আমার কপালে আজ তৃতীয় নয়ন—
জ্বলে, জ্বলে না…
জ্বলবার কথা ছিল—
তবুও, কী এক অদ্ভুত শীতলতা!
সুদানের ধু-ধু প্রান্তরে, মরে যাচ্ছে মানুষ—
আরে, মানুষ নয়… মুসলমান মরছে।
মারছে কে? সে-ও মুসলমান।
এ কেমন বিচিত্র ভ্রাতৃত্বের মারণ-যজ্ঞ?
যেন ঈশ্বরের সই-করা চুক্তি— এইভাবেই হবে শেষ।
কলেরায় বা দুর্ভিক্ষে নয়—
সোজা গুলিতে, খাঁড়া তলোয়ারে।
আহা! রক্তের কী অপরূপ বিলাস— যেন পিকনিকের স্যান্ডউইচ!
মাংসে মাংসের এমন সুষম সহবাস, আগে দেখিনি কোনোদিন।
অথচ দেখুন— পাড়ার মোড়ে যে বামপন্থী ছেলেটা,
ছোট্ট একটা ইঁদুর মরলেও বিপ্লবী ব্যানার ধরে—
সে আজ এমন চুপ… যেন তার জিভটা গিলে নিয়েছে কোনো
মার্ক্সবাদী ভূত।
তাদের ফাইলে এই গণহত্যার কোনো স্থান নেই।
গাজায় একটা ঢিল পড়লে বাচ্চার হাতে—
যে বামুন-কপালে-তিল-আঁকা ছেলেটা দশটা কবিতা লেখে
ফেসবুকে, ইনস্টাগ্রামে… আর মিছিল করে হাওয়া খায়—
তার ফুসফুসে আজ সহসা হাঁপানি।
বাতাস যেন নিষিদ্ধ।
মিডিয়াও কেমন শান্ত— যেন খবরটা ভূগোলের বাইরে।
না, কোনো ‘ইজম’-এর নাম করে মরেনি তারা—
তাই তাদের মরাটা বুঝি এতটা সস্তা!
আর সেই উদারপন্থী মুসলমান! যিনি—
পর্দার আড়ালে নামাজ পড়েন, শবেবরাতে আলো জ্বেলে,
মানবতার ককটেল বানান— আজ তার নাক-ডাকা ঘুম!
যেন সুদানের রক্ত, তার পারিবারিক অ্যালবাম-এ নেই।
এ কেমন অন্ধ নির্বাচন?
কার লাশটা দাম পেল?
কারটা কেবলই সংখ্যা হয়ে পড়ে রইল ধূসর পাতায়?
আমি তো প্রসূন গোস্বামী। আমার তো থাকার কথা—
বারোভূতের গালগল্পে, আর দোকান-ভাঙা মেজাজে।
তবু আজ, এই অজানা শোক আমাকে পীড়ন করে—
এই নির্বিকার বিশ্ব!
যেখানে নীতি আর মৃত গাভী, একই দামে বিক্রি হয়।
আর আমি শুধু দেখি—
তাদের নীরবতার উলঙ্গ মিছিল। বড়ই অসহ্য।

মন্তব্য করতে ক্লিক করুন