নদী দেখলেই ভেতরে জলকেলি উৎসব
একদিন তুমি বলেছিলে;
এই নদীতে একটা সাঁকো হলে
একসাথে পারাপার হবো, উৎসবে রঙিন হবো,
তোমার জন্য পাঁজরের হাড় আঁটিয়া সাঁকো বানালাম
অস্থি চিড়গোড় করে তুমি হেঁটে যেতে,
জলকেলি উৎসব হয়নি কখনো,
তবুও জলোচ্ছ্বাস ভেঙেছে নদীর দু’পাড়।
আমরা তখন বিরামহীন চঞ্চল হৃদয়
চুলের সিঁথির মত সরু পথ, দুধারে কাঁটাকুঞ্জ
সন্ধ্যা দুপুর হাতের মুঠোয় স্বপ্নমায়ায়
বিপন্ন সময় করেছি পার
এক মাঘীপূর্ণিমায় তুমি বলেছিলে;
আকাশজুড়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র হবে, তুমি তাই হলে;
আমি যুগিয়েছি তোমার শরীরজুড়ে বিকিরণ রশ্মি;
তবুও, আমি অমাবস্যার অন্ধকারে বিশ্বাস কুড়োই ।
তুমি বলেছিলে;
পাহাড় চড়বে, উদরে ভাসবে মেঘমল্লিকা
শিরদাঁড়া উঠের পিঠের মত মেরুদণ্ড কুঁজো করে
সিঁড়ি করে দিয়েছি, শুধু তোমার জন্য,
তর তর করে ওঠে গেছো উপরে
তোমার নাভিপদ্ম আজ ভাসমান সমুদ্র,
আমি এখনো মেরুদণ্ড সোজা করতে পারিনি,
সময়গুলো যেন আজ কষ্টের ভেতরে বুকেহাটা
বিষধর সরীসৃপ।
আমরা তখন শুধুই স্বপ্ন দেখি;
ভিখিরির চোখে শস্যের দানার মত
উদাসীন এক অবিমিশ্র বিকীর্ণ স্বপ্ন,
চলন বিলেপদ্মপাতায় ভেসে যাওয়া উষ্ণ আলিঙ্গন।
ক্লান্ত সময় পেরিয়েছি বীতস্পৃহ
মহানগর চষেছি উদভ্রান্ত নেশায়
আজ বুকের শহর ট্রয়যুদ্ধের কুরুক্ষেত্র
রক্তশিরার রন্ধ্রপথে হাহাকারের তপ্তজ্বালা।
তবুও, তোমার জন্য এখনো ভ্রান্তপথে আমি, একেলা
তুমিতো সব পেয়েছো, পেয়েছো চাঁদের ঠিকানা
আমার জন্য শুধুই বর্ষার বেনোজলে সাঁতার কাটা।
তোমার যজ্ঞযাত্রায় শ্রীক্ষেত্র উন্মোচিত হলো
অবশেষে তুমি সার্থক প্রান্তিক চাষি
জয় করছো পার্থিব স্বাপ্নিক খেয়াল
আমি আছি এখনো, অনীহায় বেঁচে থাকা
নাভিশ্বাসের চরম গ্লানিতে শুধু কষ্টের প্রহর তাড়াই
নষ্ট সময়ের প্রতিকৃত, এক বিপন্ন মানব
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন