শংকর ব্রহ্ম

গল্প - কবিতা লেখা

শংকর ব্রহ্ম
মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪ ভালোবাসা

কবিতা লেখা
শংকর ব্রহ্ম

আমার ঘরে এ.সি ম্যাসিন নেই। গরমে ঘুমোতে পারছিলাম না। ফ্যানের হাওয়া আগুনের হল্কার মতো লাগছিল। কিছুতেই ঘুম আসছিল না। একটা সিগ্রেট ধরিয়ে জানলায় কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। মুখ দিয়ে একরাশ ধোয়া ছাড়তে ছাড়তে কবিতার কথা ভাবছিলাম।
এমন সময় এক পরি এসে বসল জানলার পাশে, বললো আমায়, কি নাম তোমার?
আমি রসিকতা করে বললাম, কবি।
– তুমি কবিতা লেখো বুঝি?
আমি গর্ব করে বুক ফুলিয়ে বললাম, লিখি তো …
– তবে আমায় নিয়ে একটা কবিতা লেখো তো দেখি?
– কি করে লিখবো,আমি কি তোমায় চিনি,
না জানি?
– কবিতা লিখতে গেলে বুঝি চিনতে জানতে হয়?
– তা তো হয়ই …
– কেন তোমার কল্পনা কি ডানা মেলে না আমার মতো, বলেই সে তার দুই ডানা ঝেরে দিল, আমার গায়ে এসে লাগল এক হিমেল পরশ।
– আছে, তবে সব সময় মেলি না …
– কেন, ভাঙা নাকি?
– না না, আমি প্রতিবাদ করে উঠি
– তা, এতো চিৎকার করে বলবার কি আছে? নেড়ে দেখাও তবে আমার মতোন করে এই ভাবে। সে আবারও তার দুই ডানা ঝেরে দিতেই, সারা শরীর হিমেল পরশে কাঁপন ধরলো ।
আমি আমার কল্পিত ডানাদুটি নাড়াতে গিয়ে দেখি, ডানা দু’টি পাথরের মতো ভারী, কিছুতেই নাড়াতে পারছি না।
-কি হলো? পরি জানতে চায়।
আমি বলি, নড়ছে না তো …
– তা হলে তুমি কবিতার কাছে পৌঁছাবে কি করে?
– কবিতাই আমার কাছে আসবে, আমি জানি।
– তাই নাকি? যেমন আমি এসেছি? বলেই, পরি অদ্ভুত ভাবে হাসল।
আমি তার কথার উত্তরে হাসতে গিয়ে, দেখলাম চোয়াল ভারী শক্ত হয়ে গেছে।
হাসির বদলে, মুখটা যেন বিকৃত হয়ে ভেঙচি কাটছে।
– আমিই কবিতা, বলে হাসতে হাসতে পরি উড়ে গেল। আমি আহাম্মকের মতো, সে’দিকে তাকিয়ে রইলাম।
আমার কবিতা লেখা আর হল না।

১২৩
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন