কৃষ্ণ মেঘে ঢাকা আকাশ,
বৃক্ষের ডালে ঝুলে থাকা বেওয়ারিশ রক্তের দাগ,
হেমন্তের শেষ বিকেলের মতো নিস্তব্ধ…
তবু, বাতাসে এখনো বিদ্রোহের গন্ধ!
বনের নিস্তব্ধ ছায়ায় জন্ম নিল এক চিৎকার,
এক সিংহ, এক চিতা, একদল হরিণ,
ভালুকের ভয়ার্ত নিঃশ্বাস ভেদ করে বলে উঠল—
“স্বাধীনতা চাই!”
দেখো, শিয়ালেরা তখনও ছায়ায় ছিল,
তারা জানে, আগুনটা লাগতে দাও,
আগুনটা তীব্র হোক, রক্ত গরম হোক—
তারপর ছাই থেকে উঠে গদির খেলায় নামতে হবে!
রক্ত গড়াল!
কোথাও খরগোশের থেঁতলানো শরীর,
কোথাও পাখিদের ছিন্ন ডানা,
কারও চোখ উপড়ে নিয়েছে বুটের আঘাত,
কারও জিহ্বা কেটে নিয়েছে নখরধারী শাসক!
এখানে রাজপথের ধুলো আজ রক্তের জলে স্নাত,
এখানে প্রতিটি শিরা ছিঁড়ে বেরিয়েছে অনন্ত কষ্টের শব্দ!
তারপর?
রাজ্য মুক্ত হলো, বনের রং পাল্টালো,
শিয়ালেরা ঝোপ থেকে বেরিয়ে এলো,
তারা দাঁত কেলিয়ে বললো—
“এই যে, আমাদের যুদ্ধজয়!”
খরগোশেরা তাকিয়ে রইল শূন্য চোখে,
তাদের ভাইয়ের রক্তে ভিজে থাকা মাটি আজও উষ্ণ,
তাদের কণ্ঠ রুদ্ধ, শিয়ালেরা গর্জন করে বলে—
“এখন আমাদের সময়! শাসন আমাদের!”
সিংহের গদিতে শিয়াল বসলো,
চিতার জায়গায় এল একদল হায়েনা,
আর অন্ধকারের গভীর থেকে নিঃশব্দে হাসল ভালুকেরা—
কারণ তারা জানে,
“রাজা শুধু পোশাক পাল্টায়, শাসন বদলায় না!”
বৃষ্টি এলো।
রক্ত ধুয়ে দিল পথের ধুলো,
তবু, গাছের ডালে এখনও ঝুলে আছে খরগোশের খুলি,
তবু, বাতাসে ভাসে সেই শেষ চিৎকার—
“এই কি আমাদের বিপ্লব?”
শিয়ালেরা তখন গা বেয়ে উঠে গেছে স্বর্ণসিংহাসনে,
তারা নতুন পতাকা ওড়াচ্ছে, নতুন শ্লোগান তুলছে,
তারা ভুলিয়ে দিতে চায়—
“যে রক্তে রাজ্য রঙিন, সেই রক্তের গল্পটাই আজ হারিয়ে গেছে!”
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন