আমার জন্য একটুখানি কবর খোঁড়ো সর্বসহা
লজ্জা লুকোই কাঁচা মাটির তলে
গোপন রক্ত যা-কিছুটুক আছে আমার শরীরে,
তার সবটুকুতেই শস্য যেন ফলে।
কঠিন মাটির ছোঁয়া বাতাস পেয়েছি এই সমস্ত দিন
নীচে কি তার একটুও নয় ভিজে?
ছড়িয়ে দেব দু-হাতে তার প্রাণাঞ্জলি বসুন্ধরা,
যেটুকু পাই প্রাণের দিশা নিজে।
ক্ষীণায়ু এই জীবন আমার ছিল শুধুই আগলে রাখা
তোমার কোনো কাজেই লাগে নি তা–
পথের কোণে ভরসাহারা পড়ে ছিলাম সারাটা দিন
আজ আমাকে গ্রহণ করো মিতা।
আর কিছু নয়, তোমার সূর্য আলো তোমার তোমারই থাক
আমায় শুধু একটু কবর দিয়ো
চাই না আমি সবুজ ঘাসের ভরা নিবিড় ঢাকনাটুকু
মরাঘাসেই মিলুক উত্তরীয়।
লজ্জা ব্যথা অপমানে উপেক্ষাতে ভরা আকাশ
ভেঙেছে কোন্ জীবনপাত্রখানি–
এ যদি হয় দুঃখ আমার, তোমায় নয় তো এ অভিযোগ
মর্মে আমার দীর্ঘ বোঝা টানি।
সেদিন গেছে যখন আমি বোবা চোখে চেয়েছিলাম
সীমাহীন ওই নির্মমতার দিকে–
অভিশাপ যে নয় এ বরং নির্মমতাই আশীর্বাদ
হে বসুধা, আজ তা শেখে নি কে।
রক্তভরা বীভৎসতায় ভরেছে তার শীর্ণ মাটি
রিক্ত শুধু আমাদের এই গা-টা
টানাটানা চক্ষু ছিঁড়ে উপচে পড়ে শুকনো কাঁদা
থামল না আর মরুবালুর হাঁটা!
যে পথ দিয়ে সূর্য গেল ছায়াপথও তার পেছনে
হারিয়ে যায় লুকিয়ে যায় মিশে
ঘোড়ার ক্ষুরে থিঁতাল বুক অলজ্জ-সে আলোর ধারা
দীপ্ত দাহ ভরেছে চোখ কিসে!
কুণ্ডলিত রাত্রিটা আজ যাবার সময় বলল আমায়
‘তুমিই শুধু বীর্যহারার দলে,
ঋজু কঠিন সব পৃথিবী হাড়ে-হাড়ের ঘষা লেগে
অক্ষমতা তোমার চোখের পলে।’
নিবেই যখন গেলাম আমি, নিবতে দিয়ো হে পৃথিবী
আমার হাড়ে পাহাড় করো জমা–
মানুষ হবার জন্য যখন যজ্ঞ হবে, আমার হাড়ে
অস্ত্র গোড়া, আমায় কোরো ক্ষমা।
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন