মানুষের মানচিত্র ১৭

রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

আমার লাটাই সুতা হাতে র’লো ঘুড্ডিখানা হারালো কোথায়? লিলুয়া বাতাস পেয়ে জীবনের স্বপ্ন-ঘুড়ি উড়ায়ে ছিলাম, হায়রে আকাশ তার অঙনে ডাকলো আজ নীলের নিলাম, কারা যেন ঢেকে দিলো রোদের সজারুটারে মেঘের কাঁথায়।

সব কথা ফুরোলো না, চোখ ভ’রে সব দ্যাখা হলো নাকো দ্যাখা, আশ্বিনের মেঘের মতোন ঝ’রে গেল চোখের পলকে সব আকাংখার জল, গেল শিশিরের মতো ঝ’রে গহিন খোয়াব। সব কথা ফুরোলো না, হৃদয়ের সব তৃষ্ণা হলো নাকো লেখা।

দিনের আহার শেষে ধবল পাখিটি আর ফিরলো না নীড়ে। সব বাঁশি বাজলো না, পেলো না হাতের ছোঁয়া সবকটি তার, ফসল বোনার আগে ভেঙে প’ড়ে গেল জলে গাঙের কিনার। বুকের শিখাটি জ্ব’লে উঠলো না বেদনার অন্ধকার ছিঁড়ে-

গাঁয়ের হালোট বেয়ে গরুগুলো ঘোরে ফেরে।হাটবারে আসে। জাংলা থেকে শিম পাড়ে ঘরের নোতুন বউ, মন উচাটন। খেয়াঘাটে লোক জমে। ওপাড়ায় চুরি হয়। থামে না জীবন- গাঙের উজান স্রোত চিরকাল যেন এক কালো নৌকো ভাসে।

সব কথা ফুরোলো না এই কথা ফুরোবে না, তবু একদিন দিনের আহার শেষে ধবল পাখিটি আর ফিরবে না নীড়ে, দুই ফোঁটা নোনাজল মিশে যাবে জীবনের অগনন ভীড়ে। জোয়ার ভাটায় নদী অবিচল শুধে যাবে পৃথিবীর ঋন।।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১০৫ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন