?
নাকি আমার কপালে আঁকা তিলকটা আদতে একটা নিশানা—যা লক্ষ্য করে ধেয়ে আসে অন্ধকার?
আমি তো খুদকুঁড়ো চেয়েছিলাম, কোনো অট্টালিকার সিংহাসন নয়!
অথচ আজ আমার শঙ্খধ্বনি শুনলে শেয়ালেরা কেন সমস্বরে ডেকে ওঠে?
গঙ্গার পলিমাটি কি তবে বিস্বাদ হয়ে গেল লবণের কামড়ে?
নাকি ধূপকাঠির ধোঁয়া এখন চিতার গন্ধ বয়ে আনে ঘরে ঘরে?
শোনো হে আকাশ, শোনো হে এই ভিজে মাটির সর্দাররা—
আমি এই ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের এক কোণে একটু রোদ্দুর চেয়েছিলাম!
যদি সেই রোদেও এখন সাম্প্রদায়িক জং ধরে যায়,
তবে আমি যাব কোথায়? কোন অতলে লুকাবো আমার এই অপরাধী অস্তিত্ব?
আমার জপমালার দানাগুলো এখন কান্নার মতো খসে খসে পড়ছে দোরগোড়ায়।
কেউ কি আছে, যে এই ভাঙা প্রতিমার চোখে আবার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবে?
নাকি এই টিকে থাকাটাই এখন শেষতম তামাশা—
যেখানে আমি নিজেই নিজের শোকযাত্রার প্রধান পুরোহিত?
হে মহাকাল, তোমার ডুগডুগি বাজাও জোরে, আরও জোরে!
যাতে মিলিয়ে যায় এই ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের ত্রাস আর দীর্ঘশ্বাস।
আমি তো শুধু মানুষ হতে চেয়েছিলাম, হিন্দু হওয়াটা কি তবে নিছকই এক ভুল পোশাক?
বলো, উত্তর দাও, নাকি তুমিও আজ মৌনব্রতের আড়ালে লুকানো এক কসাই?

প্রসূন বাবু আপনার আর কোনো যোগাযোগ নেই কেন? একেবারে চুপচাপ। আমাদের সাথে একটু যোগাযোগ রাখুন।