লতিফা
শংকর ব্রহ্ম
আমরা ধীরে ধীরে সংক্ষিপ্ত কবিতার দিকে এগোচ্ছি, কেননা মানুষ এখন ভীষণ ব্যস্ততার মধ্যে থাকে , বড় ধরণের কাব্য রচনা করা বা পড়ার সময় সুযোগ আর তেমন পায় না আজকাল, তাই তাদের আগ্রহ দোঁহা, হাইকু, রুবাইত, চৌপদী, পঞ্চপদী, ষষ্ঠপদী, লিমেরিক, তানকা ও লতিফার প্রতি আজকাল বেশী দেখা যাচ্ছে।
‘লতিফা’ শব্দটি আরবি। এর উৎপত্তি লুৎফুন শব্দ থেকে। লুৎফুন শব্দের অর্থ – প্রেম, প্রীতি, দয়া, মায়া, ভালবাসা।
এইসব বিষয়কে কেন্দ্র করে ছয় পংক্তির কবিতাকে বলে ‘লতিফা’ কবিতা। ‘লতিফা’ লেখার উদ্দেশ্য হলো এইসব (প্রেম, প্রীতি, দয়া, মায়া, ভালবাসা) গুণগুলি সকলের মধ্যে সঞ্চারিত করা।
বারো-তেরো’শ খ্রীষ্টাব্দে, আরব দেশে কোন রকম গান বা কবিতার প্রচলন ছিল না। কারণ ওই দেশের কঠোর ও রুক্ষ প্রকৃতি এবং জনগণের ছন্দহীন জীবন যাপনে কবিতার কোন স্থান ছিল না। গদ্য জাতীয় কিছু লেখা হতো অবশ্য সে সময়।
এমন অবস্থায়, আরবের বিভিন্ন স্থানে ঈশ্বর প্রেম, মানব কল্যাণ, নানা রকম সামাজিক ও গার্হস্থ শিক্ষার বিষয় যাতে সহজেই মানুষের মনের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, সেই উদ্দেশ্য নিয়ে ‘সাবা ইবনে করিম’ নামক জনৈক মহান ব্যক্তি সচেষ্ট হন। তিনি বুঝেছিলেন ছোট ছোট গান বা গীতিকাব্য সহজেই সকলে মনে রাখতে পারবে। তাই তিনি ছয়-পদ বিশিষ্ট গীতিকাব্য রচনা করেন। এই গীতিকাব্যগুলিকেই পরবর্তী কালে ‘লতিফা’ নামে আখ্যায়িত করা হয়। আর তা ধীরে ধীরে আরবদেশ ছাড়িয়ে বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ভারত তার ব্যতিক্রম নয়।
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন