এই আবছা অন্ধকারে একটা ম্লান বাতির আলোয় তোমার মুখ এ যদি দুঃখের বর্ণনা হয় আমি তবু এখানে দাঁড়িয়ে পড়ব না ওই নিরালায় যদি সুখও আলোকিত হয়ে থাকে আমি আর তার জন্যে অপেক্ষা করতে পারব না অনেক সুখের অন্তঃসারশূন্যতা আমার জানা হয়ে গেছে যে-সব দুঃখ আমাকে রক্তক্ষরণের কন্টকপথে নিয়ে গেছে অনেকবার তাদেরও শেষাবধি অপরিহার্য বলে মনে হয়নি আমার
সুখ কোন তৃপ্তি নয় আমি জেনে গেছি দুঃখকে সমভাবে দেখতে গিয়ে দেখেছি তা ভাগ করে নেওয়া যায় না প্রত্যেকের দুঃখ আপন আপন ক্রসের মত বহন করে নিয়ে যেতে হয় আপন মরুভূমির দিকে ওপারের ফুটপাথে যে ফুটপাথবাসী ফ্লেক্সের তলায় নির্মম নখের নীচে উত্তাপের জন্যে যুদ্ধ করছে রাস্তা পার হয়ে আমার বেদনা এ ফুটপাথ থেকে তার ফুটপাথে সত্যি কি পৌঁছতে পারে ?
তবু অনেক দুঃখের বিষন্নতা এক এক সময়ে তাদের ভার হারিয়ে ফেলে বসন্তের শিমুল ফুল যেমন কোনও জন্মবেদনায় দীর্ন হয়ে তার গর্ভের প্রশ্রয় ছিন্ন করে নির্ভার তুলার শুভ্রতা পায় কত দূরের বিস্তৃতির বাতাস তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় আমিও সেরকমই চলেছি সেই দুঃখহীন দীর্ঘশ্বাসের হাওয়ায় ভর দিয়ে নিশ্চিহ্নের দিকে.
কবি : সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
কাব্যগ্রন্থ : ভাঙা পথের রাঙা ধুলায়
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন