রাত গভীর, শহর নিস্তব্ধ। আরিয়ান ও দীপা অন্ধকার রাস্তায় ধীরে ধীরে হাঁটছিল। বাতাসে হালকা ঠান্ডা, দূরের ল্যাম্পপোস্টের আলো ঝলমল করছে। হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। ভাঙা কণ্ঠ বলল—
“সে… বেঁচে আছে… জ্যাকলিন।”
আরিয়ান কেঁপে উঠল। যে মেয়েকে সে মৃত ভেবেছিল, সে জীবিত? রাতের ছায়া যেন আরও ঘন হয়ে উঠল। তার মাথার ভেতরে একটিমাত্র প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল—কেন? কোথায়? এবং কীভাবে?
—
পুরনো ভিডিও
পুরনো আর্কাইভে ঢুকে আরিয়ান একটি হার্ডড্রাইভ চালু করল। স্ক্রিনে দেখা গেল জ্যাকলিন—চোখের নিচে দাগ, এলোমেলো চুল, কাঁদছে আর হেসে হেসে কাঁদছে। তার পাশে দাঁড়িয়ে জোকার, মুখে বিকৃত হাসি। সে একটি চিরকুট ধরিয়ে বলল,
“এই হাসি তোমার জন্য, আরিয়ান। এই হাসিই শেষ হবে… তোমার হাতে।”
আরিয়ান বুঝল, এটি শুধু হত্যার খেলা নয়—এটি একটি মানসিক ট্র্যাপ। প্রতিটি ফাইল, ভিডিও, চাবি, লক—সবই পরিকল্পিত।
—
লুকানো চাবি এবং মোমবাতি
একটি লুকানো চাবি, একটি লক, মোমবাতি আর ছায়ার ঘর। ধীরে ধীরে তারা ধুলো জমা সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামল। মেঝের নিচে লুকানো ঘরে দেখা গেল ছয়জন বন্দি—প্রতিটি মুখে জোকারের বিকৃত হাসি। মোমবাতি জ্বলছে, ছায়া দীর্ঘ, বাতাস ফিসফিস করছে।
দীপা কেঁপে কেঁপে বলল—
“স্যার, আমরা কি বাঁচব?”
আরিয়ান কেবল মাথা নেড়ে বলল—
“এটা শেষ খেলা, দীপা। আর শেষ হাসি… আমাদের সামনে।”
—
ছায়ার মুখ
ঘরে ঢুকতেই দেখা গেল একটি ছায়া। আরিয়ান ধীরে ধীরে তার দিকে এগোল। ছায়া নড়ল না, হঠাৎ বাতাসে ফিসফিস—
“আমি সব দেখেছি, আর এখন হাসবেই।”
চোখে অদ্ভুত কালো ছায়া, মুখে অস্বাভাবিক হাসি। দীপা কেঁপে উঠল। আরিয়ান চুপচাপ ছায়ার মুখের দিকে এগোল। হঠাৎ বাতাসে ধোঁয়া ঘুলমুল করে ছায়ার মধ্যে ছড়িয়ে গেল।
—
চূড়ান্ত টুইস্ট
ছায়ার মুখ থেকে দেখা গেল—জ্যাকলিন। চোখ খালি, ঠোঁটের পাশে লাল দাগ, মুখে বিকৃত হাসি। জোকারের শব্দ দূরের কোণে—
“শেষ হাসি সম্পূর্ণ হলো। এবার সব সত্য প্রকাশিত হবে।”
আরিয়ান বুঝল, জ্যাকলিন শুধু শুরু। এই হাসিই এখন থেকে চূড়ান্ত খেলা।
—
মুখোমুখি
চাবি হাতে আরিয়ান ধীরে ধীরে লক খুলল। মোমবাতি নিভে গেল। জোকার ধোঁয়ার মতো মিলিয়ে গেল। বন্দিরা মুক্ত হলো। জ্যাকলিন, রাহাত, মায়া—সবাই একে অপরের দিকে তাকিয়ে হাসল। প্রকৃত হাসি ফিরে এসেছে।
শহর শান্ত। বাতাস ফিসফিস করছে, দূরের বৃষ্টি ঝরছে। কিন্তু আরিয়ান জানে—জোকারের ছায়া হয়তো সবসময় কোথাও আছে। তার সেই অদ্ভুত হাসি, মানসিক খেলা, এই রাতের স্মৃতি সবসময় তার সাথে থাকবে।
—
খেলার পরিণতি
দিনের আলো এসে পড়লেও আরিয়ান ও দীপা জানে—রাতের অভিজ্ঞতা তাদের মস্তিষ্কে চিরস্থায়ী। জ্যাকলিন বলল—
“হাসি থেকে ফাঁসি কেবল শেষ হলো এই রাতেই। কিন্তু আমরা কেউ ভুলব না।”
আরিয়ান ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করে বাতাসের ফিসফিসে শুনল—একটি হাসি, দূরের অন্ধকার থেকে। সে জানল, খেলা সত্যিই শেষ হয়েছে, কিন্তু স্মৃতি, ভয়, রহস্য সবসময় থেকে যাবে।
শহর শান্ত। রাতের অন্ধকারে বাতাসের ফিসফিস, দূরের বৃষ্টি আর ধুলো—সব মিলিয়ে একটি চূড়ান্ত থ্রিলার ফিল। আজ অন্তত এই রাতে—হাসি থেকে ফাঁসির খেলা শেষ।

মন্তব্য করতে ক্লিক করুন