মানুষের মানচিত্র ৯

রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

শিঙেল বয়ারগুলো সারাদিন জলে ডুবে ঝাপটায় মাথা। দু-চারিটি ধোড়াসাপ ভয়ে ভয়ে ঘোরে ফেরে খালের কিনারে। মাছ খায়। পাড়ে কিছু গোড়াই মল্লিক আর খয়েরি শালিক- ভাবো তো এমন দৃশ্য কবে তুমি দেখেছিলে, কতোকাল আগে?

গোরুর বাথালে এক শ্যামলা রাখাল তার কী সুরেলা বাঁশি মনে পড়ে রোদের পাহারা-ঘেরা দূর এক বিরান প্রান্তরে সেই বাঁকা ঝাউগাছ,রাজা-প্রজাপতি আর ঝাঁক ঝাঁক টিয়ে? মহুয়ার পালা শুনে কী যে কষ্ট বুকে নিয়ে ফেরা- মনে পড়ে?

জীবনের খোলা রাতে আজো ফুরোয় না সেই মহুয়ার পালা, হোমরা বাইদ্যার রোষ ফেরে আজো মহুয়ার পেছন পেছন, বিষের খঞ্জর বেঁধে স্বপ্নবান জীবনের চাঁদ সদাগর- বুকের খোয়াব নিয়ে জীবনের ঘোরতম আঁধারে পালাই

খঞ্জর ছাড়ে না তবু। কী দিয়ে ফেরাবো এই বিষের খঞ্জর? নাচের মুদ্রার মধ্যে ঝলোমলো কোরে ওঠে মৃত্যুর সমন, ঢোলের শব্দের মধ্যে বেজে ওঠে ঘাতকের অনিবার্য রোষ। বিষের খঞ্জর আমি কী দিয়ে ফেরাবো বলো, কী দিয়ে ফেরাবো?

মরা নদীটির পাড়ে এক শংখচিল কাঁদে। দুপুর গড়ায়। কে যেন আকাশে ভাঙে একরাশ শাদা-কালো মেঘের শিমুল। রাত নামে। অন্ধকার ঘিরে আসে বাইদ্যার দলের নাহান বিষের খঞ্জর হাতে- এ জীবনে ফুরায় না মহুয়ার পালা।।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১৩২ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন