রাসেল নির্জন

কবিতা - মৃত্যু বিলাপ

লেখক: রাসেল নির্জন

দূর পাহাড়ের সুউচ্চ চূড়ায় মন ছুটে যায়,

গাঙ্গচিলের মত ডানা মেলে উড়ে,

বদ্ধ শহরের কোলাহল হতে মন চায় যেতে

সবুজের মাঝে উড়ে উড়ে ঘর ছেড়ে।

সুদূরে চোখ মেলে দাড়িয়ে থাকি

একলা একা বারান্ধায়,

একাকি মেঘের মত ভেসে

নীল আকাশের গাঁয়।

সাগরের ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেসে

গোধূলির আকাশ বাতাসে ছটফট করা মন,

গভীর নিঃশ্বাসে জীবনের আহাজারি

মিটিমিটি একা জ্বলা শুকতারার মতন!

চারপাশের হোঁচট খেয়ে ভদ্রতা হারালাম,

উস্কানিতে তপ্ত বালুকাবেলায় দাঁড়ালাম!

আমার মন উড়ে যায়, ডানা মেলে পাখির মত

ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে অরণ্য হাসে,

গভীর ঢেউ জোয়ারের মত ফিরে আসে

খররৌদ্রে পা ভিজে যায় জলের আবেশে!

বাতাস আমাকে সঙ্গ দিতে রাজি

সাগরে জলের মিষ্ট আওয়াজ শুনি;

আমি হৃদয়ে তার উপস্থিতি চেয়ে

ফিরে এসে পাই পাপিষ্ঠ পদধ্বনি।

সেই হলুদ ফুলের উপর স্বয়ং স্থির

ছোট্ট প্রজাপতি কি আনন্দে,

তখন আমি হৃদয়ের গভীরে শুনি

আহত সুর ধূসর গোধূলির ফুটপাতে।

ঈগলের পিছু ধাওয়া করে কাক

সে দ্রুতগতিতে প্রস্থান করে উচ্চ আকাশে;

ক্লান্ত পাখায় ঝাঁপিয়ে কাক চলে যায়,

কাকের ছানা হঠাৎ চমকে ওঠে ঝুলে আসে বাতাসে।

সন্ধ্যার আকাশ মেঘের মত অন্ধকার

বন্য ডাহুক দ্রুত ছুটে আসে;

রাতের পাখিগুলো সুরে সুরে ডাকে

দূর হতে আসে শিয়ালের হাঁক ভেসে।

দূরের জঙ্গলে ক্লান্ত পথ চলে গেছে,

বটবৃক্ষের গোড়ালিতে পথিক বসে গেছে,

গোধূলির বর্ণালী-ধূসর ছিল,

সমস্ত মানবজাতি যে একদা

বনছায়ায় ভুতুড়ে ছিল,

রাতের জনশূন্যতায়

তাদের গৃহস্থালি আগুন চেয়েছিল।

জীবাণু ও জন্মের প্রাচীন স্পন্দন

পৃথিবীর প্রতিটি আত্মা তোমারই সৃষ্ট,

শতাব্দীর মৃতদেহ তীক্ষ্ণ মাটিতে ক্ষতবিক্ষত

বাতাসে মৃত্যু বিলাপ তবু তারা পথ ভ্রষ্ট।

এখন পর্যন্ত লেখাটি পড়া হয়েছে ১৩৬ বার
যদি লেখাটি সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন