আমি আজ ভীষণ ক্লান্ত,
কারণ প্রতিটি ভোরে
আমাকে পরতে হয় নতুন মুখোশ,
যেন রাতের স্বপ্নগুলো
কেউ চিনে ফেলতে না পারে।
আলো ফুটে ওঠে,
কিন্তু তার দাঁতও ধারালো—
মুখোমুখি হলে মনে হয়,
আমি যেন এক অদৃশ্য শিকার,
যাকে প্রতিদিন একটু একটু করে
খেয়ে নিচ্ছে সভ্যতার ক্ষুধা।

মুখোশের দাঁতে,
আমার গালের চামড়া ছিঁড়ে গেছে বহুবার,
কিন্তু ক্ষতের জায়গায় জন্ম নিয়েছে
নতুন অভিনয়, নতুন চিত্রনাট্য, নতুন ছায়াছবি,
যেখানে আমি নিজেই
নিজের চরিত্র চিনতে পারি না।

প্রতিটি হাতের তালুতে
লেগে আছে অন্যের মিথ্যার ধুলো,
প্রতিটি কানে বাজে
নকল স্নেহের করতালি,
এমনকি আয়নাও এখন
আমার জন্য প্রতারণার শিক্ষক—
সে আমাকে আমার আসল মুখ দেখায় না,
বরং দেখায়
যে মুখ সমাজ দেখতে চায়।

রূপের দাঁত যত চকচকে,
তত গভীর ক্ষত করে,
আর সেই ক্ষতের ভেতরে জন্ম নেয়
কালো ফুল—
যা শুধু ভেতর থেকে
আমাকে গিলে খায়।

আমি জানি না
শেষবার কবে আমি
অভিনয় ছাড়া হাসি দিয়েছি,
বা কবে কাঁদতে গিয়ে
চোখের জলকে ভয় পাইনি।

আমি শুধু চাই
একটি মুখ, যেখানে দাঁত নেই,
একটি স্পর্শ, যা ছদ্মবেশ চেনে না,
একটি শ্বাস, যা কোনো অভিনয় জানে না।
কিন্তু হয়তো তা-ও
শুধু কবিতার ভেতরেই জন্ম নিতে পারে—
যেমন আজ আমি জন্ম দিয়েছি এই কবিতাকে,
নিজেকে প্রমাণ করার জন্য
যে আমি এখনো পুরোপুরি মৃত হইনি।

পরে পড়বো
৩৮
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন