“আপনি যা জানেন তা ৯৯% ভুল!”
—
অধ্যায় ১: রহস্যময় ডাক।
আলী চাচার জীবনটা ছিল একদম সাধারণ।
প্রাত্যহিক কাজের ব্যস্ততা, পরিবারের ছোটখাটো ঝগড়া, বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-আড্ডা—সবকিছুই শান্ত, ধীর ছন্দে চলছিল।
কিন্তু এক রাত হঠাৎ ঘটে গেল অদ্ভুত ঘটনা।
একটি অদ্ভুত কণ্ঠ, নীরবতা ভেঙে, আলী চাচাকে ডাকল—
“আলী… আসো।”
প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, এটি তার কল্পনা।
কিন্তু কণ্ঠটি বারবার স্পষ্টভাবে ডাকল।
আলীর বুক কাঁপল, তিনি অনুসরণ করতে লাগলেন।
প্রতি ধাপেই হৃদয় কাঁপছে।
কয়েক মিনিটের হেঁটে পৌঁছালেন একটি গম্বুজের সামনে।
গম্বুজের দরজায় লেখা—
“যে সত্য তুমি জানো, তা ৯৯% ভুল।”
এটি শুধু এক দরজা নয়।
এটি যেন ভবিষ্যতের নিজস্ব ডাক, যা তাকে তার জীবন ও মিথ্যার সঙ্গে মুখোমুখি করবে।
—
অধ্যায় ২: মিথ্যার দরজা
ভেতরে ঢুকতেই আলী চাচা বুঝলেন—এখানে স্বাভাবিক বাস্তবতা নেই।
এক বিশাল শূন্যতা, যেখানে আলো ও ছায়ার খেলা চলছে।
দূরে মঞ্চে ফুটে উঠছে অতীত, যা তিনি ভুলে গিয়েছিলেন।
একজন অজানা লোক বলল—
“যে সত্য তুমি জানো, তা মিথ্যা।
এখানে তুমি মিথ্যার উৎস দেখতে যাবে।”
প্রথম দৃশ্য—একজন মানুষ আগুন বানায়নি, কিন্তু ভয়ে বলল বানিয়েছে।
ভয় থেকে জন্ম নেওয়া প্রথম মিথ্যা।
দ্বিতীয় দৃশ্য—একজন মা শিশুকে বলল,
“এটা নিজে ভেঙে গেছে,”
যদিও প্রকৃতপক্ষে বাবা করেছে।
মমতার মিথ্যা।
তৃতীয় দৃশ্য—এক যুবক বলছে, সে সফল হয়েছে,
কিন্তু সত্য নয়।
নিজেকে বড় দেখানোর মিথ্যা।
আলী চাচা উপলব্ধি করলেন—ভয়, দুর্বলতা, অহংকার, আবেগের বিকৃতি দিয়ে তৈরি হয়েছে পৃথিবীর সমস্ত মিথ্যা।
এবং এই মিথ্যার বীজ সত্যের দেয়াল ভেঙে দিতে সক্ষম।
—
অধ্যায় ৩: মিথ্যার জন্ম
ভেতরে ঢুকেই আরও গভীর রহস্যের দেখা পেলেন আলী চাচা।
মঞ্চে প্রতিটি দৃশ্য তার জীবনের ভুলের প্রতিফলন।
প্রথম দৃশ্য—তার ছোট বেলায় বাবা তাকে ভুল বোঝানো।
দ্বিতীয় দৃশ্য—বন্ধুদের সঙ্গে বিভ্রান্তি ও প্রতারণা।
তৃতীয় দৃশ্য—স্ত্রীর প্রতি অবহেলা ও মিথ্যা।
এখান থেকে তিনি শিখলেন—মানুষের ভুল ও মিথ্যা তার ভয়ের সঙ্গে জড়িত।
প্রতি মিথ্যার পেছনে লুকানো থাকে—শয়তানি নয়, বরং মানুষের নিজের দুর্বলতা।
—
অধ্যায় ৪: অদৃশ্য কণ্ঠ
হঠাৎ একটি অদ্ভুত কণ্ঠ বাজল—
“তুমি আমাকে চিনবে।”
আলী চাচা বুঝলেন, এটি তার ভবিষ্যতের নিজস্ব কণ্ঠ।
কণ্ঠটি তাকে তার ভুল স্মৃতি দেখালো:
বাবার মৃত্যুর সময় ভুল বোঝা
স্ত্রীর প্রতি অবহেলা
নিজের সঙ্গে মিথ্যা ও অহংকার
ভবিষ্যতের আলী বলল—
“তুমি সত্য দেখেছ, কিন্তু গ্রহণ করতে হবে।”
প্রত্যেক স্মৃতি আলী চাচাকে শিখিয়েছে—সত্য শুধু দেখার নয়, গ্রহণের ক্ষমতা থাকতে হবে।
—
অধ্যায় ৫: বিচার ও আত্ম-স্বীকার
একটি বিশাল দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আলী চাচা দেখলেন—
“সত্যের কেন্দ্র”।
ভেতরে আলো নেই, মাটি নেই, সময় নেই।
এটি শুধু মানব জীবনের প্রতিফলন।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আলী চাচা নিজের সব রূপ দেখলেন:
তরুণ আলী
রাগী আলী
ভাঙা আলী
একা আলী
কণ্ঠ জিজ্ঞেস করল—
“তুমি কি এই সব স্বীকার করতে পারবে?”
আলী চাচা বলল—
“হ্যাঁ।”
প্রত্যেকটি স্বীকারোক্তি আলোকিত হলো।
ভবিষ্যতের আলী বলল—
“তুমি সত্য দেখেছ, গ্রহণ করেছ, এখন মুক্ত।”
—
অধ্যায় ৬: মুক্তি ও নতুন জীবন
দরজা খুলল, আলো ছড়িয়ে পড়ল।
আলী চাচা ফিরে এলো বাস্তব জগতে।
এবার সে নতুন রূপে—সত্যকে জানে, নিজের ভুল বোঝাপড়া শিখেছে, এবং ক্ষমা করতে জানে।
পাঠকের জন্য শেষ বার্তা:
“সত্য কখনো শেষ হয় না।”

মন্তব্য করতে ক্লিক করুন