অচেনা হয়ে উঠলে
শংকর ব্রহ্ম
ও.টি-তে সুপ্রিয়াদেবীর (মাঝবয়সী একজন রমণী) অস্ত্রোপচার চলছে।
এমন সময় যমরাজ এসে তাঁর পাশে দাঁড়ালেন।
সুপ্রিয়াদেবী তাকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,
‘আমি কি মারা যাচ্ছি, নিতে এসেছেন আমাকে?’
জবাবে যমরাজ হেসে বললেন,
‘না, তোমাকে আরও বিশ বছরের আয়ু বাড়িয়ে দেওয়া হলো।’
সুপ্রিয়াদেবী খুবই খুশি হলেন তার কথা শুনে।
সুস্থ হয়েই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন,যা যা করবার দ্রুত সে’কাজ সেরে ফেলতে হবে।
তিনি তখনই হাসপাতাল ছাড়লেন না।
ফের ছুটলেন ডাক্তারের কাছে।
নতুন করে ব্রেস্ট ইমপ্লিমেন্ট করালেন,
চুল প্রতিস্থাপন করালেন,
দামী দুটো ইনঞ্জেকশন নিয়ে ঠোঁট দুটো পুরো টসটসে রসালো কমলা-কোয়া বানালেন।
খাটো পোশাকে তাঁকে তখন চমৎকার দেখাচ্ছিল।অসাধারণ রমণীয় লাগছিল দেখতে।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তিনি আর কোনদিকে ভ্রক্ষেপ না করে হনহন করে হাঁটা শুরু করলেন বাড়ির উদ্দেশে । দ্রুত রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এমন সময় একটা ট্রাক এসে তাকে চাপা দিল। তিনি মারা গেলেন।
যথা নিয়মে তিনি যমালয়ে গিয়ে পৌঁছালেন, পৌঁছেই তিনি যমরাজের কাছে অভিযোগ করলেন, ‘আপনি তো বলেছিলেন, আমি আরও বিশ বছর বাঁচব, তবে?’
যমরাজ বললেন, ‘হ্যাঁ, ঠিকই তো বলেছিলাম।’
‘এত তাড়াতাড়ি আমার বিশ বছর শেষ হয়ে গেল,’ প্রশ্নে তার বিরক্তির ঝরে।
যমরাজ ঘাড় নাড়তে নাড়তে বললেন,
‘তুমি এতোটা পালটে গেছো যে আমি তোমাকে মোটেই চিনতে পারিনি।দোষটা আমার নয় তোমার।কী দরকার ছিল নিজেকে এত পালটে ফেলার, যে আমার কাছেও অচেনা হয়ে উঠলে?”
এর কোন সদুত্তর দিতে পারলেন না সুপ্রিয়াদেবী।
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন