মানুষের মানচিত্র ২

রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

পাখির নাহান ডাকো । মাঝরাতে ডাক দাও পাখির গলায় আমি কি বুঝি না ভাবো? কাতলা মাছের মতো ঘাই মারে বুকে, ওই ডাক ঘাই মারে রক্তে-মাংশে। ভাবো ঘরে আছি সুখে। আহারে পোড়ার সুখ- তুফানের গাঙ দেখে মাঝি সে পালায়।

বুড়ো ভাতারের ঘর কোন সুখে করি তুমি বোঝো না নাগর? পাখির নাহান শুধু ডাক পাড়ো মাঝরাতে ঘরের কিনারে। হাঁপানির চোট খুব গরম তেলের জাব দিতে হয় তারে, আমার হাঁপানি থাকে বুকের তুষের নিচে অনল-সাগর।

সারাদিন রান্নাঘরে। একপাল পোলাপান তাদের যতন। আর তিন বউ তারা দিন-রাত পান খেয়ে মুখে দেয় শান। তাদের শানানো কথা গতর জ্বালায়ে ছাড়ে, জ্বালায় পরান। আহারে পোড়ার সুখ! দিন কাটে, রাত তা-ও দিনের মতোন-

রাত্তির কাটে না আর। দেহের আগুন নেভে, পরান নেভে না। কোনদিন শখ হলে কাটা ঘায়ে ফের তিনি ছিটান লবন, দিনভর দেহ জ্বলে, সারারাত জ্বলে এই নওল যৈবন। পোড়ার জীবন নেবে, পোড়া-কপালিরে তবু মরন নেবে না…

পাখির নাহান কেন ডাক দাও নিশিরাতে? বিহান বেলায় যদি পারো ডাক দিও, ডাক দিও রোদ্দুরের তাতানো দুপুরে, কেমন ছিঁড়তে পারি শিকলের শিক দেখো জীবন-নূপুরে গান তুলে কেমন আসতে পারি স্বপ্ন-ধোয়া হৃদয় তলায়।।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১০৫ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন