তোমার সাথে আমার দেখা হয়েছিল সন্ধ্যার ম্লান আলোয়। অন্ধকার নেমে আসবে বলে আমি খুঁজে মরছিলাম কেরোসিনের কুপি। গতরাতের ঝড় জলে ভিজে স্যাঁতসেঁতে হয়েছিলো সলতে। আমি তা শুকাতে পারিনি। ঠিক তখন, তুমি ঝলমলে সূর্য নিয়ে এলে, আমি অবাক তাকিয়ে রইলাম, সন্ধ্যাতো সূর্যের ডুবে যাবার সময়! এ কোন আলো তবে?
তুমি বললে, ‘তুমি কি সব আলো চেনো?’
আমি বললাম, ‘আলোর আবার রকম হয়?’
তুমি বললে, ‘হয়’।
আমি তাকিয়ে রইলাম। তুমি হাসছো। তোমার ঠোঁটের ফাঁকে ওম। তুমিজুড়ে অদ্ভুত এক মায়াবৃক্ষ। তোমার চোখের কোলে মায়াবতী নদী। গাঢ় ও গভীর। আমার আচমকা সেই নদীতে ডুবে যেতে ইচ্ছে হলো। আমি বললাম, কে বেশি ডোবায়, আলো, না অন্ধকার?
তুমি বললে, অন্ধকার।
–আলো নয় কেন?
–আলোর চেয়ে অন্ধকারে বিভ্রম বেশি।
–ডুবে যেতে তবে বিভ্রম চাই?
— হুম।
আমি স্নান স্বরে বললাম, ‘তুমি যে তবে আলো নিয়ে এলে?’
— এই আলো অন্ধকারের মতন।
— আলো কী কখনো অন্ধকারের মতন হয়?
— হয়।
তুমি হাসছো। তোমার চোখ হাসছে। সেই চোখে উথাল-পাথাল ঢেউ তুলে দিচ্ছে মায়াবতী নদী। সেই নদীতে আমি ডুবে যেতে যেতে আবিষ্কার করলাম, আচমকা আলো নিভে গেছে। চারপাশ সকলই অন্ধকার। কোথাও কেউ নেই। না তুমি, না তোমার আলো। অথচ আমি ডুবে রইলাম, এক গভীর মায়ার নদীতে। কেউ কেউ বলে মায়ার আরেক নাম বিভ্রম। আমি কী তবে ডুবে রইলাম বিভ্রমে! এক অন্তহীন বিভ্রমে। বাকি জীবনের সকল বিভা ক্রমশই কেড়ে নিতে থাকে ‘তুমি’ নামের সেই বিপুল বিভ্রম!

০
০
সেভ বা রিয়েক্ট করার জন্য লগইন করে নিন!
১৪৯৭
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন